চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার ও অভিনেতা কুয়েন্টিন টারান্টিনো ১৯৬৩ সালের ২৭ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি রাজ্যের নক্সভিলে জন্মগ্রহণ করেন। ‘Reservoir Dogs’ সিনেমার মাধ্যমে সর্বপ্রথম তিনি সবার নজর কাড়েন। আর ১৯৯৪ সালে মুক্তি পাওয়া ‘Pulp Fiction’-এর মাধ্যমে বিশ্ব চলচ্চিত্রের ভাষাই পরিবর্তন করে দেন। সিনেমাটির জন্য তিনি সম্মানজনক পাম ডি’ওর পুরস্কার লাভ করেন। সেই থেকে একের পর এক সমাদৃত ও ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়ে তিনি পরিণত হয়েছেন সিনেমা জগতের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বে। জিতেছেন দু’টি অস্কার, দু’টি গোল্ডেন গ্লোব ও দু’টি বাফটা।
অষ্টম সিনেমা ‘The Hateful Eight’-এর পোস্ট প্রোডাকশন যখন মাঝামাঝি পর্যায়ে কুয়েন্টিন টারান্টিনো চলচ্চিত্র নিয়ে তার ধ্যান-ধারণা ভাগ করে নিয়েছেন লেন ব্রাউনের সঙ্গে। সাক্ষাৎকারটি গত বছর (২০১৫ সালে) ২৪ আগস্ট নিউইয়র্ক ম্যাগাজিনে ছাপা হয়।
‘The Hateful Eight’ মুক্তির মাত্র কয়েকমাস বাকি। কতখানি শেষ হয়েছে?
এক ঘণ্টার কিছুটা বেশি। আমি মাত্রই প্রথম ঘণ্টার কাট সম্পূর্ণরূপে দেখে আসলাম। আমরা আসলে দ্রুত শেষটায় যেতে চাচ্ছি। তারপর এটাকে আবারও এডিট করে আরও নিখুঁত করব। আমার প্রতিটা ছবিই কোনো ডেডলাইনকে সামনে রেখে বানানো। ‘Reservoir Dogs’র সময় ডেডলাইন ছিল সানড্যান্সের আর ‘Pulp Fiction’র সময় কান। এতে করে একটা সুবিধে হয়। সিনেমা শেষ করার পর, প্রযোজকরা এসে ওটার ওপর খবরদারি করতে পারে না।
সর্বশেষ ‘Django Unchained’ ও ‘Inglourious Basterds’ আপনার সবচেয়ে ব্যবসাসফল দুটো চলচ্চিত্র। বক্স অফিস কি আপনার ওপর কোনো প্রভাব ফেলছে?
আমার মনে হয় না। যতক্ষণ পর্যন্ত আমি সেই গল্পটা বানাচ্ছি, যেটা আমি বলতে চেয়েছি। তবে ‘Grindhouse’ থেকে আমি একটা বড় তালিম নিয়েছি এবং সেই ভুলগুলো এড়িয়ে চলি। আমি আর (রবার্ট) রড্রিগেজ নিজস্ব পথে চলতাম আর সেই অদ্ভুত সফরে দর্শকরাও আমাদের সঙ্গে চলছিল। আমরা ভেবেছিলাম, আমরা যেখানে নিয়ে যাব, তারা বুঝি সেখানেই যাবে। কিন্তু ‘Grindhouse’ দিয়ে সে ভুল ভেঙেছে।
আপনি বহুবার বলেছেন, দর্শকদের সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে চান যেভাবে একজন কন্ডাক্টর তার অর্কেস্ট্রা পরিচালনা করে। সময়ের সাথে সাথে দর্শক তো আপনার স্টাইলের সাথে পরিচিত হয়ে গিয়েছে। এখন কি কাজটা কিছুটা কঠিন হয়ে যায়নি?
