এই নববর্ষে আমি বরিশালে। সাড়ে আটটায় কাকার ওয়ালটন বাইকে চড়ে গ্রামের ভেতর দিয়ে একেবেঁকে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের শেষ মাথায় কাকাদের বাড়িতে চলে গেলাম। বিনা নোটিশে আগমন, বৃদ্ধ দাদী আপ্যায়নের জন্য ট্রেতে করে যা নিয়ে এলেন – আমি উল্লসিত হয়ে গেলাম। এক বাটি সাদা খই, দাদীর পোষা মুর্গির ডিম পোচ, লবন দিয়ে মাখানো ছোট করে কাটা শশা, গুড় দিয়ে কষানো শুকনো চালতার আচার আর সেমাই।
![]() |
ছবি কৃতজ্ঞতা: ইন্টারনেট |
খেতে খেতে খই এবং মুড়ি ভাজার নিয়ম জানা গেল। মাটির হাড়িতে বালু বা ছাই উত্তপ্ত করে তার মধ্যে ধান ছেড়ে দিয়ে নাড়তে নাড়তে খই। খাওয়ার উপযোগি করতে ভাজার চেয়ে একটু বেশী কষ্ট করতে হয়। খইয়ের সাথে লেগে থাকা ধান ছড়াতে হয় , তারপর চালুনী দিয়ে চেলে ধানের খোসা ফেলে দিয়ে পাওয়া যায় খই। মুড়ি ভাজার পদ্ধতিও মোটামুটি এরকম – লবন দিয়ে চাল মেখে নিতে হয়। তারপর মাটির হাড়ি চুলায় তাপ দিয়ে দিয়ে টকটকে লাল করে ফেলতে হয়, হাড়িতে রাখা বালিও ফুটে লাল রং হয়। সেই তপ্ত বালিতে চাল নেড়ে চেড়ে তৈরী হয় মুড়ি। মেশিনে ভাজা মুড়িতে ইউরিয়া মেশানো হয়, বড়সড় হওয়ার জন্য। মেশিনের একদিক থেকে চাল দিলে অন্যদিক থেকে মুড়ি বের হয়। ঝামেলা অনেক কম।
গুঠিয়া সন্দেশের রেসিপি এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া অঞ্চল থেকে। গুঠিয়া সন্দেশের প্রধান বিক্রেতা পরিমল চন্দ্র ভদ্র জানান, আমার কাকা সতীশ চন্দ্র দাস পূর্বে আমাদের দোকানেই ছিলেন, পরে বিএম কলেজের সামনে দোকান দেন। পাকিস্তান আমলে তিনি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া চলে যান। সেখানকার এক কারিগরের কাছে তিনি এর রেসিপি শিখে নেন। অবশেষে ১৯৬২ সালে তিনি দেশে এসে নতুন ধরনের এই সন্দেশ চালু করেন।