সবশেষের আসনটি দখল করে বসে আছি। পাশের সিটটি ফাকা। সুন্দরী নিতু এসে বসল। হাতে মানিক বন্দোপাধ্যায়ের ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’। টুকটাক দুএকটা বাক্য বিনিময় হয়েছে কি হয়নি, রিয়াজ এসে কড়া করে এক ধমক দিল নিতুকে! কারন, আমিনের কাছ থেকে ধার করে নেয়া এসাইনমেন্টের মূল কপিটা ফটোকপি করতে গিয়ে নিতু নষ্ট করে ফেলেছে আর সেজন্য বকা খেতে হচ্ছে রিয়াজকে, কারন সেই তো জোগাড় করে দিয়েছিল।
দুমিনিট কাটল, আষাঢ়ের মেঘ জমল, বিন্দু বিন্দু করে জল জমা হলো, তারপর বৃষ্টি, অঝোড় ধারায় নয়, টুপ টাপ। হাতেই ঢাকা যাচ্ছিল সেসব, কিন্তু বেগ বাড়ল সহসাই! এইবার মানিক এর আড়ালে গেল মেঘমুখ! বৃষ্টির পানিতে ভিজল মানিক, ভিজল পুতুল নাচের ইতিকথা’র শশী আর …। এদিকে প্রচেষ্টা চলছে বৃষ্টি থামানোর, শূকনো কথায় চিড়ে ভিজছে না।
অবশেষে মেঘ কাটল, আপনাতেই। পুতুল নাচের কথা ঘেটে বের করলাম কবিতাটা। মানিক লিখেছে, নীতুর জন্য, নীতুকে উদ্দেশ্য করে। হয়তো বৃষ্টির ছাটে ভিজে যাওয়ায় কবিতে পরিনত হয়েছিল উপন্যাসিক থেকে!
রাগ করিয়াছো?
কেন রাগ করিয়াছো অবোধ বালিকা?
কেন এত অভিমান। দুটি চোখে
কেন এত ভৎর্সনা? মুখে মেঘ
নামিয়াছে, দুলে দুলে ফুলে ফুলে
উঠিতেছে বুক, দেখে মনে হয়
আমি যেন বকিয়াছি তোরে
মন্দ বলিয়াছি।
এ গাম্ভীর্য, হাসিহীন এত কঠোরতা
ফুলে কি মানায় সখী,
মানায় কুসুমে? আমি তোরে ভালোবাসি
সত্য কহিয়াছি, প্রাণ দিয়ে ভালোবাসি তোরে
সাক্ষী নারায়ণ, সাক্ষী মোর হৃদয়ের …
২০০৯ সালের ২২শে জুলাই এই পোস্টা লিখেছিলাম, আজকে ঘাটতে গিয়ে বের হলো। কেন লিখেছিলাম জানি না কিন্তু আমিই লিখেছি এইটা এখন আমারই বিশ্বাস হয় না। আবার যদি লিখতে পারতাম এমন করে 🙁