ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত সিনেমা ‘গহীনে শব্দ’ বিভিন্ন উৎসবে প্রদর্শিত হচ্ছে – এমন সংবাদ আমরা বিভিন্ন সময়ে জেনেছি। পরিচালক খালিদ মাহমুদ মিঠুর নামও যথেষ্ঠ আগ্রহ জাগানিয়া। মিঠু নির্মিত সিনেমা দেখার মতো হবে – এমন একটা ধারণা তৈরী হয়ে গিয়েছিল। সবশেষে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১০-এ গহীনে শব্দ সেরা সিনেমা হিসেবে এবং একই সাথে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ‘১০০টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তি’ ঘোষনার মধ্যে সেই ধারণাটাই যেন পোক্ত হলো। কিন্তু আদতে সেই ধারণা কতটা প্রস্ফুটিত হয়েছিলো ‘গহীনে শব্দ’ সিনেমায়!
উচ্চবিত্ত এবং বিত্তহীন – এই দুই শ্রেণীকে কেন্দ্র করে একই গল্প ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে বর্ণনা করা হয়েছে এই সিনেমায়। ধনী পরিবারে আছে নিলয় (ইমন), তার বাবা, মা, দাদু, বড় ভাই এবং বয়সের বিস্তর ব্যবধানের ছোট বোন। ইমনের বড় ভাইয়ের এনগেজমেন্ট সূত্রে আরও যোগ হয় ভাবী ও ভাবীর বাবা-মা। অন্যদিকে অত্যন্ত দরিদ্র কিন্তু সাজানো গোছানো ভিক্ষুক পরিবারে সদস্য সংখ্যা মাত্র তিনজন। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা বাবা, মা এবং তাদের একমাত্র সন্তান স্বপ্ন (কুসুম শিকদার). নিলয় ও স্বপ্ন দুই পরিবারের মধ্যে সেতু বন্ধনকারী সহপাঠি ও প্রেমিক-প্রেমিকা।
গহীনে শব্দ-দূষণ
আপাতভাবে সরল কাহিনী মনে হলেও মিঠু বাংলাদেশের ইতিহাস আর জনগোষ্ঠীকে বিশাল ক্যানভাসে বন্দী করেছেন। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, উচ্চবিত্ত-বিত্তহীনের বিভেদ, মানুষের অমানবিক পাঠ, বিভেদ তৈরিকারী সামাজিক মূল্যবোধ ইত্যাদিকে ঘিরে মিঠুর ‘গহীনে শব্দ’. দুর্বল কাহিনী, ইতিহাস বিকৃতি, অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিন্যাস, অতি এবং অপরিণত অভিনয় কিন্তু প্রচন্ড শিক্ষামূলক ও চেতনা জাগানিয়া একটি সিনেমা।
মিঠু সমাজের এমন একটা অংশের জীবন যাত্রা, তাদের সুখ দু:খ, স্বপ্ন-আকাঙ্খা গহীনে শব্দ সিনেমায় তুলে ধরতে চেয়েছেন যারা একই সাথে বাস্তবে ও সিনেমায় বঞ্চিত ও অবহেলিত। এরা ভিক্ষুক সম্প্রদায়। আরও স্পষ্ট করে বললে পঙ্গু ভিক্ষুক সম্প্রদায় বিশেষতঃ যারা দলবেধে সুরে সুরে ভিক্ষাবৃত্তির সাথে জড়িত- এমনই একটি দলের নেতা হল নুরা ভিক্ষুক (মাসুম আজিজ)।
এই ভিক্ষুক দলের বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে সমাজের একটি বক্তব্যধর্মী চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এই সিনেমায়। কিশোর বয়সে যখন তার ঠোটের নিচে পাতলা গোফের রেখা সেই সময় অসীম সাহস বুকে নিয়ে দেশকে বিজয় এনে দেয়ার যুদ্ধে গিয়েছিলেন নুরা ভিক্ষুক, পাকিস্তানিদের হাতে বন্দী হন, নির্যাতিত হন, পরবর্তীতে ডাকাতের হামলায় পঙ্গুত্ব বরন করেন। কিন্তু তার নিজের জীবন যুদ্ধ এখনো চলমান। প্রশ্ন হল, রাজাকাররা কি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে যাওয়ার পরও তারা ডাকাতি করে বেড়াচ্ছিল এবং তাদের অত্যাচারে মুক্তিযোদ্ধারা নির্যাতিত কিংবা পঙ্গুত্ব বরণ করেছিল? চিন্তা ভাবনার অবকাশ আছে।
