বাংলাদেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি গত এক দশকেরও বেশী সময়ে বেশ দূর্যোগপূর্ণ সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। গতানুগতিক গল্প, মানহীন অভিনয়, দুর্বল পরিচালনা, দুর্বল কারিগরী মান, দর্শক চাহিদাকে উপেক্ষা করে এক শ্রেনীর দর্শকের জন্য সিনেমা বানানো ইত্যাদি সহ আরও নানা কারনে সিনেমাহলে দর্শক কমতে শুরু করে। একই সময়ে, অশ্লীল ছবির জোয়ার শুরু হয় যা সাধারণ দর্শককে আরও হলবিমুখ করে। প্রকৃতপক্ষে, কারণগুলো একে অপরকে প্রভাবিত করে পতনকে তরান্বিত করেছিল, ফলাফল, বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি শুধু দর্শকই হারায় নি, সারা দেশে ভালো ব্যবসার অভাবে প্রচুর সিনেমাহল বন্ধ হয়ে গিয়েছে, যেগুলো টিকে রয়েছে সেগুলোও যত্ন পরিচর্যার অভাবে দর্শকের আগ্রহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বলাবাহুল্য, তৎকালীন সরকারসমূহ এই পতনকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছিলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আবরণে সেনা শাসনে এই পতন ঠেকানো সম্ভব হয়, অশ্লীল ছবির নির্মান বন্ধ হয়ে আবারও ভালো সিনেমা তৈরী শুরু হয়। ২০১১ সাল পর্যন্ত সিনেমা নির্মান সংখ্যা নিম্নমুখী হলেও ২০১২ সালে আবার উর্দ্ধমুখী হয়। বর্তমান সরকারের শাসনামালে সিনেমার উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করা হয় যা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির প্রতি সরকারের সুদৃষ্টির ইঙ্গিতবাহী, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাপ্রবাহ সেই সকল পদক্ষেপকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বাংলাদেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নের স্বার্থে গৃহীত নাকি পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়ন- সেটাই প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে।
সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের সূত্র পাওয়া যায় গত বছরের ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের পত্রিকায়। কোলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা প্রসেনজিত তার নিজের প্রতিষ্ঠান ‘ফিকি ফ্রেম’ এর মুনাফা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু-কে কোলকাতায় আমন্ত্রন জানান। সদ্য দায়িত্ব গ্রহণ করা তথ্যমন্ত্রী সে আহবানে সাড়া দিয়ে কোলকাতায় গিয়েছিলেন কিনা জানি না, তবে জানুয়ারীর দ্বিতীয় সপ্তাহে তথ্যমন্ত্রীর আহবানে কোলকাতা থেকে একটি দল বাংলাদেশ ভ্রমণ করে তথ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করেন। এই দলে ছিলেন পরিচালক গৌতম ঘোষ, চিত্রনায়ক প্রসেনজিত, জিৎ, নামী প্রযোজক মহেন্দ্র সোনি, শ্রীকান্ত মেহতা প্রমুখ।
বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের নেতৃস্থানীয় শিল্পী, কলাকুশলী, প্রযোজক পরিচালকসহ তথ্যমন্ত্রীর সাথে প্রতিনিধিদলের সভায় ‘দুই বাংলাকে এক করার’ প্রস্তাবের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় আওয়ামী লীগের সাংসদ অভিনেত্রী কবরী এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও প্রতিবাদ করেন পরিচালক-প্রযোজকরা। কিন্তু ১০ জানুয়ারী ২০১৩ তারিখে কোলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকায় আনন্দের সাথে আগামী পহেলা বৈশাখেই ছবি মুক্তির ঘোষনা জানিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। রিপোর্টই প্রকাশ করে, দেশীয় প্রযোজক-পরিচালকদের প্রতিবাদ এবং দাবীকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৩ তারিখে আনন্দবাজার পত্রিকায় আবারও “বদল আইনে, টলিউড এ বার বাংলাদেশেও” শিরোনামে বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ইনু-কে বামপন্হী নেতা হিসেবে পরিচিতি দিয়ে তার একটি সাক্ষাতকার ছাপানো হয়। ইনুর সেই সাক্ষাতকার পড়লে লজ্জিত হতে হবে। রিপোর্টের কিছু চুম্বক অংশ তুলে দিচ্ছি।
