বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের আরও একটি বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেল। অন্যান্য বছরের মত এ বছরেও বানিজ্যিক সিনেমার পাশাপাশি আর্ট ফিল্ম হিসেবে পরিচিত অফ ট্র্যাকের সিনেমা মুক্তি পেয়েছেন, নতুন নতুন মুখ যুক্ত হয়েছে নায়ক-নায়িকা, প্রযোজক-পরিচালকের তালিকায়, কারিগরী দিক থেকে নানারকম অগ্রগতি নজর কেড়েছে। সব মিলিয়ে ২০১২ সালে বাংলা চলচ্চিত্রের সামগ্রিক অবস্থা কি তা জানার জন্যই- সালতামামি ২০১২। চলুন পেছনে ফিরে দেখা যাক।
২০০৮ সালের পর থেকে বাংলাদেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির গতি কিছুটা পড়তির দিকে। এর আগের বছরগুলোতে গড়ে ৯৫-১০০ টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, কিন্তু তারপরেই মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির সংখ্যা কমতে থাকে। ২০১১ সালে মাত্র ৪৮টি ছবি মুক্তি পাওয়ার পর আশংকা করা হয়েছিল এবছরে ছবি মুক্তির পরিমান আরও কমবে। কিন্তু এ বছরের শেষ সপ্তাহে ‘পিতা’ ও ‘নাইওরি’ মুক্তি পাওয়ার মধ্য দিয়ে মোট মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির সংখ্যা ৫১ তে দাড়িয়েছে। পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন দশ জন, ১৪ জন নতুন নায়ক নায়িকা ইন্ডাস্ট্রিতে যোগ দিয়েছেন। সর্বাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন খল অভিনেতা মিশা সওদাগর, সর্বাধিক সিনেমার নায়ক নায়িকা শাকিব খান ও সাহারা। ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলো একটা তালিকা তৈরী দেয়া যেতে পারে।
ক্রম |
সিনেমার নাম |
পরিচালক |
অভিনেতা-অভিনেত্রী |
১ | মারুফের চ্যালেঞ্জ | শাহাদৎ হোসেন লিটন | সাহারা, ইমন, নিপুণ |
২ | ফিরে এসো বেহুলা | তানিম নূর | জয়া আহসান, ইন্তেখাব দিনার, হুমায়ুন ফরীদি, মামুনুর রশীদ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, রাইসুল ইসলাম আসাদ, শহীদুজ্জামান সেলিম, তৌকীর আহমেদ, শতাব্দী ওয়াদুদ |
৩ | রক্তে ভেজা বাংলাদেশ | নাদিম মাহমুদ | স্বাধীন, রত্না, প্রবীর মিত্র, নাসরিন ও মিশা সওদাগর |
৪ | আই লাভ ইউ | মুশফিকুর রহমান গুলজার | শাকিব খান, পূর্ণিমা, রেসি, নিরব, ইলিয়াস কাঞ্চন, ওমরসানি, শাহনাজ, আফজাল শরীফ, শহীদু ইসলাম সাচ্চু |
৫ | জীবনে তুমি মরণে তুমি
| অপূর্ব রানা | সোহেল রানা, জের্ফ, শ্রেয়া |
৬ | লালটিপ | স্বপন আহমেদ | ইমন, কুসুম শিকদার, এ টি এম শামসুজ্জামান, সোহেল খান |
৭ | এক জনমের কষ্টের প্রেম | নাদিম মাহমুদ | সাইফ খান, নদী, স্বপ্না, শোয়েব, সিনথিয়া, গাঙ্গুয়া, ইয়াসিন হিরা |
৮ | আমার চ্যালেঞ্জ | বদিউল আলম খোকন | শাকিব খান, সাহারা, মিশা সওদাগর |
