আপনাদের জন্য একটি ধাঁধা। ১০০% গ্যারান্টি, ধাঁধাটি যদি আগে কখনও না শুনে থাকেন তাহলে প্রশ্নটা শুনে আপনি হা হয়ে যাবেন!
ধাঁধাটি এরকম: পাশাপাশি অবস্থিত পাঁচ রঙের পাঁচটি ঘর। প্রত্যেক ঘরে আবার ভিন্ন ভিন্ন দেশের লোক বাস করে। তাদের প্রত্যেকেই আলাদা পানীয় পান করে, সিগারেটের ব্র্যান্ডও আলাদা, এমনকি তাদের পোষা প্রাণীটাও আলাদা! এই পাঁচ বাড়ি ও তার বাসিন্দাদের নিয়ে কিছু তথ্য জানা গেছে। এগুলো হলো:
লাল রঙের বাড়িটায় বাস করে ব্রিটিশ। সুইডিশের পোষা প্রাণীটা হলো কুকুর। ডেনিশের প্রিয় পানীয় চা। সাদা বাড়িটার বাঁয়ে সবুজ বাড়ি। সবুজ বাড়ির মালিক কফি পান করে। পলমল সিগারেট যে খায় তার পোষা প্রাণী হলো পাখি। হলুদ বাড়ির মালিক ডানহিল সিগারেট খায়। মধ্যের বাড়ির বাসিন্দার প্রিয় পানীয় হলো দুধ। প্রথম বাড়িটায় বাস করে নরওয়ের এক লোক। যে বিড়াল পোষে তার পাশের বাড়ির বাসিন্দা ব্লেন্ড সিগারেট খায়। ডানহিল যে খায়, তার পাশের বাড়ির লোকটা ঘোড়া পোষে। ব্লুমাস্টার সিগারেট যে খায় সে বিয়ারও পান করে। জার্মান লোকটা খায় প্রিন্স সিগারেট। নীল ঘরটার পাশে থাকে নরওয়ের লোক। ব্লেন্ড যে খায় তার প্রতিবেশী পানি পান করে।
প্রশ্ন হলো, মাছ পোষে কে?
‘পকেট থটস’ নামে আমার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এবং টেলিগ্রাম চ্যানেল রয়েছে। নিমন্ত্রণ রইল।
এই ধাঁধাটি আমি প্রথম জেনেছিলাম বাচ্চাবেলায় – সম্ভবত রহস্য পত্রিকার কল্যাণে। এই যুগে যাকে বলে টাশকি খাওয়া, প্রশ্ন শুনে আমার সেই অবস্থা হয়েছিল। প্রশ্নের কোথাও মাছের কথাই নাই, অথচ বলতে হবে মাছ পোষে কে!
এই ধাঁধাটির নাম আইনস্টাইন ধাঁধা। বলা হয় আইনস্টাইন নাকি ছোটবেলায় এই ধাঁধাটি তৈরি করেছিলেন এবং বলেছিলেন – ৯৮ শতাংশ মানুষ এই ধাঁধার উত্তর দিতে সক্ষম হবে না। যারা ধাঁধার খেলা পছন্দ করেন তারা এই চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করে নিজেকে ২ শতাংশের মধ্যে টেনে আনার চেষ্টা করেন। ২ শতাংশ লোকের মধ্যে এলেই যে খুব বুদ্ধিমান, তা নয়, কিন্তু তারা যুক্তির ভালো প্রয়োগ করতে পারেন বলে বোঝা যায়।
তবে এই ধাঁধাটি আসলেই আইনস্টাইন তৈরি করেছেন এমন কোন প্রমাণ নেই। মূলত এই ধরণের ধাঁধাকে বলে জেব্রা পাজল। খেয়াল করলে দেখবেন এখানে পাঁচ ধরণের তথ্য আছে পাঁচজনের বিষয়ে। ফলে এটা একটা ৫x৫ ম্যাট্রিক্সের মত ছক করে সমাধান করার চেষ্টা করলে সমাধান সহজ হয়। কলামগুলোতে বাড়ির নাম্বার আর রো-গুলোতে একেকটি বৈশিষ্ট্য ধরে প্রত্যেকটি সূত্র অনুযায়ী ছকে তথ্য বসালে সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব।
যারা রহস্য গল্প পছন্দ করেন তাদের জন্য জেব্রা পাজল সমাধান করা পছন্দের একটি হবি হতে পারে। যারা রহস্য গল্প লিখতে চান তাদের জন্যও জেব্রা পাজল একটি দারুণ আইডিয়া। খেয়াল করে দেখবেন, রহস্য গল্পগুলোতে তিন চতুর্থাংশ জায়গা জুড়ে বিভিন্ন ক্লু সংগ্রহ করা হয়, তারপর সেই ক্লু-গুলোকে জুড়ে দিয়ে রহস্যের সমাধান হয়। লেখক হিসেবে আপনি যদি এই ধরণের ক্লু এবং সন্দেহভাজনকে তৈরি করতে পারেন তাহলে একটি জমজমাট রহস্য গল্প উপহার দিতে সক্ষম হবেন।
আর যারা কেবল জেব্রা পাজল সমাধান করতে চান তাদের জন্য একটি ওয়েবসাইটের ঠিকানা দিচ্ছি। এখানে প্রচুর জেব্রা পাজল আছে। অন্তত মাসখানেক ব্যস্ত থাকতে পারবেন। আমি নিজেই গত বছর প্রায় মাসখানেক বুঁদ হয়ে ছিলাম। ওয়েবসাইটের নাম ব্রেইনজিলা।
যারা আগে ধাঁধাটি শুনেননি, তাদের আইনস্টাইনের ধাঁধাটি সমাধান করতে পারলেন কিনা জানায়েন। হ্যাপি পাজলিং!