ফেসবুক, ফেসবুক এবং ফেসবুক

লার্ণিং ফেসবুক

পাবলিকে স্যরি, লাভিউ বা হেটিউ বলার একটা ইমপ্যাক্ট আছে – এটা ম্যক্সিমাইজ হয়ে যায়। ফেসবুকে জনগণের সামনে দেয়া এ ধরনের ব্যক্তিগত স্ট্যাটাসের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। বলা বাহুল্য, এ ধরনের স্ট্যাটাস নির্দিষ্ট এক বা একাধিক ব্যক্তির উদ্দেশ্যে দেয়া হয়, আমজনতার জন্য না। কিন্তু কখনো কখনো পাবলিকে দেয়া ব্যক্তিগত স্ট্যাটাসে পাবলিকের উড়াধুরা কমেন্ট সেই নির্দিষ্ট একজন মানুষটিকেও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে পারে।

যে কোন ধরনের ব্যক্তিগত স্ট্যাটাস – স্যরি, লাভিউ বা হেটিউ – দেয়ার সময় পাবলিক ভিউ সেটিংস থেকে কাস্টম করে যাকে উদ্দেশ্য করে দিতে চাচ্ছেন তাকে সিলেক্ট করে দিতে পারেন – সে ছাড়া আর কেউ দেখবে না, জানবেও না। প্রয়োজনে তাকে ট্যাগও করে দিতে পারেন সেই স্ট্যাটাসে। নির্দিষ্ট সময় বাদে, যখন সেই মানুষটি লাইক দিয়ে, অথবা অন্য কোনভাবে, স্ট্যাটাস দেখা নিশ্চিত করবে তখন স্ট্যাটাসটি ডিলিট করে দিতে পারেন। অথবা সতর্কতা হিসেবে আপনার টাইমলাইন থেকে হাইড করে দিতে পারেন, পাবলিকের নাকে গন্ধও পৌছাবে না, নাক গলানোর সুযোগ তো থাকবেই না।

অন্যথায়, বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যাওয়ার পর, পাবলিকে শুধু স্যরি না পায়ে ধরলেও সমাধান না হতে পারে। বেস্টোব্লাক!

ফেসবুক ইয়ার এন্ডিং রিভিউ

ফেসবুক ২০১৩ এর শেষকে উদযাপন করার উদ্দেশ্যে নতুন এক ফিচার চালু করেছে – ইয়ার ইন রিভিউ। পুরো বছরের কার্যক্রমকে এক পাতায় নিয়ে এসেছে। ফলে এই বছরে ফেসবুকে ঠিক কি কি কাজ করা হয়েছে তার একটা চিত্র পাওয়া যাচ্ছে। আমার কাজের রিভিউ ফেসবুক কিভাবে করবে – কতটা সফলভাবে করবে সেটা যাচাই করার জন্য নিজের ইয়ার-রিভিউ করে দেখলাম। যা ভেবেছিলাম তাই, ফিফটি পার্সেন্ট সফল হয়েছে ফেসবুক।

১. ২০১৩ তে লেখা স্ট্যাটাসগুলোর মধ্যে অপেক্ষাকৃত জনপ্রিয় স্ট্যাটাসগুলোকে স্থান দেয়া হয়েছে – সম্ভবত লাইক এবং কমেন্টের ভিত্তিতে এদের নির্বাচন করা হয়েছে। অগুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্ট্যাটাসও নির্বাচিতের তালিকায় ঢুকে পড়েছে।

২. ফেসবুক নোট স্থান পেয়েছে। নোটস ফাকা থাকবে – এই বিবেচনায় বোধহয় যা লিখেছিলাম সবগুলাই ঢুকে পড়েছে। বলা বাহুল্য – ওগুলো নির্বাচন করার পরীক্ষায় ফেসবুক ফেল।

৩. ছবি – পুরোটাই হাস্যকর। এমন এমন সব ছবিকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করেছে – আরো একবার ছবিতে ট্যাগ করার স্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার সুযোগ না থাকার জন্য আফসোস করতে হচ্ছে।

৪. যারা ফেসবুককে আরও ডাইভার্সলি ব্যবহার করেন তাদের ইয়ার-রিভিউটা আরও চমৎকার হবে। স্ট্যাটাস-নোটস-ফটোস-রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস-ইম্পরট্যান্ট ইভেন্টস – সব মিলিয়ে জমজমাট হবে আই গেস।

৫. আস্ক ডট এফএম এর যন্ত্রনা শুরু হয়েছিল কিছুদিন আগে, এখনো চলছে কিনা জানি না, কারণ নিউজফেড থেকে হাইড করে দিয়েছি। আগামী ক’দিন ইয়ার রিভিউ যন্ত্রনা সহ্য করতে হবে ঢের বুঝতে পারছি, আপনারা বুঝতে না পারলে এই স্ট্যাটাস পড়ে সতর্ক হোন।