৯ | রাজা সূর্য খাঁ | গাজী মাহাবুব | সোহেল রানা, কবরী, ববিতা, উজ্জ্বল, পূর্ণিমা, নিরব, কাজী মারুফ, টেলিসামাদ, কাজী হায়াত, ইলিয়াস কোবরা |
১০ | পালাবার পথ নেই | অপূর্ব রানা | সাইফ খান, তমা মির্জ্জা, আমান খান, নবাগতা সাকি, মিজু আহমেদ ও কাজী হায়াৎ |
১১ | বাংলাদেশী | মনোয়ার খোকন | জাহাঙ্গীর ঝিনুক, এনামুল মোজাম্মেল, মিজু আহমেদ ও আহমেদ শরীফ |
১২ | এক টাকার দেনমোহর | এম বি মানিক | শাকিব খান, অপু বিশ্বাস, সোহেল রানা, উজ্জ্বল, সূচরিতা, নূতন |
১৩ | কারিগর | আনোয়ার শাহাদাত | জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, রোকেয়া প্রাচী, সুষমা সরকার, রাণী সরকার, হিমা মৃধা, গোলাম মোস্তফা, মাসুদ আলম বাবু, শামীম খান |
১৪ | মানিক রতন দুই ভাই | কাজী হায়াৎ | ডিপজল, মারুফ, রেসি, তমা, মিজু আহমেদ, ডি জে সোহেল |
১৫ | জ্বী হুজুর
| জাকির হোসেন রাজু | সাইমন সাদিক, সারা জেরিন ও অনন |
১৬ | এক মন এক প্রাণ | সোহানুর রহমান সোহান | শাকিব খান, অপু বিশ্বাস, আলী রাজ, মিশা সওদাগর, তমা মির্জা |
১৭ | অন্তরে প্রেমের জ্বালা | কালাম কায়সার | সাজিদ খান, শেহনাই |
১৮ | বাজারের কুলি | মনতাজুর রহমান আকবর | রেসী, নিপুণ, আলেক, নিশু, আমান খান, আন্না, কাবিলা, ডিজে সোহেল, রেহানা জলি, লাবু আহমেদ, আদিল, মিশা সওদাগর ও মিজু আহমেদ |
১৯ | চারুলতা | সাইফুল ইসলাম মান্নু | ইলিয়াস কাঞ্চন, কুমকুম হাসান, সজল, মিতা নূর ও শহীদুল আলম সাচ্চু |
২০ | দ্যা স্পিড
| সোহানুর রহমান সোহান | এম এ জলিল অনন্ত, পারভিন (মালয়েশিয়া), নানা (রাশিয়া ), আলমগীর, দিতি, নিনো (ইতালি), ডন, ইলিয়াস কোবরা, দীঘি |
২১ | উত্তরের সুর | শাহনেওয়াজ কাকলী | ফেরদৌস, নিপুণ, কথাসাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হক, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, প্রাণ রায় |
২২ | বাংলা ভাই | মনোয়ার খোকন | জায়েদ খান, চাঁদনী |
২৩ | আত্মগোপন | এম এম সরকার | জায়েদ খান, শাবনূর |
২৪ | ভালোবাসা সেন্টমার্টিনে | শহীদুল ইসলাম খোকন | রাশেদ মোর্শেদ, শাবনূর |
২৫ | ও আমার দেশের মাটি | অনন্ত হীরা | আমিন খান, নূনা আফরোজ, তমা মির্জা, শাকিল আহাম্মেদ, হাবীব আহসান |
২৬ | পাগলা হাওয়া | নজরুল ইসলাম খান | কাজী মারুফ, শ্রেয়া, হাবিব খান ও কাজী হায়াৎ |
২৭ | সন্তানের মতো সন্তান | শাহিন-সুমন | শাকিব খান, সাহারা, অমিত হাসান, রত্না, আলীরাজ, কাবিলা, নাসরীন ও ডলি জহুর |
২৮ | কমন জেন্ডার | নোমান রবিন | সোহেল খান, হাসান মাসুদ, রাশেদ মামুন অপু, রোজী সিদ্দিকী, চিত্রলেখা গুহ, ডলি জহুর, সাজু খাদেম, দিলীপ চক্রবর্তী, অয়ন চৌধুরী, মানস বন্দ্যোপাধ্যায়, শহীদুল আলম সাচ্চু, সিন্ডি রোলিং |
