২০১২ সালটা বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের জন্য বেশ উল্লেখযোগ্য একটি বছর। এ বছর চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষনা করা হয়েছে, বাংলাদেশের সিনেমা প্রথমবারের একই সাথে কয়েকটি দেশে মুক্তি পেয়েছে, মধ্যবিত্ত শ্রেনীর দর্শকেরা হলে ফিরতে শুরু করেছে এবং অন্যান্যের মধ্যে, বেসরকারী উদ্যোগে অনেকগুলো সিনেমাহলকে ডিজিটালাইজ করে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে নির্মিত সিনেমাকে হলে মুক্তি দেয়া সম্ভব হয়েছে।
২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত যে সিনেমাগুলো বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে, তার মধ্যে ‘ভালোবাসার রং’ অন্যতম। এই সিনেমার মাধ্যমে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া এবং বাপ্পী ও মাহি নামের দুজন নায়ক নায়িকার অভিষেক ঘটল।
কাহিনীর প্রেক্ষাপট বাংলাদেশের কক্সবাজার। সুদর্শন তরুন বাপ্পী (বাপ্পী) তার বন্ধুবান্ধব নিয়ে বিভিন্ন রকম কাজ করে, যেমন, কোন মেয়ের বিয়ে ভেঙ্গে দেয়া, কারও মুরগীর খামার সম্পূর্ন ধ্বংস করা ইত্যাদি। আপাতদৃষ্টিতে খারাপ এ কাজগুলোর ফলাফল খারাপ নয়, ভালো।
এই বাপ্পীই চৌধুরী সাহেবের (রাজ্জাক) নাতনী মাহির (মাহি) প্রেমে পড়ল। মাহির মন জয়ের উদ্দেশ্যে তার দেয়া বিভিন্ন শর্তাবলী যেমন চৌধুরী সাহেবের ছড়ি, টেপ রেকর্ডার চুরি করে আনা ইত্যাদি পূরণের মাধ্যমে মাহির সাথে বাপ্পীর সম্পর্ক পরিণত হলেও এসময় হাজির হয় সালাম জোয়ারদার (মিজু আহমেদ)। তার উদ্দেশ্য শামসুদ্দিন চৌধুরীর পালিত নাতনী মাহি নামের ফারিয়া চৌধুরীকে যেভাবেই হোক কব্জা করা। কিন্তু চৌধুরী সাহেবের বাধার কারনে উদ্দেশ্য অর্জনে দায়িত্ব দেয়া হয় আরেকজনকে, সে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসী তুফান (অমিত হাসান)। তুফানের হাত থেকে বাচানোর জন্য মাহিকে নিয়ে দূরে নির্জন পাহাড়ে চলে যায় বাপ্পী।
শাহিন সুমন পরিচালিত এই সিনেমার কাহিনী গতানুগতিক সিনেমা থেকে ভিন্ন কিছুই নয়। কাহিনীর মধ্যে সামঞ্জস্যহীনতা, বিশালাকৃতির ফাঁক ফোকর বেশ ভালোভাবেই বিদ্যমান। প্রধান চরিত্র মাহি ও বাপ্পীর মধ্যে গভীরতার অভাব প্রকট। সংলাপ যথারীতি বৈচিত্রহীন, বাস্তবতা থেকে ভিন্নতর, সময় ও স্থানের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ন। বাপ্পীর বন্ধু বান্ধবদের মধ্যে কাবিলা মামা (কাবিলা) নির্ভর হাস্যরসের যথেষ্ট উপাদান ছিল প্রথমার্ধে, শেষার্ধে খরা। চৌধুরী সাহেব চরিত্রটি আরও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারতো, কিন্তু যথাযথ মনযোগের অভাব চরিত্রটিকে গুরুত্বহীন করেছে।