নুরা ভিক্ষুককে যখন সতীর্থ ভিক্ষুক প্রশ্ন করে – ‘এই বাংলাদেশ তোমাকে কি দিল?’ তিনি গভীর আবেগে সে জানান, ‘সবচে বড় যেই জিনিসটা সেইটা দিছে – ভাষা, বাংলা ভাষা’. নতুন এই ইতিহাসবোধে দর্শককে অবাক হতে হয়। কেউ কেউ এই সংলাপের আকস্মিকতায় স্তদ্ধ হতে পারেন। ১৯৫৬ সালে রাষ্ট্রভাষা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হয় বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতির মাধ্যমে। সেই ধারাবাহিকতায় স্বাধিকার আন্দোলনে রূপ নিয়ে ১৯৭১-এ বাংলাদেশের সৃষ্টি।
বাংলাদেশ তৈরীর আগেই বাংলা ভাষার অধিকার অর্জিত হয়েছিল, তবে বাংলাদেশ কিভাবে বাংলা ভাষা দিতে পারে? শুধু তাই নয়, এটা বলার মধ্য দিয়ে একাত্তরের সহিংসরূপ ও সিনেমায় দেখানো সামাজিক বৈষম্য কিছুটা যেন আড়ালে পড়ে যায়। আমরা একটু নরম ভাষায় বলতে পারি, হয়তো পরিচালক এই সংলাপের মাধ্যমে বাংলাদেশ সৃষ্টিতে উর্দুভাষাকে দেশ থেকে দূরীকরণের মাধ্যমে একচ্ছত্র বাংলা ভাষা ব্যবহারের অধিকারকে এখানে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যেহেতু এই সিনেমার স্বর গড়পরতা শিক্ষাদানের- তাই এটা ভুল শিক্ষার প্রসার ঘটাতে পারে বৈকি!
গহীনে শব্দ সিনেমায় ধনী পরিবারের প্রবীনতম ব্যক্তি নব্বই বছরের বৃদ্ধ বিখ্যাত ফটোগ্রাফার রশিদ তালুকদার চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফুর রহমান। ভাষা আন্দোলনের এই স্বাক্ষী সাত-আট বছর বয়সী নাতনীকে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বলছেন এইভাবে- ‘ওরা আমাদের বলল আমাদের বাংলা ভাষায় কথা বলতে দেবে না, উর্দুতে কথা বলতে হবে’ – কিন্তু শব্দের মারপ্যাচে এদিকে যে ইতিহাস ভুলভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে! ভাষা আন্দোলনের পটভূমি ছিল উর্দুকে ‘রাষ্ট্রভাষা’ ঘোষনার প্রস্তাব।
রাষ্ট্রভাষা মানে কিন্তু সবাইকে উর্দুতে কথা বলতে হবে তা নয়, বরং অফিস-আদালতের ভাষা হবে উর্দু, এমনটিই জানি। নাতনীর মাধ্যমে সিনেমার দর্শকগোষ্ঠীকে ভাষা আন্দোলনেই ইতিহাসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা অবশ্যই অভিনন্দনযোগ্য, কিন্তু সেখানে মূখ্য কারণ হিসেবে অধিকাংশ মানুষের ভাষাকে উপেক্ষা করে ক্ষুদ্র সংখ্যক জনগোষ্ঠীর ভাষাকে প্রাধান্য দেয়াকে যৌক্তিক কারণ হিসেবে উপস্থাপন করা উচিত ছিল না?
গহীনে শব্দ সিনেমার অন্য এক দৃশ্যে তিনি বর্ণনা করছেন- কিভাবে একটি মিছিলের নেতৃত্বে হঠাৎ একটি টোকাই ছেলে এগিয়ে আসে। তিনি দৌড়ে গিয়ে দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দী করেন কিন্তু নিষ্ঠুর পাকিস্তানিদের গুলিতে ছেলেটি শহীদ হয়ে যায় – তিনি তার বর্ণনা করেন, ব্যাকগ্রাউন্ডে আমরা করুন সুরে শুনতে পাই – আমার ভায়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী …. টোকাই ছেলেটির অকাল শাহাদাতের কষ্টে ডুবে গিয়ে নাতনী বলে উঠে – দাদা, আই হেট পাকিস্তানি সোলজারস!