“কয়েক মাস আগে তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েই আমি বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দিই। কারণ, ইন্টারনেট-ওয়েবসাইটের যুগে আইন করে কোনও দেশের সিনেমার প্রদর্শন বন্ধ করে রাখা হাস্যকর।”
বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী জানান, সে দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্কট কাটাতেই তিনি হাত মেলানোর প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয়েছিলেন কলকাতার চলচ্চিত্র মহলের কাছে।
ইনু বলেন, “ভারতের সিনেমার অবাধ প্রদর্শনের জন্য আমরা যেমন উদ্যোগী হয়েছি, এ দেশেরও উচিত বাংলাদেশের সিনেমা প্রদর্শনে বাধানিষেধ তুলে নেওয়া। তবে দু’দেশের চলচ্চিত্র শিল্পই লাভবান হতে পারে।”
ইনু বলেন, “ভারতে বড় বড় মাল্টিপ্লেক্স তৈরির পরে হলে দিয়ে সিনেমা দেখার চলটা বেড়েছে। আমরা চাই ভারতের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশেও এ ধরনের বড় সিনেমা হল তৈরি করুক। যৌথ উদ্যোগে সিনেমার আধুনিক ল্যাবরেটরি তৈরি হোক, তৈরি হোক স্টুডিও। হলিউড থেকে আধুনিক প্রযুক্তি আনা হোক বাংলা সিনেমায়। দু’দেশের কলাকুশলীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও হোক।”
একদমই নীরবে ঘটে যাচ্ছে না এসকল ঘটনা। দেশীয় সিনেমার প্রযোজক-পরিচালকরা এর প্রতিবাদ করেছেন। এই উদ্যোগকে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংস করার পায়তারা আখ্যা দিয়ে চলতি মাস থেকে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন তারা। এই উদ্যোগ কেন ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংস করবে সেই যুক্তি তারা দিয়েছেন, উল্লেখযোগ্য কিছু পয়েন্ট তুলে দিচ্ছি।
“সরকারের এ উদ্যোগ আত্মঘাতী। কারণ এটি অসম উদ্যোগ। কলকাতার এক থেকে দেড়শ কোটি টাকার চলচ্চিত্রের সঙ্গে ঢাকার এক বা দেড় কোটির টাকার চলচ্চিত্রের আদান-প্রদান কীভাবে সম্ভব।
“বাংলাদেশ ভারতের অঙ্গরাজ্য নয় যে তথ্যমন্ত্রী চাইলেই এখানে ভারতের ছবি অবাধে প্রদর্শন করা যাবে।” – চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি শহীদুল ইসলাম খোকন
“ওইদিন বুঝতে পারেনি যে এটি একটি ষড়যন্ত্র ছিল। তাই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলাম। যখন জানতে পারলাম কলকাতার ভেঙ্কেচেশ ফিল্মের সঙ্গে এদেশের একটি বড়মাপের ব্যবসায়ী সংগঠন চলচ্চিত্র আমদানির চুক্তি গোপনে স্বাক্ষর করে ফেলেছে তখন এটি যে এদেশের চলচ্চিত্র ধ্বংসের নীলনকশা তা আর বুঝতে বাকি নেই।” – চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি শহীদুল ইসলাম খোকন
