প্রথমে সিনেমা দিয়েই শুরু করি।
জুনো নামের মেয়েটি, তার বয়স মাত্র ১৬, কিছুটা আগ্রহী হয়েছিল সহবাস অভিজ্ঞতা কিরূপ সেটা জানার জন্য। তার আগ্রহের সফল সমাপ্তি ঘটে তারই ক্লাসমেট-বন্ধু-প্রতিবেশী পলি ব্লিকারের মাধ্যমে। কিছুদিন পরে জুনো কিছু শারীরিক সমস্যা অনুভব করে এবং নিজেই টেস্ট করে জানতে পারে – সে পজিটিভ।
স্কুলপড়ুয়া একটি মেয়ে প্রেগন্যান্ট হয়ে গেলে সেটা কতটা অস্বাভাবিক লাগবে সেটা ভিন্ন কথা কিন্তু জুনো তার ভ্রুনটিকে নষ্ট করতে হাজির হলো এমন একটি নারীবাদী প্রতিষ্ঠানে যারা ্অ্যাবরশনে সাহায্য করে। যে কোন কারণেই হোক, জুনো সেবা গ্রহন না করেই ফিরে এলো এবং সিদ্ধান্ত নিল – সে বাচ্চাটি জন্ম দিবে, তবে মা হবে না – বরং মা হতে পারছে না এমন কোন একটি পরিবারে বাচ্চাটি দান করে কিছু সহযোগিতা করবে। সুতরাং তার গর্ভে বড় হতে লাগলো বাচ্চাটি।
একজন দর্শক হিসেবে সিনেমাটিকে আপনি কিভাবে দেখবেন তার সম্পূর্ন স্বাধীনতা আপনারই – আপনি একে একটি নারীবাদী সিনেমা হিসেবে দেখতে পারেন যেখানে একজন নারী তার নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহন ক্ষমতার যথাযথ প্রয়োগ দেখিয়েছে; আপনি একে ভ্রুনহত্যার প্রতিবাদ হিসেবে দেখতে পারেন অথবা নিছকই এক স্কুলগার্লের প্রেগন্যান্সি এবং রোমান্টিকতা হিসেবে দেখতে পারেন। আমি এই সবগুলো দৃষ্টিভঙ্গিতেই সিনেমাটিকে দেখতে পছন্দ করি তবে গ্রহন করতে পারি না।
আমার কাছে কেমন যেন অস্বাভাবিক মনে হয় – একটি মেয়ে ইচ্ছে হলো তো এক পুরুষের সাথে বিছানায় গেল, প্রেগন্যান্ট হলো তো অ্যাবরশন করলো কি করলো না, একটা বাচ্চা জন্ম হলো অথচ তার বাবা-মা’র কোন পরিচয় জানলো না, কোথাকার কোন এক সিঙ্গল মহিলার অ্যাডপ্টেড সন্তান হিসেবে বেড়ে উঠতে লাগলো – আমার কাছে কেমন অস্বাভাবিক লাগে। কেমন করে সম্ভব? আমি মানছি যে আমি আমার পরিবেশ-ধর্ম বিশ্বাস দ্বারা নির্মিত কাঠামোর বাহিরে চিন্তা করতে পারছি না, সেরকম চিন্তা করতে আমার তেমন কোন আগ্রহও হচ্ছে না – কিন্তু এটাই সত্যি যে আমি এই পুরো ঘটনার মধ্যে মানবিকতা দেখি না, দেখি পশুত্ব।
অ্যাবরশনের বিরুদ্ধে এই সিনেমা খুব ভালো একটি প্রতিবাদ, কিন্তু এর জন্য কি অপরিনত বয়সে অবৈধ সহবাসের প্রতি সমর্থন দেয়া হয়ে গেল না? আরো কোন ভালো সমাধান কি ছিল না? এই বয়সের একটি ছেলে এবং একটি মেয়ের শারীরিক প্রয়োজন জাগতেই পারে, সেটা পূরনের সঠিক পন্থাটাকেই কি সমর্থন করা উচিত নয়? অপরিণত বয়ষে বিয়ের বিরোধিতা করা হচ্ছে ভালো কথা, কিন্তু এর ফলে যে চাইল্ড প্রেগন্যান্সির মতো সামাজিক সমস্যাগুলো ক্রমশই বেড়ে যাচ্ছে তার কি হবে?