যে ছবিটিকে স্বাক্ষী বানানো হলো সেটি দেখা মাত্রই দারুন আবেগী এই দৃশ্যটি খেলো হয়ে যায়, কারণ ছবিটি সদ্যপ্রয়াত রশীদ তালুকদারের তোলা বিখ্যাত একটি ছবি। এটি বায়ান্ন নয়, উনসত্তরের অসহযোগ আন্দোলনের সময় তোলা। ইতিহাস অসচেতন কোন দর্শক আবহে ব্যবহার করা একুশে ফেব্রুয়ারী স্মরনে আবদুল গাফফার চৌধুরীর গানটিকে হয়তো খেয়াল করবেন কিন্তু এই ইতিহাস বিকৃতি হয়তো খুব সহজেই চোখ এড়িয়ে যাবে। ইংরেজি অ্যাকসেন্টে বাংলা বলা নাতনী যখন গভীর ঘৃণা নিয়ে বলে – আই হেট পাকিস্তানি সোলজারস, তখন কি তিনি চুপ থাকবেন? যে উর্দু থেকে মুক্তির জন্য আমাদের ভাইয়েরা রক্ত দিয়ে গেল, তার বদলে কি তারা ঘেন্না প্রকাশের জন্য ইংরেজি ভাষা চেয়েছিল?
পরিচালক যদি বায়ান্ন-মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের এই রক্ত ঝরানো পর্বগুলোর সাথে একাত্ম হতেন তাহলে নাতনী এই ইংরেজ একসেন্টকে অন্যভাবে তুলে ধরতে পারতেন। শিক্ষা দেয়ার একটা দারুন জিনিস হয় তিনি মিস করলেন নয়তো এই ভাষাভঙ্গিতে তার আপত্তি নাই। রশীদ তালুকদারের মতো অসাধারণ চরিত্রকে গহীনে শব্দ সিনেমায় অসহায়ের মতো চার দেয়ালের খোলসে বন্দী করে অবিচার করা হয়েছে- সেটা বলতে হয়। আমরা জানি না তার পরিবারকে যেভাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে তা কতটুকু সত্য।
গহীনে শব্দ সিনেমার একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল এর ওপেনিং সিকোয়েন্স। টুকরো টুকরো বিভিন্ন দৃশ্যের মধ্য দিয়ে আমরা বুঝতে পারি অনেকগুলো মানুষ মিলে নতুন একটি বছরকে বরণ করে নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। চৈত্র সংক্রান্তির মেলা থেকে শুরু করে পহেলা বৈশাখের জন্য সাংস্কৃতিক প্রস্তুতির এই দৃশ্যের মাধ্যমেই সিনেমার অন্যতম প্রধান চরিত্র স্বপ্ন ও নিলয়কে উপস্থাপন করা হয়। চৈত্র সংক্রান্তি ও পয়লা বৈশাখের এই দৃশ্যায়ন আসলে স্মরণ রাখার মতো। বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রার ভাষ্কর্য তৈরিতে ব্যস্ত স্বপ্ন ও নিলয়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থী হিসেবে মনে হলেও সিনেমার শেষাংশে দেখা গেল তারা ব্যবসায় প্রশাসনের কোন এক বিষয়ে পড়ছেন।
গহীনে শব্দ সিনেমায় সংগীত শিল্পী হায়দার হুসেন এর উপস্থিতি বেশ চমকপূর্ণ। তার ‘ভিক্ষা চাই মূল্যবোধ গানটি’ এই সমাজের দিকে আঙ্গুল তুলে সিনেমার শিক্ষামূলক সমাপ্তিকে নির্দেশ করে। তাকে উপস্থাপনের জন্য মিঠু প্রশংসা পাবেন। আরও প্রশংসা পাবেন বিভিন্ন দৃশ্যের জন্য, যেমন- দড়ি ছিড়ে যাওয়া ছাগলের পেছনে পঙ্গু ভিন্ন নুরা ভিক্ষুকের দৌড়, জুমাবারের বায়তুল মোকাররমের সামনে নামাজ ও ভিক্ষাবৃত্তি, ভিক্ষুকদের জীবনের বিভিন্ন কর্মকান্ড ইত্যাদির শৈল্পিক উপস্থাপনের জন্য। কিন্তু কেন জানি এই গহীনে শব্দ সিনেমার পাত্র-পাত্রীদের (নুরা পাগলা, রশীদ তালুকদার ছাড়া) কাছ থেকে বেশি কিছু পাবার আশা জাগে নাই। সেটা কাহিনীর দুর্বলতা নাকি তাদের উপস্থিতিই কোন আগ্রহ উদ্দীপক না। মূল্যবান প্রশ্ন বটে!
নিলয়কে স্বপ্ন বলেছিল – ‘আমার জীবনের গহীনে প্রবেশ করে দেখো’. পরিচালক দর্শককে হ্য়তো দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনের গহীনে নিয়ে যেতে চেয়েছেন। দেখাতে চেয়েছেন সমাজের বঞ্চিত মানুষের দু:খ-দুর্দশা, বঞ্চনা, সংগ্রাম। দেখাতে চেয়েছেন শিক্ষিত হয়েও আমরা প্রচলিত সামাজিক মূল্যবোধের কাছে বন্দী। বোঝাতে চেয়েছেন – সমাজ পাল্টাতে চাই সাহস। কিন্তু এত কিছুকে শুধু একসুতোয় বাধলেই চলে না। চাই সুন্দর ও সামঞ্জস্যপূর্ণ বিন্যাস। অন্যথায় গহীনে যে শব্দ দানা বাধে, তাতে সংগীত হয় না, দূষণ তৈরী হয়। সবশেষে একজন নবীন চিত্রপরিচালকের জন্য থাকল আমাদের শুভ কামনা।
+++++++++++++++++++++++++
ওয়াহিদ সুজন সিনেমাকে দেখেন ভিন্ন দৃষ্টিতে। তিনি সিনেমার মধ্যেকার দর্শনকে খুজে বের করে আনেন, তুলে ধরেন পাঠকের সামনে। তার শব্দচয়ন এবং গাঁথুনি আমাকে মুগ্ধ করে, কখনো কখনো হতাশায়ও বিদ্ধ করে। এই লেখাটি সম্পাদনা করে দেয়ার জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা। ধন্যবাদ ওয়াহিদ সুজন 🙂
সিনেমার প্লট টা ভাল ছিলো।
দারুন কিছু করার সুযোগ ছিল এটা নিয়ে।
কিন্তু দেখতে দেখতে বিরক্তি ধরে গিয়েছিলো এর দূর্বল মেকিং আর ডিরেকশনের কারনে।
অভিনয় কখনো চড়া দাগে উঠেছে কখনো অতিরিক্ত স্লথ…
এই সিনেমা দেখার পর মেজাজটা গরম হয়ে ছিল টানা দুইদিন।
চরম আকারে একটা বিরক্তিকর ও ফালতু জিনিস।
সিনেমাটা দর্শককে সবকিছু শিখাইয়া দিতে চায়, জোর কইরা, চাইপা ধইরা। যে লোক শত শত পঙ্গু ভিক্ষুকদের দিয়া ব্যবসা করে, সেই শিখাইতে চায়, ‘দেশটা চামচামিতে ভইরা গেছে, কবে যে এ দেশ থেকে চামচামি দূর হইব?’
রশিদ তালুকদারকে নিয়া আপনার পোস্ট পড়েছিলাম আগে। সিনেমা দেখার পর খুবই কষ্ট লেগেছে। তার পরিবারের ঘটনাটা যদি সত্য না হয়ে থাকে, তবে তার নামে এরকম বিকৃত চিত্রায়ন ও উপস্থাপন রীতিমত মানহানির পর্যায়ে পরে।
দারাশিকো’র ব্লগে বাংলা সিনেমা নিয়া সমালোচনার খুব একটা সুযোগ পাওয়া যায় না। এই পোস্ট দেখে ভাল লাগছে।
(একটা তথ্য একটু চেক করে নিবেন। নুরা ভিক্ষুক পঙ্গু হয় যুদ্ধের পর তার বাড়িতে ঢাকাইত আসে, তাদের হামলায়। নুরার ভাষায় সেই ঢাকাইতের দলও রাজাকার আছিল)
সত্যি কথা বলি – এই সিনেমা আমি পুরা দেখি নাই। এই সিনেমা পুরা দেখার মতো ধৈর্য শক্তি ছিলোনা। তবে যেটুকু দেখছিলাম সেটুকু দেখেই মনে হইছিল – কেয়ামত আসন্ন, নাইলে এই সিনেমা পুরষ্কার পায় কেম্নে!! 🙁
Ottonto bakwas movie,ai chobi ato gula award pai kemne shudu social message thaklei je valo movie hoi na aita mithu shaheb re keu bujhan..,.ami vabi sagor shaheber ki lobing ai movie diyai koto koto award bogol daba korchen