১. মরুপথ। দূরের রাস্তা। দুজন মানুষ। বাহন একটিমাত্র উট। পালা করে চলছিলেন দুজনে। গন্তব্যে যখন পৌছে গেলেন তখন ভৃত্য উপরে – উটের পিঠে আর মনিব নিচে – উটের দড়ি ধরে। লোকেরা উটের উপরে বসে থাকা ভৃত্যকেই বরণ করে নিতে চাইলে বাধা দেন ভৃত্য। ভুল শুধরে জানিয়ে দেন, উপরের নয়, নিচে দড়ি হাতে দাড়ানো লোকটিই আমেরুল মুমিনীন অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা হযরত উমার ইবনুল খাত্তাব (রা)।
২. বিআরটিসি-র এসি বাসে ফিরছি। আড়াই ঘন্টার যাত্রা। পাশের সিটে দম্পত্তির কোল দেড় দু-বছরের একটি বাচ্চা। বাচ্চার দেখাশোনায় সাহায্য করার জন্য বছর দশেকের ছেলে মামুন। আড়াই ঘন্টার রাস্তায় দেড় ঘন্টা সে করিডোরে দাড়িয়েই ছিল। দুজনের সিটে তিনজন – স্বস্তিদায়ক নয়।
৩. হযরত উমার (রা) এর ঘটনার পরে মামুনের ঘটনার প্রকাশে দম্পত্তি দোষী হয়। কিন্তু আড়াই ঘন্টার যাত্রায় তিনশ টাকা দিয়ে আরও একটি টিকিট কাটা কি সবার পক্ষে সম্ভব – আর্থিক সঙ্গতি কিংবা মানসিকতায়? বোধহয় সম্ভব না। আমার খালা পেরেছেন। চাকুরীজীবি খালা-খালুর একমাত্র মেয়েকে সঙ্গ দেয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে যে সকল মেয়ে তাদের পরিবারে এসেছে তার পোশাক দেখে অন্তত কখনো মনে হয় নি সে কাজিনের বোন নয়।
৪. বাহন হিসেবে উট চলে না এখন, গাড়ি চলে – সেখানে কমে চারজন বসা যায়। রিকশাও চলে, সেখানে কমে দুইজন বসে। গাড়ির সামনের সিটে ড্রাইভারের পাশে কিংবা রিকশার পেছনে যাত্রীর পায়ের কাছে যদি কেউ বসে তবে সেটা অবশ্যই দারিদ্র্যের কারণে। যিনি সামনে অথবা নিচে বসেন, তিনি অর্থনৈতিক দারিদ্র্যের শিকার, পেছনের বা উপরের জন মানসিক।
৫. রাব্বুল আলামীন সকলকে স্বচ্ছলতা দিক – অর্থনৈতিক এবং মানসিক। আমিন।