কালজয়ী সব ওয়েস্টার্ন সিনেমার নির্মাতা সার্জিও লিওনি পরিচালিত ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ সিনেমাটি শুধু ওয়েস্টার্ন ঘরানার ক্ষেত্রেই নয়, বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে বিশ্বের সেরা সিনেমাগুলোর তালিকায় সামনের দিকে অবস্থান করে। সার্জিও লিওনির সবগুলা সিনেমা দেখলে তার নির্মান স্টাইল বোঝা সম্ভব হয়, গুড-ব্যাড-আগলি তার নির্মানপদ্ধতি থেকে ব্যতিক্রম কিছু নয়। তিনটি চরিত্র – একজন গুড, একজন ব্যাড এবং আরেকজন আগলি – তারা লুকায়িত সম্পদের দখল নেয়ার জন্য চেষ্টা চালায়। ‘দ্য গুড’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ওয়েস্টার্ন সিনেমার হিরো হিসেবে ক্লিন্ট ইস্টউড সিনেমার ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে।
সার্জিও লিওনীর গুড-ব্যাড-আগলি থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে কোরিয়ান নির্মাতা কিম জি-উন ২০০৮ সালে নির্মান করেছেন ‘দ্য গুড দ্য ব্যাড দ্য উইয়ার্ড’। প্রায় একই নাম ও বিষয়বস্তু নিয়ে নির্মিত এই দুই সিনেমার মধ্যে বিস্তর ফারাক কিন্তু দুটোই সমান উপভোগ্য।
গুড-ব্যাড-উইয়ার্ড সিনেমার প্রেক্ষাপট ১৯৩০ এর দশক যখন কোরিয়া চীনের অন্তর্ভূক্ত ছিল এবং কোরিয়ানরা তাদের স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল। এ কারণেই গুড-ব্যাড-উইয়ার্ড একটি ওরিয়েন্টাল ওয়েস্টার্ন সিনেমা। সার্জিও লিওনির ওয়েস্টার্ন সিনেমাগুলোকে বলা হয় স্প্যাগেটি ওয়েস্টার্ন কারণ এই সিনেমাগুলোর কাহিনী আমেরিকা-কেন্দ্রিক হলেও এর নির্মাতারা ছিলেন ইটালিয়ান এবং তারা ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে এই সিনেমাগুলো নির্মান করতেন। এছাড়াও ওয়েস্টার্ন সিনেমার সাথে স্টাইলের দিক থেকেও পার্থক্য ছিল। নির্মাণরীতির জনপ্রিয়তা এবং সংখ্যার আধিক্য স্প্যাগেটি ওয়েস্টার্ন সিনেমাকে সিনেমার একটি ‘জনরা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও ওরিয়েন্টাল সিনেমা কতটুকু স্বীকৃতি পাবে সেটা সন্দেহযুক্ত। স্বীকৃতি পাক বা না পাক, গুড-ব্যাড-উই্য়ার্ড সিনেমাটি নিজ বৈশিষ্ট্যে স্মরনীয় হয়ে থাকবে।
গুড-ব্যাড-আগলি’র মত এখানেও তিন চরিত্র গুড, ব্যাড এবং উইয়ার্ড যথারীতি গোপন সম্পদের ভান্ডারের এক ম্যাপের পেছনে ছুটে বেড়ায়। তিনটি চরিত্রকে নির্মাতা তৈরী করেছেন সম্পূর্ন ভিন্নরূপে। গুড চরিত্রে অভিনয় করেছে জাং উ-সাং (আ মোমেন্ট টু রিমেম্বার), তার মাথায় ওয়েস্টার্ন হ্যাট, ব্যবহৃত অস্ত্র একটি বন্দুক। ব্যাড চরিত্রে অভিনয় করেছে লি বেয়ং-হান (জি আই জো: রাইজ অব দ্য কোবরা)। পোষাকে সে খুব ফিটফাট, লম্বা স্টাইলিশ চুল তার ডান চোখকে সবসময় আড়াল করে রাখে, অস্ত্র হিসেবে তার পছন্দ ছুড়ি। অবশ্য পিস্তল চালনায়ও সে বেশ দক্ষ।
অন্যদিকে, দ্য উইয়ার্ড চরিত্রে সং কাং-হো একজন চোর। মূলত কাহিনীকে সামনের দিকে নেতৃত্ব দিয়ে নিয়ে গেছে এই উইয়ার্ড চরিত্রটি। সিনেমায় যাবতীয় হাস্যরসের উৎপাদকও এই উইয়ার্ড চরিত্রটি। অস্ত্র হিসেবে সে ব্যবহার করে মেশিন পিস্তল যা তার দুই বগলের নিচে হোলস্টারে ঝোলে।
পিওর এন্টারটেইনমেন্ট বলতে যা বোঝায় গুড-ব্যাড-উইয়ার্ড তার পিওর এক্সাম্পল। প্রায় দু’ঘন্টা দশ মিনিটের এই সিনেমাটি অসাধারণ গতিসম্পন্ন, ফলে কোথাও বিন্দুমাত্র মেদ জমার সুযোগ পায় নি। গুড-ব্যাড-আগলি’র তুলনায় নির্মাতার গল্প বলার ভঙ্গি এখানে সম্পূর্ন ভিন্নরকম। সেই সাথে আছে মিউজিকের ব্যবহার, চমৎকার সব অ্যাকশন দৃশ্যের দৃশ্যায়ন। ক্যামেরা মুভমেন্টগুলো নজরকারা, সম্পাদনার গতিও বেশ সহযোগিতা করেছে এক্ষেত্রে।
গুড-ব্যাড-আগলি’র সাথে গুড-ব্যাড-উইয়ার্ডের তুলনা কখনোই সম্ভব নয়, তেমনটি চেষ্টাও করছি না, নির্মান পদ্ধতির ভিন্নতার কারণেই এই সিনেমাটিও ওয়াচলিস্টে রাখা সম্ভব। নির্মল বিনোদনের জন্য পারফেক্ট সিনেমা।
লেখা ভালো লাগল।
শুভ কামনা।
খুব বিরক্তি নিয়া লিখলাম বস। স্টার্টিং লাইন লেখার জন্য আড়াই ঘন্টা বসেছিলাম। শেষমেষ যা ইচ্ছা লিখছি – আজাইরা। 🙁
সিনেমাডা দেহি নাই। দেখতে ওইবে। তয় লি বেয়ং-হানের সিনেমা আগে বোধহয় দেখছি। শুভ কামনা….
ধইন্যবাদ। শুভকামনা গৃহীত হইল 🙂
জটিল মুভি, লাস্টে চোর (ওয়িয়ার্ডের) আসল পরিচয় বাইর হওয়ার পর যে টুইস্ট খাইছিলাম তা আসা করি না,
আর সব কটা গ্রুপ মিলা ডেজার্টে রেইস ত এপিক
অসাধারন এবং চরম এক সিনেমা।
দারাশিকো’র ব্লগে স্বাগতম জিসান।
ভালো থাকুন, আবার আসবেন 🙂
movie tar link ta den vai..
http://www.kat.ph – এখানে সার্চ দিন। পেয়ে যাবেন।
ধন্যবাদ।