আজ ২৩শে এপ্রিল, বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যাজিত রায়ের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী।
জীবদ্দশায় সত্যাজিত মোট ৩৬ টি মুভি বানিয়েছিলেন, ছোট বড় মিলিয়ে। এর মাঝে তার ছ’টি ডকুমেন্টারীও আছে যার একটি তার বাবা সুকুমার রায় এবং অন্যটি রবি ঠাকুরকে নিয়ে। এই ৩৬টি মুভির সাথে কোন খবরাখবর না রাখলেও বাঙ্গালী মাত্র তার ‘পথের পাচালি’ সিনেমার নামটি জানেন। যারা অনেক নাম এবং খ্যাতি শুনে মুভিটি দেখতে বসেন, তাদের অনেকেই হতাশ হন, বিশেষ করে আমাদের মতো মানুষরা যারা হলিউড এবং বলিউডের সিনেমার মারামারি আর গতিতে ভীষণভাবে আসক্ত। কি কারনে এই সিনেমার এতো নাম ডাক, সে নিয়ে বিশাল এক প্রশ্নবোধক চিহ্ন নিজেকে ঘিরে রাখে।
(ভাবুন তো,এই বৃদ্ধা ৮০ বছর বয়সেও কি দারুন অভিনেতা ছিলেন!)
নিও রিয়েলিজম, সিনেমা ভেরিতে আর ডাইরেক্ট সিনেমা আন্দোলন গুলো দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত সত্যাজিতের সিনেমাগুলোও তাই নিও রিয়েলিজম ধাচের। বাস্তবতার নির্মম রূপ, পরিবারকেন্দ্রিক কাহিনী আর অপেশাদার অভিনেতাদের নিয়ে কাজ করেছেন সত্যাজিত। জানা যায়, ভিত্তোরিও ডি সিকার ‘দ্যা বাইসাইকেল থিফ’ দেখার পর ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত হন তিনি এবং সিনেমা বানানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হন। সার্গেই আইজেনস্টাইনের অমর সৃষ্টি ‘ব্যাটলশীপ পটেমকিন’ মুভিটি বিভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে অনেকবার দেখেছিলেন সত্যাজিত, উদ্দেশ্য সিনেমাটির খুটিনাটি সকল বিষয় আয়ত্ত্ব করা।
পথের পাচালি (The song of the little road) মুভিটি কিন্তু তৈরী করা মোটেও সহজ ছিল না। ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় বিভুতিভুষনের কাহিনী নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেন। জমানো অর্থ, ধার করা টাকা পয়সা আর গিন্নির গয়নাগাটি বন্ধক রাখা পয়সা নিয়ে শ্যূটিং শুরু করলেও শেষ করতে পারেন নি। মাঝপথে এসে অর্থ সংকটে কাজ বন্ধ রাখতে হয়। মুভির পরবর্তী কাজ শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের জন্য তিনি দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকেন। অর্ধেক নির্মিত মুভি দেখিয়ে সরকারী অনুদান লাভ করেন, জানা যায়, সে সময় সরকারী কর্মকর্তারা এই টাকা পুরোপুরি জলে ফেলার সিদ্ধান্তই নিয়েছিলেন। তিন বছর পরে কাজ শুরু করলেন আবার সত্যাজিত। যদিও তিন বছর অনেক সময়, তারপরও কপালগুনে বেশ কিছু সহযোগিতা পেয়েছিলেন সত্যাজিত। দুর্গার বয়স বাড়লেও কিশোরী থেকে তরুনীতে রূপান্তরিত হয়নি, মারা যাননি থুড়থুড়ে বৃদ্ধা ইন্দিরা ঠাকুরন ও। সাফল্যের সাথে কাজ শেষ করেন সত্যাজিত। দেশে বাজারে চলেনি মুভিটি, বরং দেশের বাইরে আলোচিত হবার পরে পুনরায় দেশের লোকজন দেখতে শুরু করেন এই মুভিটি।
(দুর্গা নয় বরং অপুই হয়ে উঠে পথের পাচালির নায়ক)
সিনেমার ভাষার এক অব্যার্থ প্রয়োগ ঘটিয়েছিলেন সত্যাজিত তার পথের পাচালিতে। ডিটেলসের অপূর্ব ব্যবহার দর্শক এবং সমালোচকদের মোহিত করে। ঝড়ের পরে ব্যাঙের উল্টো মৃতদেহ, কাশবনের সাদার মাঝে রেলগাড়ির কালো ধোয়ায় সাদা কালোর দ্বন্দ্ব ইত্যাদি দিয়ে সত্যাজিত অনেক কিছু বলেছেন, বলতে চেয়েছেন। রেলগাড়ি দেখার জন্য দুর্গা আর অপুর দৌড় এবং সেখানে দুর্গার পিছিয়ে পড়াকে তার মৃত্যুর পূর্ব লক্ষন হিসেবে দেখিয়েছেন সমালোচকরা। আবার প্রচন্ড বৃষ্টিতে ভাই বোনের জড়িয়ে ধরাকে দুর্গার যৌবনের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেও দেখেছেন তারা।
আবার, হরিহর জীবিকার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছে বেনারসে। সেখান থেকে চিঠি আসে এখনও কোন ব্যাবস্থা করা যায়নি। তাহলে তার খাওয়া জুটে কিভাবে? উত্তরটা দেখিয়েছেন অন্যভাবে, দুর্গাদের বাসায় ভিক্ষা চাইতে আসা ভিক্ষুক
onek kisu janlam boss…thanx 🙂
🙂
আপনার উপর আমি ভয়াবহ কৃতজ্ঞ … সব পোস্টে একটা করে কমেন্ট আছেই 😀
onak prosnar jobab paoya galo,dhonnobad
🙂
Age jana silo na emon tottho valo laglo.
স্বাগতম দারাশিকো’র ব্লগে। আবারও আসার আমন্ত্রন থাকল 🙂