২৯ | মোষ্ট ওয়েলকাম | অনন্য মামুন | অনন্ত, বর্ষা, রাজ্জাক, সোহেলরানা, বাপ্পারাজ, আহমেদ শরীফ, কাবিলা, মিশা সওদাগর, স্নেহা উল্লাল ও রাধিকা |
৩০ | খোদার পরে মা | শাহীন সুমন | শাকিব খান ,সাহারা এবং ববিতা |
৩১ | মাই নেম ইজ সুলতান | এফ আই মানিক | শাকিব খান, সাহারা, প্রবীর মিত্র, রীনা খান, রেহানা জলি, জ্যাকি, ববি, ইলিয়াস কোবরা, শিবা শানু, ডন সাঙ্কোপাঞ্জা, শামীম রতন, কমল, জেমি, মৌ এবং মিশা সওদাগর ও আহমেদ শরীফ |
৩২ | ঢাকার কিং | সাফিউদ্দিন সাফি | শাকিব খান, অপু বিশ্বাস, নিপুণ, আহমেদ শরীফ, গাঙ্গুয়া ও মিশা সওদাগর |
৩৩ | সে আমার মন কেড়েছে
| সোহানুর রহমান সোহান | শাকিব খান, তিন্নী, আলমগীর, আহমেদ শরীফ, মিশা সওদাগর, ডন, শর্মিলা আহমেদ |
৩৪ | তুমি আসবে বলে | আশরাফুল রহমান | নিরব, নিপুণ |
৩৫ | হঠাৎ সেদিন | বাসু চ্যাটার্জী | ফেরদৌস , রিদিমা ঘোষ, নিপুণ, নবীন, প্রাণ রায়, সিমলা |
৩৬ | আত্মদান | শাহজাহান চৌধুরী | আলমগীর, চম্পা, সাবেরী আলম, হাফিজউদ্দিন, নিরব, নিপুণ |
৩৭ | ঘেঁটুপুত্র কমলা
| হুমায়ূন আহমেদ | মামুন, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, প্রাণ রায় |
৩৮ | দুধর্ষ প্রেমিক | এ বি মানিক | শাকিব খান, অপু বিশ্বাস, সুব্রত, শানু শিবা, ইলিয়াস কোবরা, মিশা সওদাগর ও উজ্জল |
৩৯ | ভালবাসার রং
| শাহিন-সুমন | বাপ্পি, মাহি, কাবিলা, রাজ্জাক |
৪০ | জিদ্দি মামা | শাহাদাৎ হোসেন লিটন | শাকিব খান, অপু বিশ্বাস, রোমানা ও মিশা সওদাগর |
৪১ | হান্ড্রেড পার্সেন্ট লাভ বুক ফাঁটে তো মুখ ফোটে না | বদিউল আলম খোকন | শাকিব খান, রুমানা, অপু, সোহেল রানা, উজ্জ্বল, সাদেক বাচ্চু, মিশা সওদাগর, আফজাল শরীফ |
৪২ | লাভ ইন জঙ্গল | ডি হোসেন | ড্যানি সিডাক, ইলিয়াস কোবরা, চাইনিজ, আলিশা ও পাপিয়া |
৪৩ | ডন নাম্বার ওয়ান | বদিউল আলম খোকন | শাকিব খান. সাহারা, মিশা সওদাগর, উজ্জল |
৪৪ | স্বামীভাগ্য | এফ আই মানিক | ডিপজল, রেসি, আমিন খান, রুমানা, দীঘি, মিজু আহমেদ, শিবা শানু, আলীরাজ |
৪৫ | জিদ্দি বউ | আবুল কালাম আজাদ | শাবনূর, ফেরদৌস, এটিএম শামসুজ্জামান, তৌফিক, রিনা খান, প্রবীর মিত্র |
৪৬ | শিউলিমণি | সাদেক সিদ্দিকী | ইমন, নিপুণ, আন্না, সাগর, শাহনূর, মারুফ, আহম্মেদ শরীফ, মিজু আহমেদ, আফজাল শরীফ, সিরাজ হায়দার |
৪৭ | অবুঝ প্রেম | আবুল খায়ের বুলবুল | আরজু, সিনথিয়া |
৪৮ | সন্ত্রাসী ধরো | স্বপন চৌধুরী | সোহেল, জুঁই, আলেকজান্ডার বো |
৪৯ | তোমার সুখই আমার সুখ | কালাম কায়সার | চাঁদনী, নবাগত শুভ, কাবিলা, খালেদা আক্তার কল্পনা, রাশেদা চৌধুরী, রাজু সরকার, নদী, জাকির, জয়, মাসুম, জাহিদ |
৫০ | চোরাবালি
