এক ছেলে কম্পিউটারে মজা করতে গিয়ে কিল বিল কিল বিল কিল বিল লিখে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছিল। ছেলেমানুষী কর্মকান্ড, কিন্তু আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এই কাজকে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনকে হত্যা করার নির্দেশনা হিসেবে চিহ্নিত করে সেই ছেলেকে খুজে গ্রেপ্তার করে ফেলেছে। বছর কয়েক পরে, আরেকটা ঘটনা ঘটল – একদম আমার নিজের বাংলাদেশে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইমেইল করে হত্যার হুমকীয় দিয়ে ফেলল এক তরুণ ছেলে। টক অব দ্য কান্ট্রি! অল্প কদিন পরেই, সম্ভবত তিন দিন, বাংলাদেশের পুলিশ সেই ছেলেটাকে ধরে ফেলল। ঢাকা শহরের কোন এক সাইবার ক্যাফে থেকে সে মেইলটা করেছিল।
লিজা ফায়ারস্টোন নামের এক পিএইচডি-ধারীর এক আর্টিকেল পড়ার সুযোগ হল সেদিন। সেখানে তিনি বিভিন্ন রেফারেন্স দিয়ে নার্সিসিজম মনোভাব গড়ে উঠার পেছনে সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা তুলে ধরেছেন। ১৯৮০ এবং ১৯৯০-র দশকে জন্মগ্রহণকারীদের ‘জেনারেশন মি’ হিসেবে চিহ্নিত করে একজন গবেষক দেখিয়েছেন – ১৯৮০র তুলনায় বর্তমানে শারীরিক স্থুলতার পাশাপাশি নার্সিসিজমও সমান হারে বেড়েছে। ফেসবুকে অনেক বন্ধু থাকা, বিভিন্ন ছবিতে নিজেকে ট্যাগ করা এবং কিছু সময় পর পর স্ট্যাটাস দেয়া নার্সিসিস্ট মনোবৃত্তির পরিচায়ক। তবে, গবেষকরা এও বলেছেন – শুধু সোশ্যাল মিডিয়াই দায়ী নয়, আরও প্রভাবক আছে, তবে সেগুলো সোশ্যাল মিডিয়ার তুলনায় কম প্রভাব বিস্তারকারী।
“Narcissists use Facebook and other social networking sites because they believe others are interested in what they’re doing, and they want others to know what they are doing.” – Laura Buffadi, a postdoctoral researcher at the Universidad de Dueto in Bilbao, Spain
আত্মকেন্দ্রিকতার এই ব্যাধি ভয়াবহ যার কিছু কিছু দিক বিভিন্ন ঘটনায় সামনে চলে আসে, যেমন সারাহ’র ঘটনা। গবেষকরা এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসার নানাবিধ সমাধান প্রদান করছেন, বিভিন্ন রকম গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছেন। সমাধানের উপায় যাই আসুক না কেন – সমাধান নির্ভর করবে সেই রোগীর উপরেই। একটু সচেতন হয়ে উঠে অপরের মতামতকে শ্রদ্ধার সাথে গ্রহণ করে লোককে দেখানোর মানসিকতা দূর করতে পারলেই ‘জেনারেশন মি’-র সদস্যরা ভালো কিছু করতে পারবে বলে বিশ্বাস করি।
আমি নিজেও ‘জেনারেশন মি’ সদস্যভুক্ত এবং নার্সিসিস্ট। চিকিৎসা চলছে, দোয়াপ্রার্থী।