সিনেমার ভালো দিকের মধ্য প্রথমেই উল্লেখ করতে হবে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে নির্মিত সিনেমার ঝকঝকে তকতকে রূপ। বাংলা সিনেমার দর্শকরা নিশ্চিত এত ভালো প্রিন্টের ছবি আগে কখনো দেখে নি। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে নির্মিত সিনেমা এটিই প্রথম নয়, এর আগে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে নির্মিত সিনেমা স্বল্পসংখ্যক হলে মুক্তি পেয়েছে এবং এদের কোন কোনটি ‘ডিজিটাল সিনেমা মানে বড় আকারের নাটক’ সংশয়যুক্ত মনোভাব তৈরীতে সাহায্য করেছে।
ভালোবাসার রং সে দিক থেকে সম্পূর্ন দূষন মুক্ত। এটি সব দিক থেকেই চলচ্চিত্র, বড় আকারের নাটক নয়। বাংলাদেশী সিনেমার এত আকর্ষনীয় রূপ-বর্ণ দেখার পরে গতানুগতিক সাধারণ বা কদাকার চেহারার সিনেমাকে দর্শক পুনরায় গ্রহন করবে কিনা সে বিষয়ে ভেবে দেখার সময় হয়েছে।
ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোঁয়া লক্ষ্য করা যায় ভালোবাসার রং সিনেমার অ্যাকশন দৃশ্যগুলোতে এবং গানের চিত্রায়নে এবং টাইটেল তৈরীতে। গানের চিত্রায়নে ইফেক্ট ব্যবহার খুব পরিপক্ক নয়, ব্যবহারও অপ্রয়োজনীয়। সেই তুলনায় অ্যাকশন দৃশ্যে ইফেক্ট এর ব্যবহার বেশ সফল, বিশেষ করে বনের বাঘের ঝাপিয়ে পড়ে শিকার ধরার দৃশ্যটার যে কৃত্রিমভাবে তৈরী তা বুঝতে অনেক দর্শককেই বেগ পেতে হবে। সিনেমার গানগুলো বেশীরভাগই শ্রুতিমধুর, চিত্রায়ন আকর্ষনীয়।
ভালোবাসার রং সিনেমার কাহিনীর ও সংলাপের তুলনায় নবাগত বাপ্পী ও মাহি বেশ ভালো অভিনয় করেছে, কিন্তু সেই অভিনয়েও অপরিপক্কতার ছাপ স্পষ্ট। নায়ক এবং নায়িকা বেশ আকর্ষনীয়, কিন্তু সিনেমায় অভিনয়ের গুরুত্বও অনেক। বাপ্পীর সংলাপ প্রদান দর্শককে অনন্তর কথা মনে করিয়ে দেবে, ভুল উচ্চারনের জন্য নয়, সংলাপের ধরন ও উচ্চারণভঙ্গির জন্য। বিভিন্ন গানের সাথে নাচের ক্ষেত্রে দুজনেই উতরে যায়, তবে বানিজ্যিক সিনেমার জন্য এ অবশ্যই পর্যাপ্ত নয়।
অ্যাকশন দৃশ্যেও বাপ্পী তেমন কোন ভিন্নতা বা যোগ্যতা ফুটিয়ে তুলতে পারেন নি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে তার অ্যাকশন বেশ হাস্যকর। নায়িকা মাহি দেখতে আকর্ষনীয়, তাকে আরও আকর্ষনীয় চরিত্রে উপস্থাপনের জন্য আটোসাটো পোশাকে উপস্থাপন শুধু অপ্রয়োজনীয়ই নয়, নিন্দনীয়ও। আকর্ষনীয় চেহারা ও শরীর তৈরীর জন্য বাপ্পী ও মাহি যতটা পরিশ্রম করেছে তার চেয়েও অনেক বেশী পরিশ্রম ও সাধনার প্রয়োজন অভিনয়, সংলাপ, এক্সপ্রেশন, নৃত্য ইত্যাদিতে দক্ষতা অর্জনের জন্য।