এদেশের চলচ্চিত্রকারদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ছাড়াই এই ‘গোপন উদ্যোগ’ কেন? কার স্বার্থে? এর কয়েকটি উদাহরণ দিলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। যেমন ২০১২ সালের ৩ এপ্রিল চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা করা হয়। শিল্পের নীতিমালা তৈরির জন্য এ পর্যন্ত দুবার চলচ্চিত্র সংগঠনের নেতাদের প্রধানমন্ত্রী বৈঠকের জন্য ডেকেও তা স্থগিত করে দেন। এফডিসি ও প্রেক্ষাগৃহকে ডিজিটাল করার দীর্ঘদিনের দাবির প্রতিও সরকার কর্ণপাত করেনি। ১৫ বছর ধরে সেন্সর বোর্ডে গ্রেডেশন পদ্ধতি চালুর দাবি করে আসছিলাম। কিন্তু তা করা হয়নি। হঠাৎ করে সম্প্রতি এ উদ্যোগ নেওয়া হলো। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারতীয় চলচ্চিত্র বিনাকর্তনে এখানে প্রদর্শন করা। কারণ ভারত কখনো তাদের ছবি এখানে সেন্সর করতে দেবে না। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ফিল্ম আর্কাইভ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছেন, সিনেমা হলকে ডিজিটাল করার জন্য অর্থমন্ত্রীকে তিনি অর্থ বরাদ্দের অনুরোধ করেছেন। এটাও হঠাৎ করে কেন? এই দাবি ছিল আমাদের দীর্ঘদিনের। এখন তাহলে ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শনের স্বার্থেই তড়িঘড়ি করে এ উদ্যোগ। – চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু
এদেশে ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন করতে হলে তা হতে হবে সুষম বিনিময় নীতিমালার অধীনে। নয়তো এ উদ্যোগ মেনে নেওয়া হবে না। বর্তমানে সুষম বিনিময়ের অবস্থা আমাদের নেই। আমরা যাতে ভারতীয় ছবির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় যেতে পারি সে ব্যবস্থা আগে করা হোক। তারপর মেলবন্ধনের বিষয়টি বিবেচনা করা যাবে। – চলচ্চিত্র চিত্রগ্রাহক সমিতির সভাপতি আবদুল লতিফ বাচ্চু
কলকাতার সঙ্গে আমাদের ছবির আনুপাতিক আদান-প্রদানকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু আমাদের ছবিকে তো আগে তাদের সমপর্যায়ে যেতে হবে। এ জন্য সরকার মেলবন্ধনের চুক্তির আগে এখানে আন্তর্জাতিকমানের চলচ্চিত্র নির্মাণের ব্যবস্থা করুক। তারপর বাট্টা প্রক্রিয়ার আদান-প্রদানে যেতে আমাদের কোনো অমত থাকবে না। – চলচ্চিত্র গিল্ড সমিতির সভাপতি আবু মুসা দেবু
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকে এভাবে ভারতের কাছে বিকিয়ে দেয়ার উদ্যোগ এটাই প্রথম নয়, বলা উচিত, সরকার দায়িত্ব গ্রহনের পর সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী কর্নেল (অবঃ) ফারুক এ বিষয়ে উদ্যোগ নেন। বঙ্গবন্ধুর সময়ে গৃহিত সিদ্ধান্তকে বাতিল করে কোলকাতা এবং ভারতীয় সিনেমাকে এদেশে ঢোকানোর প্রস্তাবের প্রবল বিরোধিতায় সরকার পিছাতে বাধ্য হয়, তবে সিদ্ধান্তের সময়েই ‘এলসি’ খোলা কিছু সিনেমার তিনটি গত দুই বছরে এদেশে প্রদর্শিত হয়। পরবর্তীতে, সরকার চলচ্চিত্রের উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করে যার মধ্যে চলচ্চিত্র-কে শিল্প হিসেবে ঘোষনা, সেন্সরবোর্ড তুলে দিয়ে গ্রেডিং সিস্টেম চালু করা অন্যতম।
সাম্প্রতিক সময়ের কার্যক্রম নির্দেশ করছে এর কোনটিই দেশীয় ইন্ডাস্ট্রি নয় বরং কোলকাতার সিনেমাকে এদেশে প্রবেশের সুবিধা প্রদানের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। মজার বিষয় হল, এর আগে যখন কোলকাতার সিনেমা বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হল তখন দেশে তেল-গ্যাস রপ্তানি কানকো-ফিলিপস চুক্তি নিয়ে আন্দোলন চলছে, আর বর্তমানে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবীতে সারাদেশ ব্যস্ত – অথচ পেছনে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির গুহ্যদ্বারে আগুন দেয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন চলছে।
