তার আসল নাম হায়দার, মোহাম্মদ জুলফিকার হায়দার। অবশ্য এই নামে তাকে চেনার কথা না, ‘হাঁটা বাবা’ বললে অনেকে চিনে থাকবেন। ঢাকার ধানমন্ডির আশেপাশের রাস্তায় দাড়ি-গোঁফের জঙ্গল নিয়ে অত্যন্ত ময়লা পোশাকে খাটো করে যে লোকটাকে পেছনে মানুষের দীর্ঘ সারি নিয়ে ধীরপদে চলতে দেখেছেন – উনিই ‘হাঁটা বাবা’। কত বছর ধরে হাঁটছেন জানি না, তবে ভক্ত আমিনুল তার পেছনে হেঁটেছেন প্রায় ষোল বছর। হাঁটা বাবার পেছনে সারি বেঁধে হাটার এই সুযোগ ফুরিয়েছে আমিনুলের – গতকালকে। জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে মারা গেছেন ‘হাঁটা বাবা’, বয়স হয়েছিল ৯৪/৯৫ বছর।
‘হাঁটা বাবা’র মৃত্যুতে বড় এক সমস্যা তৈরী হয়েছে। যেই বাবা হাঁটতেন, তিনি মৃত্যুতে স্থির হয়েছেন – সুতরাং পেছনে যে ভক্তকূল হাঁটতেন, তাদেরও স্থিরতার প্রয়োজন, সে কারণে একটি মাজারও প্রয়োজন। ‘হাঁটা বাবা’র কবর অবশ্য গাড়িতে হওয়াই যুক্তিযুক্ত, কিন্তু ভক্তবৃন্দ সে চিন্তা করেন নি বোধহয়। ফলে মোহাম্মদপুরে কবরের স্থান নির্ধারনের জন্য শেষ পর্যন্ত র্যাব-দাঙ্গাপুলিশ-প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হয়েছে। মাঠের মাঝখানে কবর হবে, নাকি দেয়ালের দিকে – এই সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ – কারণ পরবর্তীতে মাজার কত বড় হবে – সেই সিদ্ধান্ত এখনই নেয়া প্রয়োজন।
অন্যথায়, গুলিস্তানের মাজার যেমন মাইনকার চিপায় পড়েছে, ‘হাঁটা বাবা’র মাজারও সেই চিপায় পড়তে পারে। তবে আশার কথা হচ্ছে – সরকার যেভাবে গুলিস্তানের মাজারকে সম্প্রসারণের সুযোগ করে দিয়েছে, হাঁটা বাবার কবর মাঠের মাঝে হোক বা চিপায়, সম্প্রসারণের জন্য সরকারের উপর নির্ভর করাই ভালো হবে।
যারা ‘হাঁটা বাবা’র ভক্ত হতে চান, তারা এখনই উদ্যোগ নিন। এমনিতেই আমিনুলের চেয়ে ষোল বছর পিছিয়ে আছেন, আরও দেরী করলে কত লক্ষ লোকের চেয়ে পিছিয়ে থাকবেন কে জানে!
(ছবি: বাংলানিউজ২৪)