| রেদওয়ান রনি | ইন্দ্রনীল সেন, জয়া আহসান, এটিএম শামসুজ্জামান, সোহেল রানা, শহীদুজ্জামান সেলিম, ইরেশ যাকের, সালেহীন স্বপন, পিয়া, হুমায়ুন সাধু, সেন্ডি রোলিং |
৫১ | পিতা | মাসুদ আখন্দ | জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মাসুদ আখন্দ, কল্যাণ কোরাইয়া, বন্যা মির্জা, শায়না আমিন |
৫২ | নাইওরি | মোহাম্মদ আমিন | আমিন খান, ছোয়া, রাশেদ খান, অমল বোস, আলীরাজ |
তালিকাটা প্রস্তুত করা হয়েছে তৌফিকুর রহমান তৌফিকের তথ্যের উপর ভিত্তি করে। যুগান্তর এবং আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে যাচাই করে তালিকা প্রকাশ করা হল।
এ বছরের বেশ আলোচনা সৃষ্টি করে যে সিনেমাগুলো মুক্তি পেয়েছে তার মধ্যে লালটিপ, দ্য স্পিড, বাংলাভাই, ও আমার দেশের মাটি, মোস্ট ওয়েলকাম, মাই নেম ইজ সুলতান, ঢাকার কিং, সে আমার মন কেড়েছে, সে আমার মন কেড়েছে, ঘেটুপুত্র কমলা, ভালোবাসার রং, ডন নাম্বার ওয়ান ও চোরাবালি অন্যতম। মুক্তির পূর্বেই এ সকল ছবির প্রচারনা লক্ষ্যনীয়।
মোস্ট ওয়েলকাম ও দ্য স্পিড সিনেমার পোস্টার সিনেমা মুক্তির প্রায় ছয় মাস আগে থেকেই ঢাকা শহরের দেয়ালে সাটানো হয়েছে। মুক্তির আগের এক মাস ভালোবাসার রং সিনেমার পোস্টারে ঢাকা সহ প্রায় সারা দেশ ছেয়ে ফেলা হয়েছিল। ব্যতিক্রমধর্মী প্রচারনা চালানো হয়েছে ও আমার দেশের মাটি ও চোরাবালি সিনেমার ক্ষেত্রে। চোরাবালি বহুদিন বাদে দেয়ালে চিকা মারার মাধ্যমে সিনেমা প্রচারণাকে ফিরিয়ে এনেছে।
বিপরীত দিকে প্রায় নিশ্চুপভাবে মুক্তি পেয়ে সপ্তাহখানেকের মধ্যেই মার্কেট থেকে বিদায় নিয়েছে এমন ছবির সংখ্যাও কম নয়। এই তালিকায় রক্তে ভেজা বাংলাদেশ, এক জনমের কষ্টের প্রেম, বাংলাদেশী, কারিগর, জ্বী হুজুর, চারুলতা, হঠাৎ সেদিন, তুমি আসবে বলে, আত্মদান, শিউলিমনি, লাভ ইন জঙ্গল, সন্ত্রাসী ধর অন্যতম।
এ সকল সিনেমার নীরব আগমন ও প্রস্থানের পেছনে অন্যতম কারণ হল টেলিভিশন প্রিমিয়ার। এছাড়া, নতুন নায়ক নায়িকার কারনে প্রয়োজনীয় প্রচারণার আগ্রহ বিমুখ ছিল প্রযোজকরা। জ্বী হুজুরের মত অপেক্ষাকৃত ভালো সিনেমা ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে শুধুমাত্র প্রচারণা ও নতুন নায়ক নায়িকার কারনে।
নতুন পুরাতন কলাকুশলীদের সমন্বয়ে যে সকল সিনেমা মুক্তি পেয়েছে তার দিকে ফিরে তাকালে আশার দিক যেমন লক্ষ্য করা যায়, তেমনি কিছু হতাশার দিকও চোখে পড়ে। ভালো দিকগুলোর মধ্যে এম এ জলিল অনন্তর উদ্যোগ, জাজ মাল্টিমিডিয়ার সিনেমা হল ডিজিটালাইজেশন, ডিজিটাল সিনেমার মুক্তি, চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে স্বীকৃতিদান, দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে দেশীয় চলচ্চিত্রের বানিজ্যিক প্রদর্শন, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মানের জন্য সরকারী অনুদান, ভিন্ন ধারার চলচ্চিত্র নির্মানে নবীন পরিচালকদের আগমন, শাকিব খানের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তি ইত্যাদি অন্যতম।
