পাল্টে যাওয়া

পাল্টে যাওয়া

‘এই নাজমুল ভাই আপনি না ইদানিং পাল্টে যাচ্ছেন’, খালেদা আপা আমাকে বলে। উনার চোখে কেমন এক উদ্বেগ দেখা যায়।

খালেদা আপা সদা হাস্যময়ী বিপ্লবী নারী। পৃথিবীর কোন কাজকেই তিনি না বলেন না। সাভার থেকে গুলশান এসে গিয়ে অফিস করেন, অফিসের কাজে সারাদিনই বাহিরে থাকেন, রাজ্যের যত লোকের অদ্ভুত আর জটিল সব স্বাস্থ্য সমস্যা আর দুর্যোগের সমাধানের জন্য তিনি শহরের এমাথা ওমাথা ছুটেন কিন্তু হাসিমুখ বন্ধ হয় না কখনো। খালেদা আপার অনুযোগ শুনে আমি হাসি, ‘কি রকম?’

‘এই আপনি আগে এরকম ওরকম করতেন, হাসতেন, মজা করতেন, আমাদের রুমে আসতেন, এখন আসেন না। আমার কিন্তু ভাল লাগে না।’

পাল্টে যাওয়া

আমার হটাৎ করে রুহুল্কার কথা মনে পরে গেল – ‘নাজমুল ভাইকে পাল্টে দিয়েন না কিন্তু’। কি অদ্ভুত কথা, কেউ কি কাউকে পাল্টাতে পারে। সব মানুষ কি সবসময় একই রকম থাকে? রুহুল্কা তো এটা জানেই, তারপরো কি অদ্ভুত অনুরোধ! খালেদা আপাকেই কি সেই কথা বলা যায়? উনিও কি জানেন না?

আমি প্রসঙ্গ পাল্টাতে চাই, উনার হাজবেন্ড অফিসের সবার জন্য দুই কেজি চা পাতা পাঠিয়েছেন সিলেট থেকে, আমি সেগুলোর দরদাম জানতে চাই। বলি, আমি কিন্তু চা খাওয়া আবার বাদ দিছি।

খালেদা আপা আমার কথা শুনিতে চায় না, বলে, ‘আপনি কিন্তু অবশ্যই চা খাবেন, না হলে আমি কিন্তু রাগ করবো। আর শুনেন, আপনি কিন্তু পরিবর্তন হবেন না। পরিবর্তন হলে আপনাকে ভাল লাগে না’। উনার কথা শুনে আমি ‘কি যে বলেন’ ভঙ্গিতে হাসি, সেই হাসির আড়ালে বলি, ‘পরিবর্তনের গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে খালেদা আপা, গন্তব্যে পৌছানো পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া আমি আর কি করতে পারি?’

About দারাশিকো

আমি নাজমুল হাসান দারাশিকো। লেখালিখির প্রতি ভালোবাসা থেকে লিখি। পেশাগত এবং সাংসারিক ব্যস্ততার কারণে অবশ্য এই ভালোবাসা এখন অস্তিত্বের সংকটে, তাই এই ওয়েবসাইটকে বানিয়েছি আমার সিন্দুক। যোগাযোগ - darashiko(at)gmail.com

View all posts by দারাশিকো →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *