১.
‘এই মসজিদে কি মেয়েদের নামাজের ব্যবস্থা আছে?’ – বাম দিক থেকে নারীকন্ঠে এই প্রশ্ন শুনতে পেয়ে আমি চোখ খুলে পাশে তাকালাম, কিন্তু ভদ্রমহিলাকে দেখতে পেলাম না। কেউ উত্তর দেয় নি, তাই মহিলা আবারও প্রশ্ন করলেন – ‘এই মসজিদে কি মেয়েদের নামাজের ব্যবস্থা আছে? আমার জোহরের নামাজ পড়া হয় নি’। এবারও কেউ উত্তর দিল না। আসলে মসজিদে তখন আমার মত অল্প কিছু মানুষ শুয়ে বসে ঝিমাচ্ছে বা আসরের নামাজের অপেক্ষা করছে। ছোটভাই পরীক্ষা দিচ্ছে, শেষ হওয়া পর্যন্ত আমার কাজ নেই – তাই আমি মসজিদে শুয়ে মোবাইল ঘাটছি। মসজিদের খাদেম আসরের নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, মেঝে পরিস্কার করছেন, কিন্তু মহিলার কন্ঠস্বর তার কাছে পৌছায় নি।
মিনিট খানেক পরেই মহিলার একই প্রশ্ন শুনতে পেলাম – এবার ডানদিকে, শব্দের উৎসমুখে ভদ্রমহিলাকে দেখেও ফেললাম – পয়তাল্লিশ পঞ্চাশ বা তার বেশী বয়সের এক মোটাসোটা বোরকা পড়া মহিলা – সম্ভবত তারও কেউ পরীক্ষা দিচ্ছেন। এইবার খাদেম প্রশ্ন শুনতে পেলেন – জানিয়ে দিলেন, মহিলাদের নামাজের কোন ব্যবস্থা নেই মসজিদে। ভদ্রমহিলা হতাশ হয়ে সামনের দিকে এগোলেন – ওদিকে কোন মসজিদ আছে কিনা কে জানে!
বছর দুয়েক আগের ঘটনা। জগন্নাথ ইউনিভার্সিটির সামনের মসজিদে।
২.
মহিলার বয়স বছর ত্রিশেক হবে সম্ভবত, কারণ তার সাথের মেয়েটির বয়স ৪/৫ এর বেশী নয়। চোখ ছাড়া পুরো শরীর কালো বোরকা, হাতমোজায় ঢাকা। মসজিদের কাছে একটি গাছের আড়ালে দাড়ালেন। তারপর নামাজের নিয়ত করলেন। রুকু, সিজদার জায়গায় ইশারায় নামাজ পড়লেন। মসজিদটা বিশাল – দোতালা। মাগরিবের সময় দোতালায় মানুষ হয় না। কিন্তু ভদ্রমহিলার নামাজের জায়গাও হল না।
আজকের ঘটনা। ধানমন্ডি লেকের পাশে যে মসজিদটা, সেখানে।
৩.
কেন হবে, কেন হবে না, কিভাবে হবে, কে করবে – আমি জানি না। এইটুকু বুঝি – বর্তমান সময়ে যেহেতু নারীরা দিনের একটা বড় অংশ বিভিন্ন প্রয়োজনে বাসার বাহিরে কাটান, তাই তার নামাজের জায়গাটুকুও নিশ্চিত করা দরকার, পড়বেন কি পড়বেন না – সেটা তার ব্যাপার!
এ বিষয়ে আরেকটি পোস্ট পড়ুন
One Comment on “মসজিদে মহিলাদের নামাজের ব্যবস্থা”