বাচ্চাবেলায় ভারত আর বার্মা সম্পর্কে দুইটা কথা শুনতাম।
এক, বাংআলাদেশ আজকে যা করে ভারত আগামীকালকে তা চিন্তা করে।
দুই, বাংলাদেম আর্মি যদি সকালের ব্রেকফাস্ট খেতে খেতে চিন্তা করে – বার্মা দখল করবে, তাহলে দুপুরের লাঞ্চ বার্মাতেই করতে পারবে।
দুপুরের লাঞ্চ করতে করতে আমি ভারত দখলের প্ল্যান করলাম।
ভারত দখল করতে হলে আপনার কিছু ভারতীয় মানুষ দরকার। এই মানুষগুলোর কিছু অংশ সজ্ঞানে আর কিছু মানুষ অজ্ঞানে বাংলাদেশের জন্য কাজ করবে। সজ্ঞানে যারা কাজ করবে তারা একটু এলিট শ্রেনী হতে হবে – বিভিন্ন পলিসি মেকিং অবস্থানে তাদের থাকতে হবে – যেমন ফিনান্স, কালচার, বিজনেস ইত্যাদি ইত্যাদি। আর যারা অজ্ঞানে কাজ করবে তারা মাস পিপল হলেই চলবে – এদের বোধশক্তি তুলনামূলক ভাবে কম, কিন্তু তারা সেটা টের পায় না, সুতরাং সামান্য ম্যানিপুলেট করতে পারলেই এরা ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে।
সজ্ঞান দল তাদের কর্মক্ষেত্রে একটু একটু করে বাংলাদেশকে সুবিধা দেয়ার ব্যবস্থা করবে। বাংলাদেশের ব্যবসায়, সংস্কৃতি ইত্যাদি ঢুকিয়ে দেবে একটু একটু করে। এক সংস্কৃতি যদি ঢুকিয়ে দেয়া যায়, তাহলে সুরসুর করে বাকিগুলোও ঢুকে পড়বে। একটা উদাহরণ দেই। ধরা যাক, বাংলাদেশী চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি দিয়ে ভারতীয় ইন্ডাস্ট্রি দখল করাতে হবে, তাহলে প্রথমে ভারতীয়দের ইন্ডাস্ট্রিতে বিনিয়োগ বন্ধ রাখতে হবে কোন উপায়ে, তারপর বাংলাদেশী বিভিন্ন কোম্পানিকে সুযোগ করে দিতে হবে ভারতে সিনেমা নির্মান, হল নির্মান ইত্যাদি কাজগুলো করার।
অবশ্য এটা অনেক পরের কাজ। এর আগে বাংলাদেশের সিনেমাগুলোকে নানা উছিলায় ভারতে প্রদর্শনের সুযোগ করে দিতে হবে। এতে করে অজ্ঞান ভারতীয়রা তাদের সিনেমা বাদ দিয়ে আমাদের সিনেমা দেখবে, আমাদের সিনেমার হিরো-হিরোইনদের আইডল মানবে, ফেসবুক ব্লগে সিনেমা আর অভিনেতা নিয়ে যুদ্ধ করবে, বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতির পাশাপাশি আমাদের হিরোদের বায়োডাটা-ফিল্মোগ্রাফি মুখস্ত করবে। এমনকি, মানবজমিন পত্রিকায় প্রকাশিত সিনেমার সংবাদ কপি-পেস্ট করে সেইটা নিয়ে আলোচনাও করতে পারে। এরকম সময় উপস্থিত হলেই বাংলাদেশের সিনেমা ভারতে দেখানোর ব্যবস্থা করা শুরু করতে হবে – তখন খুব বেশী বাধা পাওয়া যাবে না, কারণ অজ্ঞান জনগোষ্ঠীর পরিমান ততদিনে বিশাল হয়ে যাবে।
এইটা গেল ভারত দখলের সাংস্কৃতিক দিক, এভাবে যদি বাকী দিকগুলাও কভার করা যায়, তাহলে আর বেশী হলে বিশ বছর, এর মধ্যে ভারত দখল করে বাংলাদেশ-বর্ষ বানিয়ে ফেলা সম্ভব হবে।
ভারতও যদি একইভাবে চিন্তা করে তাহলে সেটা ঠেকানোর জন্য কি করা উচিত সেটা চিন্তা করার আগেই আমার লাঞ্চ শেষ, দিবাস্বপ্নেরও সমাপ্তি। আপনারা যারা লাঞ্চ পিরিয়ডে আছেন, এই স্বপ্ন দেখতে পারেন।
******
সিনেমার একটা গ্রুপে দেখলাম কোলকাতার এক সিনেমার সংবাদ জিনিউজে থেকে কপি করে পেস্ট করে তা নিয়ে মহা আনন্দে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে মুভিলাভারস পোলাপাইন। অজ্ঞান মানুষদের কর্মকান্ড দেখতে দেখতেই কিভাবে ভারত জয় করা যায় সেই স্বপ্নে ডুব দিয়েছিলাম – উঠে এসে এই স্ট্যাটাস।