বাংলাদেশীদের আবেগসর্বস্বতা বিভিন্ন সময়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছে – গত কয়েকদিন ধরে এরকমই আরেকটি সংবাদ পত্রিকার পাতায় প্রকাশিত হচ্ছে। ঘটনার জন্ম দিয়েছেন মাগুরার একজন কৃষক, নাম আমজাদ হোসেন।
১৯৮৭ সাল থেকে ব্যক্তিগত দুরারোগ্য কোন এক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন আমজাদ হোসেন। চিকিৎসায় কোন ফল লাভ করতে না পেরে তিনি শরনাপন্ন হন জার্মানির হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার। (সম্ভবত হ্যানিম্যান হোমিও। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় অন্য কোনদেশীয় চিকিৎসা আছে কিনা জানা নেই। কেউ জানলে জানাবেন প্লিজ)। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় রোগমুক্তি ঘটে আমজাদ হোসেনের, কিন্তু তার অন্তর জার্মানীর প্রতি কৃতজ্ঞতারোগে আক্রান্ত হয়। সেই রোগ থেকেই তিনি বিশ্বকাপ উপলক্ষে জার্মানীর একটি বিশাল পতাকা তৈরী করেছেন, পত্রিকার পাতায় ছবিসহ শিরোনাম হয়েছেন।
‘কৃতজ্ঞতারোগ’ বলছি কেন? কারণ সাড়ে তিন হাজার গজ দৈর্ঘ্যের এই পতাকা তৈরী করতে গিয়ে আমজাদ হোসেন খরচ করেছেন প্রায় দেড়লক্ষ টাকা। এই টাকার সংস্থান করতে গিয়ে তিনি দুই দফায় বিক্রি করেছেন মোট ৫০ শতক আবাদি জমি। পতাকা তৈরীর খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর জার্মান চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ড. ফার্দিনান্ত ফন ওয়েহে তার সাথে দেখা করে জার্মান ফুটবল একাডেমির ফ্যান ক্লাবের আজীবন সদস্য কার্ড, একটি ফুটবল, জার্মান জাতীয় দলের একটি জার্সি এবং অন্যান্য উপহার সামগ্রী প্রদান করেন। জার্মান সরকারের পক্ষ থেকে উপহারস্বরূপ ‘খেটে খাওয়া সাধারণ কৃষক’ আমজাদ হোসেনকে পতাকা তৈরীর খরচ প্রদান করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে পত্রিকায় কোন উল্লেখ নেই – যদিও জার্মান দলের জার্সি ও ফুটবলের তুলনায় দেড়লক্ষ টাকা অনেক বেশী আর্থিক মূল্যমানসম্পন্ন।
আমজাদ হোসেনের মত আবেগসর্বস্ব মানুষদের বোধবুদ্ধি জাগ্রত হোক – এই প্রত্যাশা করি।
বাংলাদেশীদের আবেগসর্বস্বতা
