মাদকের কারণে বাবা এবং/অথবা মা-কে আক্রমন, হত্যা ইত্যাদির ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয়, মাদকাসক্ত সন্তানকে থানায় দিয়ে আসার ঘটনাও প্রচুর ঘটেছে। ঐশী’র ঘটনায় নতুন ব্যাপারটা হল – ঐশী একজন মেয়ে, এর আগের প্রায় সব ঘটনায়ই অভিযুক্ত ছিল কোন ছেলে। বিড়ি-সিগারেট-মদ-গাজা-শীশা-ইয়াবা-হেরোইন ইত্যাদি বাংলা মিডিয়ামের বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের মধ্যে কম-বেশী প্রচলিত থাকলেও ঐশী’র ঘটনা শুধু ইংলিশ মিডিয়াম এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দিকে বেশী আঙ্গুল তুলছে – তার প্রধাণ কারণ তাদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা। ঐশী’র মত মেয়েরা কেন মাদকের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে সেটা নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে ইংলিশ মিডিয়াম থেকে পুরো শিক্ষাজীবন শেষ করা সমবয়সী কলিগ নতুন কিছু জানালো।
তিনি বলছেন মাদকের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার জন্য মেয়েদের ড্রেস একটা ভালো ভূমিকা রাখে। কিরকম? যে সকল মেয়ে বাংলাদেশী সনাতন সেলোয়ার কামিজ পড়ে তারা ফিগার নিয়ে অপেক্ষাকৃত কম টেনশনে ভোগে – কারণ কিছুটা ঢোলা পোশাক শরীরের সামান্য বাড়তি মেদ ঢেকে রাখতে পারে। অন্যদিকে, যে ট্রাউজার বা টিশার্টে অভ্যস্ত, তাকে ফিগার সম্পর্কে খুবই সচেতন হতে হয়, কারণ ট্রাউজার বা টিশার্ট বেমানান দেখায় যদি ফিগার সেরকম না হয়। এই ফিগার তৈরী ও বজায় রাখার আগ্রহে অনেকে ইয়াবার মত মাদক ব্যবহার শুরু করে। প্রাথমিকভাবে খাবারের রুচি নষ্ট হয়ে ফিগার তৈরী সম্ভব হলেও একটা সময় অ্যাডিকশন তৈরী হয়ে যায়।
দ্বিতীয় যে বিষয়টি জানা গেল – ঐশীর মত আরও অনেক ছেলে-মেয়েই ড্রাগ নেয় কিন্তু পরিবারে এরকম বড় আকারের ঘটনা ঘটে না তার কারণ কি? কারণ মাদক ক্রয়ের পর্যাপ্ত টাকা তাদের হাতে থাকে এবং অনেকক্ষেত্রে তাদের পরিবারই জেনে শুনে টাকা দেয়। কারণটা সহজবোধ্য। টাকার অভাবে ড্রাগ কিনতে না পারলে এদের আক্রমণের প্রথম টার্গেট হয় পরিবারের সদস্যরা – এতে পারিবারিক অশান্তি ছাড়াও সামাজিক অশান্তি তৈরী হয় – ফলে মাদকাসক্ত সন্তানকে ঠান্ডা রাখার জন্য কম বেশী সাপোর্ট দিতেই হয়।
কিছুদিন আগেই একজন মাদক সম্রাটকে কেন্দ্র করে নির্মিত চলচ্চিত্র নিয়ে একটা ব্লগ লিখেছিলাম – ঐশীর ঘটনায় আরেকবার শেয়ার দেয়ার আগ্রহ বোধ করছি।
http://www.darashiko.com/2013/