টিনের চালে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে। শব্দে কান ঝালাপালা। হালকা পুতুপুতু বৃষ্টি না, রীতিমত ক্যাটস অ্যান্ড ডগস।
ঈদের ছুটিতে বোরিং ভাবটা কেটে যাচ্ছে। খুবই ভালো লাগছে। এই আনন্দে একটা বৃষ্টির স্ট্যাটাস দিয়া ফেললাম –
কুত্তা বিলাই শ্যাষ। টিনের চালে হাতি ডাইনোসর বৃষ্টি হচ্ছে 🙂 🙂
মনে করার চেষ্টা করছি এই টিনের চালে বৃষ্টি নিয়ে কে কি বলছে। মনে পড়ছে না। টিনের চালের ব্যাপারটা সত্যিই ইন্টারেস্টিং। যখন গরম পড়ে তখনও ঝালাপালা অবস্থা, তবে শব্দে না, তাপে। তবে সেইটা নিয়ে কারও মধ্যে কাব্যি আসে না। আসে বৃষ্টিতে।
বৃষ্টির স্ট্যাটাসে লাইক পড়া শুরু করছে। একটা কমেন্টও পড়ে গেছে – “লোকেশনটা বলেন, তাইলে আরও ফিল আসবে 😛 “
আমি লাইক দিলাম কমেন্টে, রিপ্লাই দিলাম না। লোকেশন বলা যাবে না।
বৃষ্টির স্ট্যাটাস – ২
বৃষ্টির গতি কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এই বৃষ্টিতে ঢাকায় এক হাটু পানি জমে যেত। রিমঝিম বৃষ্টি যে ভাবের উদ্রেকে সাহায্য করে সেটা বুঝতে পারছি। আমার মনে আরও একটা স্ট্যাটাস তৈরী হয়ে যাচ্ছে।
আরেকটা বৃষ্টির স্ট্যাটাস দিলাম –
টিনের চালে ঝমাঝম বৃষ্টি। দারুন রোমান্টিক মুহূর্ত। মিসিং ইউ
এইটা পার্সোনাল স্ট্যাটাস। সমস্যা নাই, যার উদ্দেশ্যে দেয়া সে তো লাইক দিবেই, আরও লাইক পাওয়া যাবে। কিছু রসাল মন্তব্যও পাওয়া যেতে পারে। এমনকি ডেকচির চে ঢাকনা গরম-এর মত স্ট্যাটাসের চেয়ে কমেন্টে বেশী লাইক পড়তে পারে। পড়ুক। কমেন্টের অবস্থান সবসময়ই স্ট্যাটাসের নিচে।
বৃষ্টি থামছে না। জানালা দিয়ে দেখছি পাশের প্লটে পানি জমে যাচ্ছে। পাশের রুমে চলে গেলাম। ওদিকে বিশাল এক পুকুর, পানিতে টইটম্বুর অবস্থা। সহস্র বৃষ্টির সশব্দ ফোটায় তরঙ্গমুখরিত।
ফিরে এলাম নিজের রুমে। ঘরে পা দিয়েই বুঝলাম পায়ের নিচে পানি। কোত্থেকে এল?
টিনের ফুটা দিয়ে পড়ছে। একটা পাতিল এনে দিলাম ফুটার নিচে।
আরও একটা ফুটা নজরে পড়ল। পানি পড়ছে বিছানার উপর। তোশকটা ভাজ করে ফেললাম। একটা বাটি বসালাম।
আরও একটা ফুটা দিয়ে পানি পড়ছে। দেয়াল চুয়ে। ক্যালেন্ডার আর দেয়াল ঘড়িটা সরানো গেল।
কিন্তু ইলেক্ট্রিক সুইচ বোর্ডটা সরানো গেল না। একটা পলিথিন দিয়ে মুড়ে দেয়ার চেষ্টা করলাম। কিছুটা রক্ষা।
আরও দুটো ছিদ্র দিয়ে পানি পড়ছে। দুটো বালতি দিয়ে দিলাম।
অন্য ঘরেও ফুটো আছে, সেই ঘরে কিছু দেয়া হয় নাই। পানি পড়ে ফ্লোর বেয়ে আমার রুমে চলে আসছে।
একটা ন্যাকড়া ফেললাম পানির স্রোতের মুখে। পানিটা মুছে দিলাম।
হচ্ছে না। পাত্র লাগবে আরও দুইটা। বৃষ্টি থামার লক্ষন দেখা যাচ্ছে না। মেজাজটা খারাপ লাগছে। এই সময়ে সবার দাওয়াতে যাওয়ার কি দরকার ছিল। আমিই বা থেকে গেলাম কেন? দ্য গার্ল উইথ দ্য ড্রাগন ট্যাটু- তো পরেও দেখা যেত, তাই না? ডিসগাস্টিং।
বৃষ্টি নিয়ে সর্বশেষ স্ট্যাটাস
আমি রুমে ফিরে এলাম। ৮ টা নোটিফিকেশন ৫ মিনিটে। লাইক আর কমেন্ট নিশ্চয়ই। আপডেট বৃষ্টির স্ট্যাটাস লিখলাম –
পিসড অফ 🙁