সত্যি বলতে কি, বুঝদার দর্শকরা কোনো সমস্যা না, সমস্যা হল গিয়ে নির্বোধ দর্শকরা। তবে আমার মনে হয়, দর্শকরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি বুঝতে শিখেছে। ’৫০-এর দর্শকরা যে নির্মাণ কৌশল মেনে নিত, তা দেখে ’৬৬-এর দর্শকরা হেসে দিত। আবার ’৬৬-এর সিনেমা দেখে হেসে দিত ’৭৮-এর দর্শকরা। কৌশলটা হল ঐ কার্ভের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে থাকা। যাতে করে, কুড়ি বছর পর আপনার সিনেমা দেখে মানুষ হাসতে আরম্ভ না করে।
স্টিভেন স্পিলবার্গ ও জর্জ লুকাস চলচ্চিত্রশিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশ। তারা মনে করছেন, যে কয়টা সিনেমার (ফ্র্যাঞ্চাইজির) ওপর নির্ভর করে ইন্ডাস্ট্রি চলছে, তার কয়েকটা ফ্লপ করলে পুরো চলচ্চিত্র ব্যবসাটাই ধসে পড়বে। আপনারাও কি তাই মনে হয়?
ফ্র্যাঞ্চাইজি ছবির ওপর নির্ভরশীলতা নিয়ে আমি হতাশ নই। এটা তো আমার জন্মের সময় থেকেই চলে আসছে। এখন যেমন ‘Transformers’ , তখন ছিল ‘Planet of the Apes’ বা বন্ডের ছবিগুলো। ‘পাল্প ফিকশন’র পর আমি (অ্যালবার্ট ও বারবারা) ব্রোকোলি’র কাছে ‘Casino Royale’র কপিরাইট কিনতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা হয়নি। শুধু এ জন্য নয় যে; তারা ভেবেছিলেন, আমিও টাকার খেলায় তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে নামছি। এটাও ভেবেছিলেন, আমি যেন বন্ড চরিত্রের কোনো ক্ষতি না করতে পারি। ভাবখানা এমন, বন্ডের তখন বারোটা বাজানোর আর কিছু বাকি ছিল!
ছোটবেলায় রিমেক, সিক্যুয়ালগুলোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম। আমি আসলে সাক্ষাৎকার শেষে গাই রিচির ‘The Man from U.N.C.L.E.’ দেখতে যাব। জানি না স্পিলবার্গ ও লুকাস কেন এত অভিযোগ করছেন। তাদের তো আর কেউ ছবিগুলো বানাতে বলছে না। স্পিলবার্গ যে কথাগুলো বলছেন সেটা মানুষ আগেও বলেছে, পুরো নব্বই দশকজুড়ে অথবা এর আগে এমনকি সত্তরের দশকেও।
আমার মনে হয়, দর্শকরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি বুঝতে শিখেছে। ’৫০-এর দর্শকরা যে নির্মাণ কৌশল মেনে নিত, তা দেখে ’৬৬-এর দর্শকরা হেসে দিত। আবার ’৬৬-এর সিনেমা দেখে হেসে দিত ’৭৮-এর দর্শকরা। কৌশলটা হল ঐ কার্ভের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে থাকা। যাতে করে, কুড়ি বছর পর আপনার সিনেমা দেখে মানুষ হাসতে আরম্ভ না করে।
তার মানে আপনি একদমই চিন্তিত নন?
অন্তত এ সব বাকোয়াজ কারণগুলোর জন্য তো নয়ই। একটা বছরে যদি আপনি অনেকগুলো ছবি দেখেন, শীর্ষ দশের তালিকা করা বেশ কঠিন। আপনি হয়ত বছরে একটা মাত্র মাস্টার পিস পাবেন। এবং আমার মনে হয় না একটার বেশি আশা করা উচিৎও, যদি না সেটা অসাধারণ কোনো বছর হয়।
ব্লকবাস্টারগুলোর প্রতি সুবিচার করলে বলতে হয়, অস্কারের জন্য টোপ হিসেবে বানানো ছবির চেয়ে বাজে আর কিছুই হতে পারে না।
নব্বইয়ের দশকে যে ইন্ডি মুভিগুলো সানড্যান্সে যেত, এখন তারা অস্কারকে টার্গেট করছে। পার্থক্য হল একটু বেশি বাজেট আর স্টার কাস্ট নিয়ে। এই মুভিগুলো ভাল; কিন্তু আমার মনে হয় না, এদের নব্বই বা সত্তরের দশকের মুভির মতো আয়ুষ্কাল আছে। ২০-৩০ বছর পর ‘The Town’, ‘An Education’, ‘Notes on a Scandal’ বা কেট ব্ল্যানচেটের বেশিরভাগ মুভি নিয়ে কেউ মনে হয় না কথা বলবে। কিন্তু ‘The Fighter’ বা ‘American Hustle’ এ সব তো ত্রিশ বছর পরেও সবাই দেখবে।
আপনার তাই মনে হয়?