বাপ্পী ও মাহির তুলনায় পুরানোরা বেশ ভালো অভিনয় করেছে। রাজ্জাক, আলী রাজ, মিজু আহমেদ তাদের অভিজ্ঞতার যথাযথ প্রয়োগ দেখিয়েছেন। কাবিলা সত্যিই দর্শকদের আমোদিত করেছেন। কাবিলাকে কেন্দ্র করে ভালো কমেডি সিনেমা নির্মান করা গেলে পরিচালকরা পয়সা তুলে আনতে পারবেন, এমন আস্থা তৈরী করেছে কাবিলা মামা চরিত্রটি।
ভালোবাসার রং এ অভিনয় নিয়ে অবশ্যই বলতে সে হল তুফান চরিত্রে অমিত হাসান। দীর্ঘদিন নায়ক চরিত্রে অভিনয় করা অমিত হাসানের গেটআপ, সংলাপ প্রদান, অ্যাকশন – দুর্দান্ত। তার – ‘হেই-ই, কারও হাত থাকবে না কারও পাও থাকবে না ……’ দীর্ঘদিন টিকে থাকবে। নায়ক থেকে ভিলেন চরিত্রে এই স্থানান্তর অমিত হাসানকে নিয়ে ভিন্নভাবে ভাবতে উৎসাহ দেয়। স্মার্ট, বুদ্ধিদীপ্ত ভিলেন চরিত্রে অমিত হাসান অনেক ভালো করার যোগ্যতা রাখেন।
যারা বানিজ্যিক বাংলা সিনেমা সম্পর্কে ধারনা রাখেন, তারা পরিচালক শাহিন-সুমনের কাছ থেকে বেশী কিছু আশা করবেন না, হোক সে সিনেমা আন্তর্জাতিক মানের রেড ক্যামেরায় নির্মিত। কতটা অযোগ্যতা নিয়ে একজন পরিচালক একের পর এক সিনেমা নির্মান করে যেতে পারে তার উদাহরণ হবে শাহিন সুমন। সিনেমা দেখতে যতই আকর্ষনীয় হোক না কেন, সিনেমার প্রাণ কাহিনী আর অভিনয় যদি আকর্ষন করতে না পারে তবে সেই সিনেমা পঙ্গু, চলচ্চিত্র শিল্পের বোঝা। এ কারণেই আকর্ষনীয় নায়ক নায়িকা, ঝকঝকে তকতকে প্রিন্ট আর অত্যাধুনিক রেড ক্যামেরায় নির্মিত ‘ভালোবাসার রং’ ময়ূরপুচ্ছের কাক ব্যতীত আর কিছুই নয়।
‘ভালোবাসার রং’ সিনেমার জন্য যদি প্রশংসা করতে হয় তবে সে জাজ মাল্টিমিডিয়া। এফডিসি থেকে নির্মিত সিনেমা কতটা আকর্ষনীয় হতে পারে তার প্রথম স্যাম্পলটা এনে দিয়েছেন তারা। এই স্বাদ পাওয়ার পরে দর্শকরা অসুন্দরের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে বিশাল রকম পরিবর্তন আসতে বেশীদিন অপেক্ষা করতে হবে না।
‘ভালোবাসার রং’ সিনেমার জন্য যদি নিন্দা করতে হয়, তবে সেও জাজ মাল্টিমিডিয়া। আধুনিক প্রযুক্তি, নতুন নায়ক নায়িকা নিয়ে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিকে পাল্টে দেয়ার জন্যই যদি আগমন, তবে কাহিনীকার হিসেবে আবদুল্লাহ জহির বাবু এবং পরিচালক হিসেবে শাহিন সুমনকে বাছাই করা কেন? ভালোবাসার রং -এর তুফানের সংলাপই জাজ মাল্টিমিডিয়ার জন্য – ‘হেই-ই, কারও হাত থাকবে না কারও পা থাকবে না, কিন্তু সিনেমা নির্মানের জন্য যোগ্যতাহীন পরিচালক নিয়োগ করা যাবে না।’
