কিম কি দুকের প্রেমে পড়ে গেছি। ঠিক তার প্রেমে নয়, তার সিনেমা ডিরেকশনের প্রেম। এ পর্যন্ত চারটে সিনেমা দেখা হলো। সেই কবে সিনেমার কোর্স করার সময় মানজারেহাসিন মু্রাদ ভাই দেখিয়েছিল স্প্রিং, সামার, ফল, উইন্টার অ্যান্ড স্প্রিং। তখন গুরুত্ব বুঝি নাই, কারণ প্রতিদিনই ভিন্ন ভিন্ন সিনেমা দেখতে দেখতে মাথা গুলিয়েছিল। প্রতিদিনের এক একটি সিনেমা ছিল এক একটি এক্সপেরিমেন্ট, আমার তো অবশ্যই, পরিচালকেরও বটে। তাছাড়া সিনেমা সম্পর্কে তখন কতটুকুই আর বুঝি। (এর মানে অবশ্যই এটা নয় যে এখন অনেক ভালো বুঝি, তবে আগের চে অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে, এতে কোন সন্দেহ নেই)
শুভ ভাইয়ের কম্পিউটার ঘেটে নিয়ে এসেছিলাম চারটে কোরিয়ান সিনেমা। ঘটনাক্রমে দুটোই কিম কি-দুকের। পরে ডাউনলোড করে নামালাম আরও একটা। সব মিলিয়ে চারটি সিনেমার বাকী তিনটি হলো – দ্য আইল, Samaria এবং 3-Iron । এক একটি সিনেমা আমাকে আরও মুগ্ধ করেছে, মুভি ক্যামেরায় লিখিত সিনেমা দেখলাম যেন।
দ্য আইল এর কাহিনী একটি ফিশিং রিসোর্টের মধ্যিখানে। চালায় একটি মেয়ে, তার কোন নাম নেই, অন্তত আমরা জানি না, অবশ্য উইকি বলে তার নাম Hee-jin। বিল এলাকার মধ্যে একটু দূরে দূরে এক একটা স্বতন্ত্র ঘর। আসে মাছ শিকারীরা, বড়শি, খাবার আর অন্যান্য জিনিসের সাথে নিয়ে আসে বেশ্যাদেরকেও। মালিক মেয়েটি তাদের কাছে খাবার সরবরাহ করে, ঘর ভাড়া দেয়, নৌকায় পার করে দেয়, আবার প্রয়োজনে তাদের সাথে বিছানায় শোয়ও।
Hyun-shik নামের এক পুলিশ-পালানো মানুষ এসে উপস্থিত হয় সেই রিসোর্টে। মাছ শিকার তো করেই, এ ছাড়াও রয়েছে মোটা তামার তার দিয়ে নানান খেলনা বানানো। এই পুলিশ-তাড়ানো মানুষটির প্রেমেই পড়ে মালিক মেয়েটি। ভারী তার জেদ, ভালোবাসার মানুষের জন্য করতে পারে না এমন কিছু নেই। Hyun-shik কে আত্মহত্যা থেকেই শুধু বাচায় নি, রক্ষা করেছে পুলিশের হাত থেকে। যে বেশ্যার সাথে Hyun-shik এর সম্পর্ক একটু গভীর হতে শুরু করেছিল তাকে এবং তার পালক পুরুষটিকে হত্যা করে লাশ গুম করতে তার বাধে নি। আবার Hyun-shik যখন তার এই অদম্য প্রেমকে উপেক্ষা করে পালাতে চেয়েছিল, তখন নিজেকে ক্ষত বিক্ষত করেছে সে। সব মিলিয়ে এমনই এক প্রেম কাহিনী দ্য আইল।
কিম কি দুকের অন্যান্য সিনেমার মতোই দ্য আইল সিনেমায় চরিত্র খুব কম, তারচে’ কম ডায়লগ। ২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমাটা বেশ আলোচিত হয়েছিল এর বেশ কিছু দৃশ্যের কারণে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য অনেক দৃশ্য সম্বলিত এই সিনেমা দুর্বল চিত্তদের জন্যও নয়। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেই এই সিনেমা দেখার সময় বেশ অস্থিরতা অনুভব করেছি। আত্মহত্যার জন্য চার পাঁচটি বড়শি গিয়ে খাওয়া এবং তারপর হাতের মুঠোয় সুতো পেচিয়ে টান দেয়া সহ্য করা বোধহয় খুব একটা সহজ কথা নয়। সিনেমার নায়িকা সেই জেদি মেয়ে তার ভালোবাসার মানুষের পলায়ন রোধ করতে যে পন্থা অবলম্বন করেছিল সেটা কোনভাবেই সহনীয় নয়।
এ সব কিছুই বোধগম্য। কিন্তু সব শেষে পরিচালক যা দেখালেন সেটা মাথার এন্টেনায় বাধে না। বোঝার চেষ্টা করছি, পারছি না। বোধহয় কবিতার বাস্তবতা, বিমূর্তরূপ সেখানেই।
I also watch this movie. I have also a question mark about the last scene.
Welcome to Darashiko Blog Sharif. 🙂