আমি সম্পূর্ণ ভুলও হতে পারি। আমি তো আর নস্ট্রাডেমাস নই।
Django Unchained পোস্টারে জেমি ফক্স আর ক্যাপ্রিওকে দেখা গিয়েছিল। Inglourious Basterd–এ ব্র্যাড পিটকে। হেইটফুল এইটে আছেন Kurt Russell, Sam Jackson, Jennifer Jason Leigh। কখনো কি বড় কোন তারকাকে নেবার জন্য চাপ ছিল?
নাহ। যদি এমন কোন চরিত্র থাকতো, যেটায় বড় কোন তারকা অভিনয় করতে পারবেন এবং তিনি অভিনয় করতেও আগ্রহী, তাহলে নিশ্চিতভাবেই তাদেরকে বিবেচনা করার জন্য চাপ থাকতো। এবং তাতে আমার কোন আপত্তিও নেই। জরুরী ব্যাপার হলো, তারা আমার ঘরানার অভিনেতা কিনা আর কিভাবে সংলাপটা বলছে। এটা এমন একটা ছবি, যেখানে ব্র্যাড কিংবা লিওকে নিলে চলতো না। প্রয়োজন ছিল এমন এক শিল্পী সমাহারের, যেখানে একে অন্যের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।
আপনি তো শক্তিশালী নারী চরিত্র সৃষ্টি করতে সিদ্ধহস্ত। গৎবাঁধা হলিউডি ধারার চেয়ে ভিন্ন নারী চরিত্র লেখার জন্য কোন দায়িত্ব অনুভব করেন কি?
আমার এমন কোন দায়িত্বই নেই। আমি কুড়ি বছর ধরে ছবি বানাচ্ছি। আমার গত দশ বছরের সিদ্ধান্তগুলো, তা সে যতটা অসাধারণই হোক না কেন, ঐগুলো আমি আবার করতে যাবো না। আমি যা লিখেছি, সেটা পছন্দ করেছি আর চরিত্রগুলোকে ভালোওবেসেছি। কিন্তু তার মানে এই না যে, চরিত্রগুলোর প্রেমে দেওয়ানা ছিলাম। তখন আমি কেবল কুল কাস্টিং নিয়েই মাথা ঘামাতাম। এমন সব শিল্পীদের নিতাম যাদেরকে আমি পছন্দ করি, কিন্তু তাদের হাতে যথার্থ কাজ নেই। এবং তাদেরকে ছবিতে নিয়ে দেখাতে চাইতাম, ‘দেখো এরা কি করার ক্ষমতা রাখে!’
কিন্তু এখন আর এভাবে ভাবি না। এখন আমার চরিত্ররাই সব। আমি বিশ্বাস করি, আমি চলে যাবার পর আমার চরিত্রগুলোই আমার সবচে বড় সম্পত্তি বা লিগাসি হয়ে দাঁড়াবে। জ্যাঙ্গোর প্রমোশনের সময় এক সাক্ষাৎকারে, আমাকে এমনই প্রশ্ন করা হয়েছিল, তখন পাশে ছিল লিও আর ফক্স। আমি জবাব দিয়েছিলাম, ‘দেখ, আমি এই দুইজনকে পছন্দ করে। কিন্তু আমার চরিত্রদেরকে ভালোবাসি। এই দুজনের কাজ আমার সংলাপ আওড়ানো।’
টিভিতে কি দেখা হয়? ‘True Detective’ দেখেছেন?
শেষ দেখেছি ‘Justified’ ও ‘How I Met Your Mother’। True Detective প্রথম সিজনের প্রথম এপিসোডটা দেখার চেষ্টা করেছিলাম। এবং একদমই ভাল লাগেনি। আমার মনে হয়েছে এটা খুবই বোরিং। আর হ্যাঁ, অ্যারন সোরকিনের ‘The Newsroom’ খুবই ভাল লেগেছিল।
আপনি কি টিভিতে মুভি স্ট্রিম করে দেখেন?