এক নজরে ভালোবাসার রং
সিনেমার নাম | ভালোবাসার রং |
---|---|
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা | শাহিন সুমন |
মুক্তির সাল | ৫ অক্টোবর, ২০১২ |
কাহিনী ও সংলাপ | আবদুল্লাহ জহির বাবু |
অভিনয়ে | বাপ্পী, মাহি, রাজ্জাক, মিজু আহমেদ, অমিত হাসান |
রেটিং | ৩.৫/৫ |
*রেটিং বাংলাদেশী সিনেমাকে বিবেচনায় রেখে করা হয়েছে।
ভালো লিখছেন। শুধু তেল মারা প্রশংসা করেন নাই। লাস্ট এর দুই প্যারাটার দরকার ছিলো…
ধইন্যা মাস্টার। শুধু তেল মারার ভুল করার সুযোগ নাই। আগামীতে যারা সিনেমা দেখতে যাবে তাদের গালি খাওয়া থেকেও বেচে থাকার দরকার আছে 🙂
”হেইই.. কারও হাত থাকবোনা কারও পাও থাকবোনা” 😉 😉
“হেইই.. কারও হাত থাকবোনা কারও পাও থাকবোনা … ” 😉
পড়ে অনেক ভাল্লাগলো। সিনেমাটা খুব বেশি ভাল যে হবে না তা আশা করেছিলাম,তবে ভাল হবে এটা জানতাম। আপনার লেখা পড়ে তাই মনে হল। 🙂
সিনেমাটা দেখার সময় আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি শাহিন সুমনের পরিচালনা দেখছেন, আপনি বাংলা সিনেমা দেখছেন এবং আপনি নতুন দুজন নায়ক নায়িকার সিনেমা দেখছেন। দারাশিকো’র রিভিউ পড়ে সিনেমা দেখছেন ভাবলে হতাশ হতে হবে হয়তো 🙂
তবে এই রকম প্রিন্ট বাংলাদেশী সিনেমার দর্শক আগে কোনদিন দেখে নাই 🙂
আর হ্যা … হেইই.. কারও হাত থাকবোনা কারও পাও থাকবোনা … 😉
hm.ctg te ashle dekha jay.
চিটাগাং এ যায় নাই, বলেন কি? সারা দেশের তেপ্পান্নটা হলে মুক্তি দিয়েছে শুনছিলাম, এর মধ্যে চিটাগাং এর একটাও নাই? আনপসিবল 😉
*রেটিং বাংলাদেশী সিনেমাকে বিবেচনায় রেখে করা হয়েছে।
এই কথাটা কইয়া বাইচা গেলেন, নাইলে দুই-চারটা কথা শুনানোর মুডে ছিলাম :p
জাস্ট কিডিং! 🙂
রিভিউ বরাবরের মতই ভালা হইছে। যদিও দেখবোনা মুভিটা । মুভিটা নিয়ে অনেক অলোচনা হওয়া স্বত্ত্বেও আগ্রহ পাই নাই। ট্রেইলার দেখলাম, গান শুনলাম, মুক্তির আগে অনেক লেখা পড়লাম। তাও না। নায়ক-নায়িকা-পরিচালক পছন্দ হয় নাই। ভালো দিক যেটা আপনি বললেন শুধু সেটাই। ঝকঝকে তকতকে প্রিন্ট। তবে একটা বিষয় সত্য, অনেক বাজে মুভিও ভালো প্রিন্টে দেখতে ভালো লাগে।
বাংলা চলচ্চিত্র নিয়ে আপনার কলম-সংগ্রাম অব্যাহত থাকুক। শুভকামনা
বাচলাম বস। কাউসার রুশোর ইটা আমার ডর লাগে 😉
থেংকু বস। ইটপাটকেল সহ পাশে থাইকেন 🙂
হুমমম… কাহিনীর বড়ো সংকট।
এক আবদুল্লাহ জহির বাবু বছরে কয়টা কাহিনী লিখে!!!!
