সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের অন্যতম আলোচিত ঘটনা হল শ্যুটিং এর নামে আদমপাচার। মিশন আফ্রিকা নামের ছবির শ্যুটিং করতে গিয়ে কুংফু নায়ক রুবেল, ইমন, নায়িকা অমৃতা এবং কৌতুক অভিনেতা সিদ্দিকসহ বড় একটা দল দক্ষিন আফ্রিকার বিমান বন্দরে আটকা পড়েন। এ বিষয়ে দুই ধরনের রিপোর্ট পাওয়া যায় – এক রিপোর্টে বলা হচ্ছে, শ্যুটিং শেষে ফেরার সময় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আটকে দিয়েছেন, কারণ ত্রিশজনের দল গেলেও ফিরে আসছিলেন দশ জন। অন্য রিপোর্টে বলা হচ্ছে, ঢুকতেই দেয়া হয় নি তাদের, কারণ শ্যুটিং এর অনুমতি ছিল না। এখন ইমন-অমৃতা জানাচ্ছেন, তারা জানতেনই না যে আদমপাচার করা হচ্ছে।
ডাহা মিথ্যা কথা। সিনেমায় যে কাজ করে সে তো অবশ্যই জানে, যেসব সাংবাদিক সাক্ষাতকার নিয়ে প্রকাশ করছেন তারাও জানেন, এমনকি, যারা এফডিসি-র ধারে কাছেও যান নি কোনদিন তাদের অনেকেও জানেন, বিদেশে সিনেমার শ্যুটিং মানেই হল আদম পাচার। সেদিনই আলোচনা করতে গিয়ে জানা গেল – গোলাপি এখন বিলেতে ছবির শ্যুটিং-এও বড় অংকের লোকবল পাচার হয়েছিল।
সিনেমার জগত বড় অদ্ভুত। এফডিসি কেন্দ্রিক সিনেমা নিয়ে কাজ করার পূর্ব শর্ত হল এর সম্পর্কে কোন নেতিবাচক ধারনা পোষন করা যাবে না, নেতিবাচক বলা যাবে না। আরও অদ্ভুত ব্যাপার হল – এখানে যারা কাজ করে বড় বেশি সরল এবং শিশু – তারা ‘কিছুই জানেন না’। ইমন অমৃতা জানেন না -বিদেশে শ্যূটিং এর সময় আদম পাচার হয়, ববি জানেন না – কিভাবে পোস্টারে তার খোলামেলা ছবি প্রকাশিত হয়, আলেকজান্ডার বো জানেন না অশ্লীল দৃশ্যগুলোতে কিভাবে তার উপস্থিতি দেখা যায়। এই না জানা কিন্তু কাজের কথা না, না জানার কারণে আলেকজান্ডার বো দীর্ঘদিন ‘নাই’ থেকে আবার ফিরতে চেষ্টা করছে, না জানার কারণে ইমন অমৃতাও একদিন বিমানবন্দর থেকে লাল দালানে ঢুকে নাই হয়ে যেতে পারেন।
সুতরাং, বাঁচতে হলে জানতে হবে এবং যত দ্রুত জানা যায়, ততই মঙ্গল।