নাহ, এটা তো স্রেফ প্রজন্মগত ব্যাপার। আমি এটা নিয়ে তেমন হতাশও নই। তবে কেউ আমার সিনেমা তার মোবাইলে বসে দেখছে, এটা আমাকে খুব হতাশ করে।
তবে কি আপনি এখনো কম্পিউটারের বদলে হাতে স্ক্রিপ্ট লিখেন?
আমি আপনাকে পাল্টা একটা প্রশ্ন করি। আপনি যদি কবিতা লিখতে চান, তবে কি সেটা কম্পিউটারে লিখবেন?
নাহ, তা লিখব না। এ বছরে আপনার সবচে পছন্দের ছবি কী?
খুব বেশি কিছু দেখতে পারিনি। ছবি বানানোতে ব্যস্ত ছিলাম। ‘Kingsman’ দারুণ লেগেছে আর ‘It Follows’। বিগত কয়েক বছরের মাঝে, হরর মুভির সেরা কনসেপ্ট ছিল এই ছবিটার। এটা এমন এক ছবি যেটা ‘ভাল কিন্তু কেন এটা অসাধারণ না’— এই ভেবে আপনার মেজাজ খারাপ হবে।
কাকে আপনার নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে হয়? পল টমাস এ্যান্ডারসন?
না, ওটা তো স্রেফ বন্ধুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। আমাকে অহংকারী মনে হতে পারে, কিন্তু এখন আর আমি কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করি না। আমি নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী। ডেভিড ও’রাসেল হয়ত বছরের সবচেয়ে ব্যবসাসফল ছবিটি বানাবে, কিন্তু তাতে আমি আমার কোনো অর্জন হারাব না। (রিচার্ড) লিঙ্কলেটারের সিনেমা গত বছর অস্কারে গিয়েছিল এবং এতে আমার খুশির সীমা ছিল না।
আমি শেষ প্রতিযোগিতা অনুভব করেছিলাম যখন ‘Kill Bill’র সঙ্গে ‘The Matrix Reloaded’ মুক্তি পেল। ছবিটা প্রথমদিনেই আমি দেখেছিলাম আর Jay Z‘র ‘competition is nada’ গাইতে গাইতে থিয়েটার থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম। ভাবছিলাম, ‘আমি এই ছবি নিয়ে টেনশন করছিলাম! ধুর!!’
এখনকার দিনে কোনো পরিচালক একটা ভাল ছবি বানালেই, তাকে ধরে সুপার হিরো বা স্টার ওয়ার্স, জুরাসিক ওয়ার্ল্ডের মতো সিনেমা বানাতে দেওয়া হয়। ‘Reservoir Dogs’র পরে আপনাকে ‘Speed’ ও ‘Men in Black’ নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এর কোনো একটায় রাজি হয়ে গেলে আজ আপনার ক্যারিয়ার কেমন হতো?
বেশ ভালো হতো। কিন্তু আমার মনে হয়, এখানে এই ছবি বা ‘পাল্প ফিকশন’র সাফল্য মুখ্য বিষয় না। মূল কথাটা হল, আমি এটা প্রতিষ্ঠা করেছি যে, আমাকে পরিচালক হিসেবে ভাড়া করা যায় না। আমি স্ক্রিপ্টের আশায় ঘরে বসে থাকি না, আমি নিজেই লিখি।
আমাকে অহংকারী মনে হতে পারে, কিন্তু এখন আর আমি কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করি না। আমি নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী। ডেভিড ও’রাসেল হয়ত বছরের সবচেয়ে ব্যবসাসফল ছবিটি বানাবে, কিন্তু তাতে আমি আমার কোনো অর্জন হারাব না।
আপনার বিরুদ্ধে কিছু নির্দিষ্ট অভিযোগ বরাবরই ছিল, যেমন নৃশংসতা বা নিগার শব্দটা ব্যবহার করা। এগুলো কি এখন কানে তোলেন?
আমার কছে সামাজিক সমালোচকদের কোন দামই নেই। তাদেরকে অগ্রাহ্য করা খুব সহজ। কারণ, নিজের কাজের উপর শতভাগ বিশ্বাস আমার আছে। তাই, জনস্বার্থে না-সূচক কথা বলতে থাকা মানুষগুলো, স্রেফ **মারা খাক।
কিছুসময়ের জন্য এগুলো হয়তো উত্যক্তকর। কিন্তু দিন শেষে এরা আমার পালে হাওয়া হিসেবে কাজ করে।
আপনি স্ক্রিনপ্লের জন্য দুটো অস্কার পেয়েছেন। কিন্তু শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে কিছু পাননি, এই বিষয়টা আপনাকে খোঁচায় না?