মানব শিশু মৃত্যুর হার যেনো হ্রাস পায় সেজন্য আপনি বাল্য বিবাহ বন্ধ করলেন, দেখা গেল বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক বেড়ে চলছে, সেই সাথে প্রেগন্যান্সি, তাই জন্মনিরোধক সহজলভ্য করলেন, তা ব্যবহারের জন্য মানুষকে শিক্ষিত করতে লাগলেন, লাভ হচ্ছে না, তাই পিতৃ-মাতৃপরিচয়হীন শিশুগুলোর বেড়ে উঠার জন্য তৃতীয় কোন ব্যবস্থা গ্রহন করলেন – কেমন হাস্যকর শোনায় না? আপনাকে বাল্য বিবাহ চালু রাখার কথা বলছি না, বন্ধ করা দরকার সেই সমর্থন আমার আছে – কিন্তু যে শিক্ষাটা তাকে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থেকে বিরত রাখবে – সেই শিক্ষাটা কি সেই পরিমানে দিচ্ছেন?
আমি খুব অযৌক্তিকভাবে এইসব কথা বলছি না – ২০০৮ সালে টাইম ম্যাগাজিনে একটি রিপোর্টে ম্যাচাসুয়েটেসে ষোল বছরের নিচের ১৭ জন শিক্ষার্থীর প্রেগন্যান্সির ঘটনাকে উল্লেখ করতে গিয়ে তারা এই সিনেমার নামে ‘জুনো ইফেক্ট‘ শব্দটি উল্লেখ করেছিল। মনে পড়ে, সারাহ পলিনের কিশোরী মেয়ে খুব আলোচনায় এসেছিল? বাংলাদেশে এই অবস্থা এতটা ভয়াবহ নয়, সেটা আমি অস্বীকার করি না, তবে তাই বলে যে পরিস্হিতি সে দিকে যাচ্ছে না তা কিন্তু নয়।
রাগ লাগে, তাই এইসব লিখি। জুনো সিনেমাটা ভালো, বেশ সফল – সেরা সিনেমার তালিকায় নাম তুলেছে যদিও কেউ কেউ দাবী করেন এটা একটা জাপানী সিনেমার নকল তারপরেও বলি, দেখতে ভালো লাগবে। কিন্তু দেখাটাই যেনো শেষ কথা না হয় – দেখার পর আপনার বিবেক শুধু চাইল্ড প্রেগন্যান্সি নয বরং বিবাহ বহির্ভূত এই সম্পর্কের বিরুদ্ধে আরও শক্তভাবে দাড়াতে সাহায্য করে সেটা নিশ্চিত করা উচিত -এটা আপনারই দায়িত্ব।
Tomar analysis amr kase khub e grohon joggo mone hoise… I’ll wait for your blogs..
Ji obossoi Jahapona, 🙂
You are simply awesome my dear brother. I must appreciate your insight. Go ahead
Thanks Brother. I will, iA.
Good one..highly appreciated..please continue blogging…
Thanks Decoder. I will Inshallah 🙂
Ekkebaarey moner kotha ta koisen vaijaaan. khamokha apnarey SAMUte follow kori na mone loy
সামুতে ফলো করলে কিন্তু খুব লাভ নাই, আমি খুব বেশী লিখি না আবার সিনেমা ছাড়াও খুব বেশী লিখি না।
আসবেন মাঝে মধ্যে 🙂
AISSA GELAAM ABAAR
Good job brother…
ধন্যবাদ নিশিথ কাব্য। 🙂
nice and perfect article
একদম মনের কথাটি বলে দিয়েছেন। মুভিটা আমার ভাল্লাগেনি। এটাকে কমেডি মুভি বলতেছে, কিন্তু এরকম জিনিস নিয়ে কমেডি আমার মনে হয় কেবল পশ্চিমা দেশেই সম্ভব। বিয়ে বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক কাম্য নয় মোটেও।
দারাশিকো’র ব্লগে এই প্রথম নাকি সামি? সুস্বাগতম 🙂
কি বলছেন ভেবে বলছেন তো? আমি কিন্তু এর মধ্যে বেশ নিন্দিত হয়ে গেছি – সমকামিতা আর এই ধরনের সম্পর্কের বিরুদ্ধে বলে। নানান রকম উপাধিতে ভূষিত হয়েছি – আপনার উপরও ইটটি পড়লো বলে – সা-ব-ধা-ন 🙂
ভালো থাকুন সামি 🙂