বাচ্চাকালে যেখানে থাকতাম সেখানে যে মেয়েটা সাইকেল চালাতো তার বাবা বেশ বড় অফিসার এবং পয়সাওয়ালা। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়ে আরও বেশ কিছু সাইকেল চালানো মেয়ে দেখেছি। এদের বেশীরভাগই বিভিন্ন এনজিও-র কর্মী, এ জায়গা থেকে সে জায়গায় টাকা কালেকশনের জন্য ছুটে বেড়ায় তারা। রংপুর শহর থেকে লালমনিরহাট ঘুরে ঠাকুরগাঁও এর দিকে যেতেই সাইকেল চালানো মেয়েদের সংখ্যা বাড়তে লাগল। প্রথমে ভাবলাম এরাও বিভিন্ন এনজিও-র কর্মী। কিন্তু না, ঠাকুরগাঁও শহরে পৌছার পর ভুল ভাংল। সব রাস্তায় সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে প্রচুর মেয়ে। এদের বয়স বারো তেরো থেকে শুরু করে পয়ত্রিশ-সাইত্রিশ পর্যন্ত। তাদের সাইকেল আধুনিক কিছু না, বরং বেশ পুরানো এবং বাঁকা হাতলের। এই মেয়েদের কেউ-ই স্বচ্ছল না, ওই অঞ্চলে সাইকেল বেশ গুরুত্বপূর্ন বাহন। সাইকেলে চড়ে মেয়েরা স্কুলে যায়, স্কুল থেকে ফিরে আবার প্রাইভেট পড়তে যায়, অফিস বা কর্মস্থলে যায়। এই সাইকেল চালকিনীদের যে বিষয়টা সবচে ভালো লাগল, সাইকেল চালাতে গিয়ে তাদের কেউই জিন্সপ্যান্ট পড়ে নি, শর্ট কামিজ বা টি-শার্ট পড়ে নি, সালোয়ার কামিজের সাথে চাদরের হিজাব, কেউ কেউ নিকাবে।
রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় মেয়েদের সাইকেল চালানোর এই দৃশ্য ঢাকা শহর সহ সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে – এই স্বপ্ন দেখি।