নাহ, ইনগ্লোরিয়াসের জন্য পেলে ভালই লাগত। তবে আমার হাতে তো এখনো সময় আছে। আমি যে দুটো অস্কার পেয়েছি, সেগুলো নিয়ে আমি খুবই, খুবই খুশি। আমি এটা বুক ফুলিয়ে বলব, আমি সেই পাঁচজনের একজন যারা অরিজিনাল স্ক্রিনপ্লের জন্য দুটো অস্কার পেয়েছে। অন্য চারজন হলেন চার্লস ব্র্যাকেট, প্যাডি চেফস্কি, উডি এ্যালেন ও বিলি ওয়াইল্ডার।
আমি এটা প্রথম যেদিন জানলাম, আমার তো মাথাই ঘুরে গেল। ‘বাপ রে!’ এই চারজন হল গিয়ে হলিউডের সর্বকালের সেরা চার লেখক। এখন অবশ্য উডি তিনটা জিতে আমাদের সবাইকে হারিয়ে দিয়েছে। আরেকটা পেলে উডির সঙ্গে ড্র করে ফেলব।
আপনি তো ১০টি সিনেমা পরিচালনার পরে অবসর নিবেন— এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর পরের দুটো ছবি নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?
দশম ছবিটা যদি আমার সেরা হয়, তবে তো দারুণ হবে। তবে এই মুহূর্তে সিরিয়াসলি কিছু ভাবছি না। আমি নিজেকে মুক্ত রেখেছি আর অপেক্ষা করছি সেই গল্পটার জন্য যেটা কিনা আমার সাথে কথা বলবে।
আপনার সিনেমার বেশিরভাগ চরিত্র প্রতিশোধপরায়ণ, কিন্তু আপনাকে আজকাল বেশ ক্ষমাপরায়ণ বলেই বোধ হচ্ছে। ব্রুস ডার্নের এজেন্ট খুব সম্ভবত ‘হেইটফুল এইট’র স্ক্রিপ্ট ফাঁস করে দিয়েছে। কিন্তু ব্রুসকে ছবি থেকে বাদ দেননি। এনিও মরিকোনি জ্যাঙ্গোর কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। অথচ তাকে ‘হেইটফুল এইট’র কম্পোজারের দায়িত্ব দিয়েছেন। একটু নেতিয়ে যাচ্ছেন কি?
খুব সম্ভবত! আর আমি এটা নিয়ে বেশ খুশি। আমি বেশ ঘাড় ত্যাড়া আদমি ছিলাম। কিন্তু এখন রেগে গেলে ভাবি, ‘আরে আমার সমস্যা কি!’ আমি একটা অসাধারণ জীবন পেয়েছি। খুব কম মানুষেরই, আমার মতো অবস্থানে থেকে শৈল্পিক কিছু করার সৌভাগ্য হয়। আমি কেন রেগে যাব? জীবন অনেক ছোট।
সংক্ষেপিত ও পূর্বে প্রকাশিত
অনুবাদ সহজ কর্ম নয়, এটা নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই জানি। কিন্তু এই সাক্ষাতকারটা প্রাঞ্জল হয়েছে স্নিগ। টারান্টিনোর মত পরিচালকদের কিছু এক্সক্লুসিভ সাক্ষাতকার তো মাঝে মাঝেই অনুবাদ করতে পারেন, তাহলে অন্ততঃ নির্মাতাদের চিন্তার খোরাক পাওয়া সহজ হয়।
ধন্যবাদ, দারাশিকো ভাই!
আমার মাথাতেও এমন প্ল্যান আছে অনেকদিন ধরে। কিন্তু সব নষ্টের গোঁড়া হলো এই আলসেমি। ভেবে রাখি, কিন্তু করা হয় না
দারুণ অনুবাদ করছেন, স্নিগ্ধ রহমান ভাই। কি সরল আর প্রাঞ্জল ভাষা! এক বসায় পুরাটা পড়ে ফেললাম।
ধন্যবাদ! 🙂