ছাদ দেখা

ডেস্কটপে বসলে পাশের বিল্ডিং-গুলোর ছাদ দেখা যায়, সেই ছাদের গল্প কয়েকবার বলেছি। আজ আরেকটা বলি।
ছাদের সিড়িঘরে একজন বয়স্ক বুয়া থাকেন। সারাদিন কোন এক বাসায় কাজ করেন, দুপুরে আসেন বিশ্রাম নিতে আর রাতে। ভোর বেলায় দেখলাম বুড়ি নেই, সেখানে আরেকটু কম বয়স্ক এক মহিলা। তার একটি ছেলে, বছর দশ বারো বয়স। সাতটা থেকে ডেস্কে বসে আছি, ছেলেটার মা-ও কাজে বেরিয়েছে তখন। ছোট করে ছাটা চুলের ছেলেটি তারপর থেকে একা।
কখনো সে ছাদে উঠছে, খালি পায়ে এদিক থেকে ওদিকে হাটঁছে। কখনো সিড়ির জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে আশ-পাশ-উপর-নিচ দেখছে।
ছাদের কাপড় শুকানোর দড়িগুলো নিয়ে কিছু সময় টানাটানি করল।
লাল রং এর ড্রামের উপর বসে থাকল কিছুক্ষন।
সিড়িঘরে তার কাপড়গুলি গুছিয়ে রাখল।
ছাদে একটুকরা লাঠি খুজে বের করল এবার। ডাংগুলি খেলল কিছুক্ষন, অথচ তার গুলি নেই, শুধু ডান্ডা।
এবার একটুকরা সুতো বের করেছে কোন জায়গা থেকে।
সেই সুতোটা বেধেছে হাতের ছোট ডান্ডার সাথে, সুতোর অন্য মাথায় বেধেছে ছোট একটি পাথর।
ডান্ডা ধরে সুতোয় বাধা পাথর ঘুরাচ্ছে বন বন করে – ঘোড়ায় চড়ে যুদ্ধযাত্রা যেন!

একাকীত্বের আর অপেক্ষার সময় বড় যন্ত্রনার, এ সময় কাটে না!

About দারাশিকো

আমি নাজমুল হাসান দারাশিকো। লেখালিখির প্রতি ভালোবাসা থেকে লিখি। পেশাগত এবং সাংসারিক ব্যস্ততার কারণে অবশ্য এই ভালোবাসা এখন অস্তিত্বের সংকটে, তাই এই ওয়েবসাইটকে বানিয়েছি আমার সিন্দুক। যোগাযোগ - darashiko(at)gmail.com

View all posts by দারাশিকো →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *