যেসব ব্লগার সিনেমা দেখেন এবং কিছু কিছু মুভিকে পছন্দের তালিকায় স্থান দেন, তাদের কাছ থেকে পছন্দের মুভির লিস্টটা ধার চেয়ে নিলে L.A. Confidential এর নাম পাওয়া যাবে, সে ব্যাপারে মোটামুটি নিশ্চিত থাকা যায়। শুধু মাত্র এই একটি কারনে সকল ব্লগারকে (যাদের তালিকায় নামটি রয়েছে) রুচিশীল সিনেমা দর্শক হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়, কারন সিনেমাটি IMDB রেটিংএ অবস্থান ৮.৪, মোট ভোটারের সংখ্যা ১৪৫,০৮০ । শুধু তাই নয়, সিনেমা সমালোচনার জন্য বিখ্যাত Rotten Tomatoes এর হিসেবে ৯৯% অর্থ্যাৎ ৭৪ টি রিভিউর মধ্যে ৭৩ টিই পজিটিভ হিসেবে বর্ননা করেছে L.A. Confidential কে।
একই নামের উপন্যাস থেকে অ্যাডাপ্টেড এই মুভিতে সংগঠিত অপরাধচক্রের পাশাপাশি হলিউডের পুলিশ বাহিনীর দুর্নীতি, হত্যা, মিথ্যা প্রভৃতি অপরাধের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আরও রয়েছে, পলিটিক্যাল করাপশন, প্রস্টিটিউশন, হেরোইন, পর্নোগ্রাফি, ট্যাবলয়েড জার্নালিজম ইত্যাদিতে জড়িয়ে থাকা হলিউড সেলিব্রেটিদের কাহিনী।
মুভিতে রয়েছে মাথা গরম পুলিশ অফিসার বাড হোয়াইট (রাসেল ক্রো) যে নারীদের রক্ষা করার জন্য সুনাম কুড়িয়েছে। রয়েছে জ্যাক ভিনসেন্স (কেভিন স্পাইসি, আমেরিকান বিউটির প্রধান চরিত্র) যার যোগাযোগ রয়েছে অপরাধী চক্রের সাথে, বিভিন্ন ইস্যুতে টাকা নেয়া তার কাছে অন্যায় মনে হয় না। এছাড়া রয়েছে এড এক্সলে (গাই পিয়ার্স) যে কিনা ভিন্ন মেরুতে অবস্থান করছে, কারন পুলিশের এই সকল অন্যায় অপরাধ থেকে দূরে থেকে কাজ করে যাওয়াই তার লক্ষ্য। সবার থেকে ব্যতিক্রম এই এক্সলে কারন একমাত্র সেই পুলিশ হওয়া সত্বেও নিজের সহকর্মীদের অপরাধের পক্ষে সাক্ষ্য দিতে পিছপা নয়, অবশ্য এ নিয়ে অফিসের সবার বিরাগভাজন হতে সময় লাগে না তার।
আর আছে ট্যাবলয়েড পত্রিকা হাস-হাস এর সম্পাদক সিড, হলিউডের সেলিব্রেটিদের স্ক্যান্ডালের খবর ছাপিয়ে যে তার পত্রিকার সার্কুলেশন বাড়ায়। মুভির কাহিনী ৫০ এর দশককে তুলে ধরেছে এবং মজার তথ্য হল, সেই সময় সত্যি সত্যি হাস-হাস নামে একটা ট্যাবলয়েড ছিল। অবশ্য স্ক্যান্ডাল নিয়ে কুখ্যাতি অর্জন করেছিল যে ট্যাবলয়েডটি তার নাম “কনফিডেন্সিয়াল”।
নাইট ওল কফি শপ এ পুলিশ সহকর্মী খুন হয়ে যাওয়ার পর খুনিকে ধরতে গিয়ে বের করতে গিয়েই মুভিটির মূল কাহিনী শুরু। বাড হোয়াইট প্রেমে পড়ে এমন এক তরুনীর যে একজন নকল হলিউড সেলিব্রেটি এবং পর্নোতারকা। জড়িয়ে আছে মিলিওনেয়ার ব্যবসায়ীরা, নতুন নতুন তথ্য উদ্ভাবিত হচ্ছে, আর বেরিয়ে আসছে নতুন নতুন ব্যক্তিদের নাম – বেশ জমিয়ে তুলতে পেরেছেন পরিচালক কার্টিস হ্যানসন, যদিও তার অন্য কোন মুভি চিনতে পারলাম না। পুরো মুভিটাই পাজলিং, মনযোগ দিয়ে না দেখলে বোঝা যায় না।
১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই মুভিতে অস্ট্রেলিয়ান অভিনেতা রাসেল ক্রো এবং গাই পিয়ার্স অভিনয় করেছে যারা সেইসময়ের আমেরিকায় ততটা পরিচিত ছিল না। ফলে সন্দেহ ছিল, এই ধরনের নন সেলিব্রেটিদের নিয়ে তৈরী করা সিনেমা দর্শকপ্রিয়তা লাভ করবে কিনা। অবশ্য প্রযোজক আপত্তি করেন নি, ফলে আরও যুক্ত হয় কেভিন স্পাইসি। সন্দেহ নেই, এইসব নতুন লোকদের ব্রিলিয়ান্ট অভিনয়ই মুভিটিকে আপনার প্রিয় মুভির তালিকায় সংযোজিত করেছে।
বিস্তারিত তথ্যের জন্য উইকিপিডিয়া দেখুন