৬. এই বছরে এটাই শেষ স্ট্যাটাস নয়, সুতরাং, নতুন স্ট্যাটাস প্রসবের আগ পর্যন্ত প্রসূত স্ট্যাটাসগুলোর প্রতি আদর যত্ন প্রদর্শন করতে পারেন

https://www.facebook.com/yearinreview/darashiko

ফেসবুক যখন সোনার ডিম পারা হাঁস

এক দরিদ্র লোক, তার নাম হাসু। তার ছিল এক হাঁস। সেই হাঁস দৈনিক একটা করে সোনার ডিম দিত। সেই ডিম বিক্রি করে লোকটা আস্তে আস্তে দারিদ্র্য অবস্থা থেকে উঠে আসতে লাগল। প্রথম প্রথম বাজারের মনু মিয়ার দোকানে হাঁসের ডিমটি বিক্রি করতো। মনু মিয়ার দোকানে কাস্টমাররা আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখতো সেই একমাত্র ডিমটির জন্য। এই দেখে মনু মিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বি সুরুজ মিয়া হাসু মিয়ার বাড়িতে বেড়াতে আসলো। তারপর ইনিয়ে বিনিয়ে বলল হাসু মিয়া যদি ডিমটা সুরুজ মিয়ারে দেয়, তাহলে সে এক পার্সেন্ট বেশী করে দাম দিতে পারে। হাসু মিয়া রাজী হল, মনু মিয়ার বদলে ডিম যেতে লাগল সুরুজ মিয়ার দোকানে।

তারপর একদিন সুরুজ মিয়া একজন লোককে নিয়ে এল হাসু মিয়ার বাড়ি। সে হাঁসটা দেখতে চায়। হাসু হাঁস দেখালো। পরের দিন দুটো লোক এল দেখতে। হাসু তাদেরও দেখালো। তৃতীয় দিন এল পাঁচটা লোক। হাসু তাদেরও দেখালো। চতুর্থদিন হাসু প্রতি দর্শনার্থীর জন্য দশ টাকার টিকেট তৈরী করলো। তারপর সেই টিকেট বেচা টাকা দিয়ে একটা সুন্দর হাঁসের ঘর তৈরী করল। কিন্তু তারপরও নানা সমস্যা হতে লাগল। এত লোককে জায়গা দেয়া যাচ্ছিল না। তাই হাসু একদিন তার ফার্মের মালিকানা পাবলিক করে দিল। শেয়ারহোল্ডারদের টাকায় বিশাল এলাকা জুড়ে তার হাসের বাড়ি বানালো, দর্শনার্থীদের প্রবেশের জন্য গেট তৈরী করল, টিকেট কাউন্টার বানালো। দলে দলে দর্শনার্থীদের সংখ্যা বাড়তে লাগল।

কিন্তু শেয়ারহোল্ডাররা সন্তুষ্ট হতে পারছিল না। তারা বললো, আরও টাকা চাই। ইনভেস্টমেন্টের তুলনায় রিটার্ন কম হয়ে যাচ্ছে। নানা রকম পরামর্শ আসতে লাগল। শেষ পর্যন্ত কৃত্রিম উপায়ে সোনার ডিম পারা হাঁসের ক্লোন তৈরী করার সিদ্ধান্ত নিল হাসু। কিন্তু আরও সোনার ডিম পারা হাঁস তৈরীর জন্য এই হাসের মধ্যে কিছু পরিবর্তন আনার দরকার ছিল। হাসু সাহস করে তার সোনার ডিম পারা হাঁসকে নিয়ে থিয়েটার টেবিলে গেল।

হাসুর গল্প এখানেই শেষ। কারণ পাশের গ্রামের মুক্তারের মুরগীর বাথরুমের সাথে ডায়মন্ড পাওয়া যাচ্ছিল। দর্শক দলে দলে সেদিকে চলে যাচ্ছিল। মুক্তারের ডায়মন্ড মুর্গীর গল্প আরেকদিন বলা যাবে।

খবর: আয় বাড়াতে আর বিজ্ঞাপনের জন্য বেশি জায়গা বের করতে ফেসবুকের টাইমলাইন আবারও নতুন করে সাজাতে পারে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি টাইমলাইনে পরিবর্তন আনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ফেসবুক। জানা গেছে, ব্যবহারকারীর কভার ফটো, নেভিগেশন পদ্ধতিসহ বেশ কিছু ফিচারে পরিবর্তন আনছে ফেসবুক। এ প্রসঙ্গে ফেসবুকের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, নতুন টাইমলাইন ফিচারটি পরীক্ষা করে দেখছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। নতুন ফেসবুক টাইমলাইনে ভিন্নরূপে আবারও ফিরে আসছে ট্যাব। এ ছাড়া কভার ফটোর সঙ্গে থাকবে ব্যবহারকারীর পরিচয় ও প্রোফাইল ছবি। প্রোফাইলের ওপরে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা দেখানো হবে।

ফেসবুক ব্যবহার না করলেও ফেসবুকের কোনো ক্ষতি নেই। কারণ, যাঁরা ফেসবুক ব্যবহার ছেড়ে দেবেন, তাঁদের কাছ থেকেও অর্থ আয় করার পথ বের করেছে ফেসবুক। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে থার্ড পার্টির অ্যাপ্লিকেশন প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন কৌশল পরীক্ষা করেছে ফেসবুক। ব্যবহারকারীর তথ্যের বিনিময়ে অর্থ আয় করার কৌশল নিতে পারে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

২০১৩ সালের মার্চ থেকে ফেসবুকে ভিডিও বিজ্ঞাপন চালু হতে পারে। ফেসবুকের নিউজ ফিডে ব্যবহারকারী না চাইলেও দেখতেই হবে ১৫ সেকেন্ডের বাধ্যতামূলক বিজ্ঞাপন। (সূত্র: প্রথম আলো)

About দারাশিকো

আমি নাজমুল হাসান দারাশিকো। লেখালিখির প্রতি ভালোবাসা থেকে লিখি। পেশাগত এবং সাংসারিক ব্যস্ততার কারণে অবশ্য এই ভালোবাসা এখন অস্তিত্বের সংকটে, তাই এই ওয়েবসাইটকে বানিয়েছি আমার সিন্দুক। যোগাযোগ - darashiko(at)gmail.com

View all posts by দারাশিকো →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *