চারমাস আগে চাকরী পাওয়ার দু’মাসের মাথায় মনির কিভাবে যেন একটা আইফোন জোগাড় করে ফেলল। আইফোনের প্রভাব নাকি চাকরী ঠিক জানি না, কিন্তু মনিরের লাইফস্টাইলে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে গেল। সপ্তাহের একেক দিন একেকরকম শার্ট-প্যান্ট পড়ে আইফোন হাতের মুঠোয় নিয়ে সে অফিসে যায়, রিকশায় বসে গম্ভীর মুখে টাচস্ক্রিনের পাতা উল্টায়। লাইফস্টাইলের পরিবর্তন এমনই যে – সপ্তাহান্তে লন্ড্রি আর জুতা পালিশ, তিনদিনে একবার ফোম শেভ – সবই ঘর থেকে বাহিরে চলে গেল।
ঘন্টাখানেক আগে মনির ফোন দিল। ‘দারা ভাই, একটু হেল্প করেন প্লিজ’।
‘কি হেল্প?’
‘কাপড়গুলা লন্ড্রিতে দেবো বলে গাট্টি বেঁধে রাখছিলাম, কিন্তু নিচে নামার সময় ভুলে গেছি। আপনি কি একটু লন্ড্রিতে দিবেন প্লিজ? এখন না দিলে রোববার সকালে পাওয়া যাবে না। মিটিং আছে ওইদিন। …’
কলা কেনার জন্য নিচে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিলাম, তাই মনিরের কাপড়ের গাট্টি নিতে সমস্যা হল না। বাসার নিচেই লন্ড্রি – ছেলেটার দিকে গাট্টিটা ছুড়ে দিয়ে ‘রিসিট রেডি কর, আমি আসতেছি’ বলে কলা কিনতে গেলাম।
ফেরার সময় রিসিট নেয়ার জন্য দাড়াতেই ছেলেটা বলল, ‘ভাই, এগুলা কি মনির ভাইয়ের?’
‘হুম। কেন?’
‘আমরা এগুলা ধুই না, উনারে আগেও একদিন বলছিলাম’ – ছেলেটা কাউন্টারে কয়েকটা কাপড় তুলে রাখল।
এক জোড়া মোজা, তিনটা স্যান্ড্রো গেঞ্জি আর তিনটা গ্রামীন ইউনিক্লো-র জাইঙ্গা।
‘একটা প্যাকেটে দে হারামজাদা। আমি কি হাত দিয়া ধরবো নাকি ওগুলা???’