প্রযুক্তি দিয়ে কি হবে… যদি কাহিনী না থাকে।
কাল এটিএন বাংলায় একটা প্রোগ্রামে কিছু অংশ দেখলাম। অমিত হাসানের একটা দৃশ্য বেশ ভালো লাগছে।
গরম গরম রিভিউয়ের জন্য ধন্যবাদ। সাথে না নেয়ার জন্য নিন্দাবাদ।
সুযোগ কৈরা দেইখা আইসেন। আপনারে যতটুকু চিনি, খুব বেশী গাইল দিবেন না 🙂
Now they have to change the so called traditional story wich is disgusting to some extent, specially the ending. But their commitment is excellent and praiseworthy. I can hope seeing some new telants in our film industry that the gloden days of BD cinema are very close to us! Thank you dear Bloger.
দারাশিকো’র ব্লগে স্বাগতম 🙂
আপনার মত আমরাও আশাবাদী। ২০১২ কে বাংলাদেশী ফিল্মের ছাত্রদেরকে পড়াশোনার মধ্যে রাখতে হবে – এইটা আমি বিশ্বাস করি 🙂
ছবিটা দেখে আমার কাছে বেক্তিগত ভাবে ভাল লেগেছে, যেমন গান এর চিত্রায়ন, তেমন গান, জঙ্গলের দৃশ্য গুলা দেখার মত। এরকম মুভি আরও চাই।
এরকম মুভি চাই না, এর থেকেও ভালো মুভি চাই 🙂
*রেটিং বাংলাদেশী সিনেমাকে বিবেচনায় রেখে করা হয়েছে।
:p:p
জিহবা বাইর কৈরেন না, সবসময় তাই করি। কিন্তু সেই রেটিং দেইখা কেউ কেউ কোশ্চেন কৈরা যায়, আড়ালে মনে হয় আমার বুদ্ধি শুদ্ধি নিয়া সন্দেহও করে 🙂
এইজন্য লিখা দিলাম। 🙂
যথারীতি একটি পরিপুর্ন রিভিউ যা সত্যি তাই জানলাম।
স্বাগতম মানিক 🙂
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে 🙂
প্রথমেই এই সিনেমা নিয়ে বেশি কিছু আশা করা যায়নি। তবুও বাংলাদেশ যে রেজুলেশন খরা কাটিয়ে উঠেছে এটাই বা কম কিসে। সবথেকে মেজাজ খারাপ হয়েছে নিপাকে (মাহী) অশ্লীল পোশাকে উপস্থাপন করায়। বাংলাদেশের প্রচলিত আটার বস্তা/আলুর বস্তার বিপরীতে এই মেয়েটি একটু অন্যরকম অবস্থান নিয়ে হাজির হতে পারতো। কিন্তু ব্যাবসায়িক মনোবৃত্তি নিয়ে অভিনয়কে গুরুত্ব না দিয়ে বরবরের মতো হালকার উপ্রে রগরগে অবস্থান হাজির করতে সচেষ্ট হওয়ায় এই সিনেমা গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠিতে পিছিয়ে গেছে। বিশেষ করে অপ্রাসঙ্গিক হাত-পা ছোড়াছুড়ির বদলে যদি ডান্সিং এর দিকে গুরুত্ব দিয়ে পোশাক আরেকটু নিচে নামানো যেতো সেখানে উপকার বৈ ক্ষতি হতো না। কলকাতার মুভিগুলোর বেশিরভাগ হিন্দির নকল আর খাপছাড়া হলেও সেখানে একটি মেয়ে ঠিকই তার অবস্থান ধরে রেখেছে সে হচ্ছে শ্রাবন্তী। কিন্তু অন্যান্যদের থেকে তার অবস্থান একটু ভিন্ন। উগ্র উপস্থাপনার বদলে সে অভিনয় দিয়েই দর্শক প্রিয়তা অর্জন করেছে। অভিষিক্ত হিসেবে বাংলাদেশের দর্শকদের মাঝে নিপা ঠিক সেই অবস্থান তৈরি করে নিতে পারতো। কিন্তু বরাবরের ঐতিহ্য ধরে রেখে ঐ হাত-পা ছোড়া আর পোশাকি বৈচিত্র্যই পরিচালকের কাছে মূখ্য হয়েছে।
সুতরাং পরিশেষে একটি কথা বলা যায় তা হচ্ছে।
ধ্যাত…… ধুর্বাল……
পরিশেষের কথাটাই যুক্তিযুক্ত। তবে সব দর্শকের কাছে নয়। এই সিনেমাকে ভালোভাবে গ্রহন করেছে এমন দর্শক মোটেও কম নয় 🙂
রিভিউ ভালো লাগলো, তবে মুভিটার কিছুই পছন্দ হয় নি একমাত্র প্রিন্ট ছাড়া। দেখার সম্ভাবনা কম!