অন্যদিকে, মন্দ দিকগুলোর মধ্যে এম এ জলিল অনন্তকে ঘিরে নানা রকম বিতর্ক-ব্যঙ্গ-সমালোচনা, ডিজিটাল ছবির নামে মানহীন ছবি নির্মান ও মুক্তি, প্রচুর নকল ছবি তৈরী, অপেক্ষাকৃত ভালো ছবিগুলোর ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারের মাধ্যমে দর্শকের চাহিদাকে উপেক্ষা করা, আইটেম সং এর নামে উৎকট গানের দৃশ্যায়ন ইত্যাদি অন্যতম। পাশাপাশি, সেন্সরবোর্ড তুলে দেয়া হবে বলে যে ঘোষনা প্রদান করা হয়েছে তার বিপরীতে কি কি নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন সংবাদ প্রকাশিত হয় নি।
এ বছরে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলোর যেগুলো দেখা সম্ভব হয়ছে তার মধ্যে ভালো ও ভিন্নধর্মী কনসেপ্টের জন্য ‘জ্বী হুজুর’, ‘কমন জেন্ডার’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’র নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এদের মধ্যে একমাত্র ‘জ্বী হুজুর’ এফডিসি-কেন্দ্রিক বানিজ্যিক ছবি। ওয়েল-মেড ছবির তালিকায় ‘চোরাবালি’র নাম উল্লেখ করা উচিত। ভিন্নরকমের পোস্টারের জন্য ‘ভালোবাসার রঙ’ এর কথা বলা গেলেও এই পোস্টারগুলো নকল এবং রুচিহীনতার দোষে দুষ্ট। সেই তুলনায় ‘চোরাবালি’ ছবির পোস্টার অপেক্ষাকৃত আধুনিক।
বানিজ্যিক ধারার সিনেমার পোস্টারে কোনই পরিবর্তন আসে নি বরং ‘কমন জেন্ডার’ এর মত ভিন্ন কনসেপ্টের সিনেমার পোস্টারও বানিজ্যিক ধারার পোস্টারর রূপ ধারণ করেছে। বলে রাখা দরকার, যে সকল সিনেমা সাধারণত টেলিভিশন সহ হাতে গোনা দুয়েকটি হলে মুক্তি দেয়া হয়েছে সেগুলোর পোস্টারকে বিবেচনা করা হয় নি। পোস্টারের বৈশিষ্ট্যই হল সেটা দর্শকের কাছে পৌছুবে, দর্শক সিনেমাহলসহ নির্দিষ্ট কোন স্থানে পোস্টারের নিকট পৌছাবে না।
বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের আরেকটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় হল দর্শকের সিনেমাহলমুখীতা। বিগত কয়েকবছরের তুলনায় এ বছরে মধ্যবিত্ত শ্রেনীর দর্শক হলে গিয়ে বেশী ছবি দেখেছে এবং এদের মধ্যে হলে গিয়ে সিনেমা দেখার আগ্রহ বাড়ছে। কিন্তু তাদের চাহিদা পূরনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভালো সিনেমাহলের অভাব এখনো প্রকট।
