
আজ ১৪ই মার্চ ২০১৮ তারিখে ৭৬ বছর বয়সে পৃথিবীর বর্তমান সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং মৃত্যুবরণ করেছেন। তাকে শ্রদ্ধা জানানোর প্রক্রিয়া চলছে সারা বিশ্বজুড়ে। বিজ্ঞানে তার অবদান এবং তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোকে সকলের সামনে উপস্থিত করা হচ্ছে – এতে করে যারা তার অবদান সম্পর্কে খুব বেশি জানতেন না তাদের জানার সুযোগ তৈরী হয়েছে। স্টিফেন হকিং নিয়ে সিনেমার নামও তাই উঠে আসছে। স্টিফেন হকিং এর ‘হকিং’ হয়ে উঠার গল্প পাওয়া যাবে দুটি চলচ্চিত্রে। এই দুটি চলচ্চিত্র নিয়ে সংক্ষিপ্ত এই পোস্ট।
স্টিফেন হকিং নিয়ে সিনেমা
Hawking (TV Movie 2004)
২০০৪ সালে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন ‘বিবিসি এন্টারটেইনমেন্ট’-এর ব্যানারে মুক্তি পায় টিভির জন্য নির্মিত স্টিফেন হকিং নিয়ে সিনেমা ‘হকিং’। ৯০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই সিনেমায় স্টিফেন হকিং চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় ব্রিটিশ অভিনেতা বেনেডিক্ট কাম্বারব্যাচ। বেনেডিক্ট তখনো ‘শার্লক’ হয়ে উঠতে পারেন নি, হয়তো এ কারণে হকিং চরিত্রে তার অভিনয় সারা বিশ্বে সাড়া ফেলেনি। মূলত সুস্থ্য হকিং, তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন, অসুস্থ্যতার শুরু, প্রেম এবং পিএইচডি – উঠে এসেছে এই গল্পে।
বেনেডিক্ট যথারীতি দুর্দান্ত অভিনয় করে গেছেন এই ছবিতে। তার প্রফেসর, সহকর্মী, বাবা-মা ইত্যাদি যেমন চলচ্চিত্রে স্থান পেয়েছে তেমনি প্রফেসর স্যার ফ্রেড হয়েলও পেয়েছেন। স্যার ফ্রেড ছিলেন স্টেডি স্টেট অর্থ্যাৎ পৃথিবীর কোন শুরু ছিল না এমন মতের অন্যতম সমর্থক, সে হিসেবে হকিং তার বিরোধী দলভূক্ত। এছাড়া আছেন পদার্থবিদ রজার পেনরোজ যার বক্তব্য থেকেই হকিং তার বিগব্যাঙ থিওরির আইডিয়া পেয়েছিলেন। হকিং এর উত্থানের গল্পের পাশাপাশি সাক্ষাতকারের আদলে দুইজন বিজ্ঞানীর বক্তব্যকে তুলে ধরা হয়। তারা হলেন আর্নো এলান পেনজিয়াস এবং রবার্ট উউড্রো উইলসন যারা ১৯৭৮ সালে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। তাদের আবিস্কার স্টিফেন হকিং এর থিওরীর প্রমাণকসরূপ। ইউটিউবে ছয় পর্বে পুরো ছবিটি পাওয়া যায়, দেখে নিতে পারেন।
The Theory of Everything (2014)
স্টিফেন হকিং নিয়ে সিনেমার আরেকটি হলো – দ্য থিওরি অব এভরিথিং। ২০১৪ সালে অস্কারজয়ী পরিচালক জেমস মার্শ নির্মান করেন ‘দ্য থিওরি অব এভরিথিং’ হকিংয়ের প্রথম স্ত্রী জেইন ওয়াইল্ডের স্মৃতিচারণমূলক বই ‘ট্রাভেলিং ইনফিনিটি : মাই লাইফ উইথ স্টিফেন’-এর ওপর ভিত্তি করে নির্মিত এই সিনেমায় স্টিফেনের চরিত্রে অভিনয় করেন ব্রিটিশ অভিনেতা এডি রেডমেইন। আর স্ত্রী জেইন ওয়াইল্ড চরিত্রে অভিনয় করেন ফেলিসিটি জোন্স। হকিংয়ের বাস্তব জীবনের সাথে মিল রেখেই এ সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়। জেইনের সাথে পরিচয়, প্রেম, পরিণয় এবং সর্বশেষ বিচ্ছেদ ইত্যাদি এই সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণভাবে উঠে এলেও বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং এর দিকটি ঢাকা পরে যায়নি। হকিং এর চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয়ের কারণে এডি রেডমেইন অস্কার অর্জনে সফল হয়েছিলেন।
এছাড়াও ২০১৩ সালে হকিং শিরোনামে একটি প্রামাণ্যচিত্র মুক্তি পায় যেখানে স্টিফেন হকিং স্বয়ং তার জীবনের ঘটনাবলী বর্ণনা করেছেন। বিভিন্ন সময়ে তাকে নিয়ে অনেক প্রামাণ্যচিত্রও নির্মিত হয়েছে যা এখানে উল্লেখ করা হল না।
দুটি ট্রেলার দেখলেই বোঝা যাবে দ্য থিওরী অব এভরিথিঙ ছবিটিই দেখার জন্য যথেষ্ট এবং উন্নততর বাছাই। তবে বেনেডিক্ট কাম্বারব্যাচের প্রতি দুর্বলতা থেকে তার অভিনীত ছবিটিও কেউ দেখতে চাইতে পারেন। আমি আপাতত অস্কারজয়ী ছবি ডাউনলোডের চেষ্টা করছি। শুভরাত্রি।