মাঝে মাঝে কিছু সময় আসে যখন আপনি অনেক মানুষের মাঝে থেকেও অনেক একা।
সে সময় আপনি স্থির বসে থাকবেন হয়তো কোন কার্পেট বিছানো মেঝেতে, অথবা গাছপালা ভর্তি বারান্দার কোন এক কোনে, কিংবা হয়তো বিছানায় শুয়ে সিলিং এর দিকে শূন্য চেয়ে থাকবেন, আপনার আশে পাশে পৃথিবীর শত ব্যস্ততা – ছোট বোনটা তার ইচ্ছেমত কথা বলে যাচ্ছে, প্রশ্ন করে যাচ্ছে, অথবা আপনার হাত নিয়ে খেলছে, কিংবা মোবাইল, অথবা অন্য কিছু অথচ আপনি ঠিক এই দুনিয়াতে নেই। কারণ আপনার মোবাইলে, অথবা ল্যাপটপে, অথবা এ দুজায়গার কোনটিতেই নয়, আপনার মাথায় সেট করা বিশাল স্টেরিও সেটে বেজে যাচ্ছে এমন কোন এক অসাধারণ রোমান্টিক গান, যা আপনি মন দিয়ে না শুনলেও হারিয়ে যাচ্ছেন গানের সুরে।
বুক ভরা ভালোবাসা
রেখেছি তোমারই জন্য
ও প্রিয় আমার, আমি যে তোমার
তুমি শুধু আমারই জন্য।
সে সময়গুলো অনেক অদ্ভুত, কারণ আপনি তখন পৃথিবীতে থেকেও পৃথিবীর বাইরের কেউ, সম্ভবত স্বর্গে যাত্রী, অথবা অন্য কিছু। ওই সময়টায় আপনার মনে জাগতিক কোন দুশ্চিন্তা থাকবে না, জীবনের ছোট-বড় টার্গেটগুলো অ্যাচিভ করার তাড়া থাকবে না। হয়তো সে সময় আপনি হাতড়ে হাতড়ে জীবনের অসংখ্য ঘটনার মধ্য থেকে কোন সুখের ঘটনা খুজে বের করবেন, অথবা তৃপ্তিদায়ক কোন মুহুর্ত, তারপর সেগুলো রোমন্থন করবেন, ঠান্ডা কোমল আইসক্রিম মুখের ভেতর নিয়ে গলে যাওয়া পর্যন্ত যে অনুভূতি, অপার্থিব আবেশ – সেটা পাবেন ওই সময়ে। অতীতের কোন ঘটনা বাদ দিয়ে অনাগত ভবিষ্যতের কোন দৃশ্যকাব্য রচনাও হতে পারে সেই সময়ে। যেহেতু গানের কথাগুলো রোমান্টিক, আশেপাশের পরিবেশটা শান্ত, এবং আপনি বসে আছেন কার্পেট বিছানো কোন মেঝেতে, তখন স্বাভাবিকভাবে ভবিষ্যত সেই দৃশ্যকল্পগুলোয় নানা ধরনের রং ভেসে বেড়াবে পেঁজা পেঁজা তুলোর মত, অল্প অল্প বাতাসে মেয়েদের চুল উড়বে, ছেলেদের হাফ শার্ট ফুলে ফুলে উঠবে, ভবিষ্যতের ঘটনা কিন্তু তৃপ্তির ছোঁয়া পাওয়া যাবে এমন সময়েই।
এরকম কোন সময়ে অল্প কিছু মানুষ মেঝেতে বিছানো কার্পেটে বসে অলসভাবে স্মৃতি রোমন্থন করে না, করে না কোন ভবিষ্যত স্বপ্ন রচনা, তারা লিখে। লিখতে লিখতেই যদি লম্বা চুলের ছোট বোনটা গোসল করে আসার পর খোঁপা থেকে ভেজা টাওয়েল খুলে বলে – ভাইয়া, আমার চুল আচঁড়ে দিবা? আর ভাইয়াটাও যদি অনভ্যস্ত হাতে চুলে চিরুনী চালানোর সময মনে মনে হিসেব করে – পনেরো বছর, অথবা ষোল, কিংবা সতেরো বছর পরে, তার আম্মার চুলে চিরুনী চালানোর পরে আজ আবারও কোন লম্বা চুলে চিরুনী চালাচ্ছে – তখন কেমন অনুভূতি হয় বলেন তো?
খুব সুখ না, তবে খুব অসুখও নয়, বরং এলোমেলো হলেও কিছু যে লেখা হচ্ছে তার যে তৃপ্তি সেই তৃপ্তি নিয়ে লিখছি – কেমন আছেন আজ?