দুর্ভাগ্য এই দেশের মানুষের, দুর্ভাগ্য এই দেশের সিনেমা নির্মাতা-দর্শকদের। খুব কম সরকারই সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নে নির্মাতা-দর্শকদের দাবীকে পাত্তা দিয়েছেন। অশ্লীলতা দূরীকরণ, সিনেমা নির্মাতাসহ নতুনদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা, স্বয়ংসম্পূর্ণ ফিল্ম ইন্সটিটিউট তৈরী, উন্নত কারিগরী প্রযুক্তি নিশ্চিতকরন, সিনেপ্লেক্স তৈরীর অনুমতি প্রদান, ডিজিটাল সিনেমাহলসহ অন্যান্য হলের মানোন্নয়নে সহযোগিতা প্রদাণ ইত্যাদি দাবী তুলে ধরা হয়েছে ফিবছর, কোন লাভ হয় নি।
বাংলাদেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নের জন্যই কোলকাতার সিনেমা-কে বাংলাদেশে প্রদর্শনের সুযোগ দেয়া উচিত, কিন্তু সেটা এখনই নয়। অতিসম্প্রতি-ই যে সকল সুযোগ সুবিধার দরজা উন্মুক্ত করে দেয়া হল সেই দরজা দিয়ে বের হয়ে বাহিরের আলো-বাতাসে আরেকটু পুষ্ট হওয়ার সুযোগ চাই বাংলাদেশী সিনেমার। খুব বেশী সময় নয়, আমি বিশ্বাস করি ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই সুযোগের সদ্ব্যবহার এদেশের ইন্ডাস্ট্রিকে শুধু প্রতিদ্বন্দ্বীতা নয়, টপকে যাওয়ার মত যোগ্যতা অর্জন নিশ্চিত করবে। সকল দরজা বন্ধ অবস্থায় যদি চলচ্চিত্র শিল্প এত বছর টিকে থেকে সিনেমা নির্মান করতে পারে, তবে এরকম আশা করা খুব বেশী কিছু নয়। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত যা আশার আলো দেখা গিয়েছিল, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ থেকে মনে হচ্ছে – অন্ধকারই ভালো।
দেশীয় এই ধরনের ইস্যুগুলোতে সবসময়ই বামপন্হীরা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে, একই মতাদর্শী নেতা দেশের স্বার্থবিরোধী এরকম সিদ্ধান্ত কিভাবে গ্রহণ করে সেটা ভাবনার বিষয়। বোধহয়, কোলকাতা বাংলাদেশের বাম দিকে অবস্থিত বলেই সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির মুখ সেদিকে ঘুরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে।
ছবি: বাংলাদেশ প্রতিদিন
কৈফিয়ত ও অনুরোধ:
তথ্যসমূহের রেফারেন্সের জন্য স্বল্প/অপরিচিত কিছু নিউজ সাইটের লিংক ব্যবহার করতে হল। গুগল করে দেশের প্রথম সারির সংবাদগুলো থেকে কোন সংবাদ পাওয়া গেল না বলেই এসকল উৎস থেকে সাহায্য গ্রহণ করতে হল। পাঠকরা যদি এ ব্যাপারে সাহায্য করেন, তবে কৃতজ্ঞ থাকবো।
দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে কেন এখনই কোলকাতার চলচ্চিত্র নয় – এ বিষয়ে এর আগে বিভিন্ন লেখায় আমার মতামত ব্যক্ত করেছি বলে এই লেখায় সেগুলো উপস্থাপন করা হল না। পাঠকের প্রতি অনুরোধ থাকবে পূর্বের লেখাগুলো (এক, দুই, তিন, চার) পড়ে নেয়ার। ধন্যবাদ।
ঠিক বুঝতে পারছি না কি হবে? এরা ইন্ডিয়ারে তেলানোতে এত কি মজা পায়?
ata kono dino hobe na no never because kolkater culture ar amader culture ak na
কালচার বা সংস্কৃতি এক না এটা ঠিক, তবে এভাবে সিনেমা প্রদর্শন চলতে থাকলে এক সময় মনে হবে, কলকাতার সিনেমা না দেখে বাংলাদেশীরা এতদিন ছিল কি ভাবে? ডিসেনসিটাইজেশন এভাবেই হয়।
আমার মনে হয়, পুরো বিষয়টাতে দেশের একটা ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংস করে দেয়াটা সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ। এবঙ সাংস্কৃতিক আগ্রাসনও কম গুরুতর নয়।
আমি শুধু যৌথ বিনিয়োগের পক্ষে যেখানে সব কিছু ৫০/৫০।
এটা কখনোই হতে দেয়া যায় না। যেখানে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ বাজেট এক থেকে দেড় কোটি। এবং এইসব ছবি এখনো সব শ্রেণীর দর্শকদের জন্য নয়। তাই একটা শ্রেণীর দর্শকদের ছবি থেকে সিনেমাকে সবার না বানানোর চিন্তা না করে। চলচ্চিত্র শিল্পের কারিগরি উন্নতী না করে এই সিদ্ধান্ত নিজের পায়ে কুড়াল মারাই কেবল নয়, বরং নিজের হাত নিজেই কেটে ফেলার মতো ঘটনা।