হুম। আমি প্রিন্ট দেখার জন্য গেছিলাম। আর পরিবর্তিত ডিজিটাল প্রযুক্তি।
একটা তো উন্নতি ঘটলো।
সিনেমার পর্দায় বারোমাসি বৃষ্টিপড়া কাটিয়ে ভালো রেজুলেশন।
এভাবেই চলচ্চিত্র শিল্প টা এগিয়ে যাক।
এইটাই ভালো দিক, এইটাই আশার দিক। সিনেমা বলতে যদি কেউ শুধু কাহিনী আর অভিনয় বুঝে, তারা এই দিকটা দেখবে না। 🙂
print valo holei j movie valo hoina tar proman ai movie ta,,,,,,onek kharap print diewo valo movie hoi jemon shakib khan er movie gulo print kharap but shakib khan er acting er maddome sompurno movie ta akorsonio kore tule,,,,,
ভালো যুক্তি দিয়েছেন আতিক। শুধু প্রিন্ট দিয়ে সিনেমা বিচার করা যাবে না, ওটা অনেকটাই গৌন বিষয়।
আর হ্যা, শাকিব খানের সিনেমায় মোটামুটি ভালো গল্প থাকে, তবে আমরা তার কাছে মৌলিক গল্প আশা করি। হাজার হোক, শঅকিব খান এদেশের ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ ভালো ভূমিকা রাখছেন।
ভালো থাকুন আতিক। আবার আসবেন 🙂
Thank you.
ওয়েলকাম বোবা গায়ক 🙂
আবার আসবেন 🙂
রিভিউ অনেক ভালো হয়েছে, সে আর নতুন কি! কমেন্ট করতে আলসামি লাগে তাই করিনা। কিন্তু আজ আসলেই স্পষ্টবাদিতাটুকুন-কে উৎসাহ না দিয়ে পারলাম না।
সোনালী হাতছানিটা আপনার রিভিউ পড়ে আরেকটু কাছ থেকে দেখে ভীষন ভালো লাগলো ভাই।
ধন্যবাদ শফিক আসাদ 🙂
স্বাগতম জানাচ্ছি দারাশিকো’র ব্লগে – আপনার সাইটটাও দেখে এলাম। ভালো লেগেছে 🙂
চলুক, শুভকামনা 🙂
বাংলাদেশের এফডিসির সিনেমার সবচেয়ে বড় সমস্যা হল দুর্বল কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ। কবে যে মেধাবী পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার দিয়ে কাজ করানো হবে ? প্রযোজক মশাইরা টাকা খাটান, কিন্তু ফালতু কাহিনীতে কেন খাটান ? তারা কি চান না যে, একটা দারুণ কাহিনী দিয়ে সিনেমা নির্মাণ আরও বেশি মুনাফা করতে ?
শামীম ভাই, আমার এক সিনিয়র প্রডিউসার বন্ধু আছে। নূতন ছবি বানাচ্ছে, কাহিনী শুনে আমি লজ্জা পেলাম। কয়েকটা তামিল ও হিন্দী ছবির মিশ্রন। আমি তাকে বললাম, একটা মৌলিক কাহিনী/গল্প দেখার জন্য। তিনি দাঁত বের করে বললেন, এই সব গল্প নাকি মানুষ খায় না!
অবস্থা দেখে আর কথা বাড়াই নাই।
ভাইয়া, প্রোডিউসারের দৃষ্টিভঙ্গীতে দেখলে খুব ভুল নেই এখানে। ওরা যত কম খরচে ব্যাবসা নিশ্চিত করা যায় সে চিন্তা করে। সমস্যা হল, এরা বুঝতেই পারছে না যে একটা ভালো কাহিনী নিয়ে সিনেমা করতে পারলে সেই সিনেমা অনেক বেশীগুনে মুনাফা নিশ্চিত করবে।
বুঝবে – এই আশা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই 🙂
চট্টগ্রামে আসলে দেখব…
hmmmmmmm.
“বাংলাদেশী সিনেমার এত আকর্ষনীয় রূপ-বর্ণ দেখার পরে গতানুগতিক সাধারণ বা কদাকার চেহারার সিনেমাকে দর্শক পুনরায় গ্রহন করবে কিনা সে বিষয়ে ভেবে দেখার সময় হয়েছে।”
এটাও একটা বড় দিক, পরিবর্তন শুরু হয়েছে, আশা করছি সামনে আরো ভালো ভালো সিনেমা পাবো!
রিভিউ ভাল হইসে। আমিও ট্রেইলার দেখেই হতাশ হয়ে গেছিলাম কাহিনী আর অভিনয় নিয়ে। অনেক কপিপেস্ট আর ছোট কাপড়ের প্রতিউ পরিচালকের নজর বেশী ছিলো
চমৎকার রিভিউ। ভাল লাগল। 🙂
ছবিটি দেখার ইচ্ছে আছে শুধুমাত্র এর নির্মান শৈলি দেখার জন্য। কিন্তু কাহিনী শুনে দেখার আগ্রহ আরো কমে গেল! একি রকম তথাকতিত বাণিজ্যিক ছবি আর কত !
valo laglo review…. fdc k baad diye kaj krle better hobe.
রিভিউ ভালো লাগছে । সময় পেলে দেখে আসব ।
শুকরিয়া চন্দ্র শেখর। ভালো থাকবেন 🙂
রিভিউ ভালো হইসে। মুভি দেখুম কিনা, জানিনা।
🙂
ধন্যবাদ ইউসুফ খান। ভালোবাসার রং একটা মাইলফলক, ছুয়ে দেখার সৌভাগ্য নিতে পারেন 🙂
আমি এ কারণেই দেখেছি 🙂
Chomotkar review 🙂
bangla cinema shilper chorom utkorsho kamona kori
Fi Amanillah!!!
দারাশিকো’র ব্লগে স্বাগতম মেসবাউল ইসলাম সেতু 🙂
আল অল্প কটা দিন অপেক্ষা করতে হবে – বাংলাদ সিনেমার সুদিন ফিরে এল বল 🙂
ছবিটা কি আমার ১০ বছরের ছেলেকে নিয়ে দেখতে পারব? আপনার মতামত জানতে চাই।
রিভিউ পড়ে আবশ্য ছবিটা বুঝে গেছি! হা হা হা।। ভাল লিখেছেন।
হা হা হা আপনার দুইটা কমেন্টকেই সেন্সরবোর্ড অটো স্পামবক্সে নিয়া গেছে ভাই, তাই উত্তর দিতে একটু দেরী হয়ে গেল।
ছেলেকে নিয়ে দেখতে যেতে পারেন – সেই সংক্রান্ত সমস্যা নেই। তবে, সে যদি এরমাঝেই অন্যান্য ভালো সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা অর্জন করে ফেলে, তবে হয়তো পছন্দ করবে না। শুধু চেহারা দিয়ে আর কতটুকু মন ভরে, ভালো কাহিনীও তো চাই 🙂 🙂
অনেক ভালো লাগলো উদরাজী ভাই এসেছেন বলে । ভালো থাকুন 🙂
আসতে চাই নিয়মিত। সময়ের অভাবে হয় না। তবে আপনি মনে গেঁথে গেছেন। বর্তমান বাংলা সিনেমার সমালোচক হিসাবে আপনি সেরাদের সেরা।
তবে নিউজ পেপারের সাথে থাকবেন সব সময়, পরে ব্লগে।
শুভেচ্ছা।