পাশাপাশি অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে সিনেমাহলে প্রদর্শন সংক্রান্ত এফডিসি-কেন্দ্রিক সিন্ডিকেট এর কথা। গতানুগতিক ধারার চলচ্চিত্রগুলো সিন্ডিকেটকে অতিক্রম করে বেশী সিনেমাহলে মুক্তি দিতে পারছে না। সিনেমাহলের ডিজিটালাইজেশনের ফলে আশা করা হয়েছিল এর ফলে সিনেমা অনেক বেশী পরিমান দর্শকের কাছে পৌছাতে পারবে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলোর সিনেমাহল প্রাপ্তিতে ব্যর্থতা সেই একই সিন্ডিকেট সমস্যার দিকে আঙ্গুল তুলে ধরে। এই ধরনের সমস্যা বিরাজমান থাকলে একদিকে যেমন ভালো নির্মাতারা উঠে আসতে পারবে না, তেমনি দর্শকরাও ভালো সিনেমা দেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কাম্য।
সব মিলিয়ে ২০১২ সালের চলচ্চিত্র কেমন হল সে প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় – বিগত কয়েক বছরের তুলনায় আশাব্যাঞ্জক। মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার সংখ্যা যদিও খুব বেশী ছিল না, কিন্তু সিনেমার বিভিন্নতা এবং সিনেমা সংক্রান্ত বিভিন্ন খবর বেশ আশা জুগিয়েছে সিনেমা দর্শকদের মধ্যে। বাংলা চলচ্চিত্র রেখা আবার উর্দ্ধদিকে মুখ ফিরিয়েছে। এই মুখ যেন কখনো নিচের দিকে না নেমে ক্রমাগত ব্যবসাসফল ইন্ডাস্ট্রির দিকে, বৈশ্বিক সিনেমার দিকে এগিয়ে যেতে পারে সেই শুভকামনা থাকল। ২০১৩ সালে বাংলা সিনেমার সাথে থাকুন।
তথ্যসূত্র:
বাহ……
🙂
জ্বি হুজুর ছবি টা আমি দেখেছিলাম…অনেক ভালো লেগেছিল…কিন্তু ব্যবসায়িক ভাবে সফল হয় নি খুব দুঃখ পেলাম…
🙁
বস, মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির তালিকায় কেবল মাত্র ‘সন্ত্রাসী ধরো’ ছবির অভিনেতা-অভিনেত্রীর নাম দেননি। কেন? অভিনেতা-অভিনেত্রীর নাম কি কোথাও পাননি? আমি জানিয়ে দিচ্ছিÑ সোহেল, জুঁই, আলোক বো। তালিকায় সন্নিবেশ করতে পারেন। ও কে?
শুকরিয়া বস। আসলেই তথ্য পাইনি বলে আপডেট করতে পারি নি। যোগ করে দিলাম। কৃতজ্ঞতা জানুন।
গ্রেট 🙂
ধন্যবাদ রুশো ভাই 🙂
ভালো জিনিস। প্রিন্ট করে রাখলাম। 🙂
🙂
Boss, rating ta add kore dile aro valo hoito. Happy new year. Valo thakben.
হ্যাপী নিউ ইয়ার। রেটিং যোগ করতে পারলে ভালোই হত, কিন্তু সব ছবি তো আমার দেখা নেই, তাই রেটিং দিতে পারি নি। যেগুলো নিয়ে লিখেছি সেগুলোর রেটিং সেইসব ছবির পোস্টে আছে।
ভালো থাকুন যান্ত্রিক দৃক 🙂
ভালা হইসে বস 🙂
শুকরান। দেরীতে রিপ্লাই দেয়ার জন্য দুঃখিত।
এক পোস্টে আপনাকে মিসাই।
সেদিন হঠাত বিটিভি দেখতে বসলাম।পুরানো একটা সিনেমা দেখাচ্ছিল(সাদা কালো প্রিন্ট, কোন বাজারি সিনেমা না,যদিও পুরোটা দেখা হয় নাই) সেখানে সিনেমার কলাকুশলীদের নাম দেখান হল প্রথমেই।একটা নাম দেখে টাসকি খাইলাম। হুবহু, “নাজমুল হাসান দারাশিকো” বস, বিষয়ডা একটু ভাইঙ্গা কইবেন?
নাজমুল হাসান দারাশিকো দেখেন নি, দেখেছেন দারাশিকো।
এর বেশী ভাঙ্গার কিছু নাই। টুকরা ছোট হয়া গেছে
টুকরা ছোট হয়া গেছে(!!!)………রহস্যময়
😉 😉
পড়লাম…গ্রুপে আগেই পড়েছিলাম…
ভাল হইছে লিষ্টি আর তার বয়ান।
শুকরান 🙂