
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার পরবর্তী চলচ্চিত্রের ঘোষনা দিয়েছেন। এই দেশে একটি অলিখিত সংস্কৃতি আছে – একটি সিনেমা মুক্তির পর পরবর্তী চলচ্চিত্রের ঘোষনা দেয়া। ফারুকী তার ব্যতিক্রম। তিনি একটি চলচ্চিত্রের কাজ শেষ করার আগেই পরের চলচ্চিত্রের ঘোষনা দেন এবং এবারও ‘ডুব’ শেষ করার আগেই পরের ছবির ঘোষনা দিয়েছেন। ছবির নাম ‘হলি বেকারী’। নাম শুনে যা ধারনা করেছেন ঠিক তাই, গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারীতে হামলা নিয়ে নির্মিত হবে তার পরের ছবি।
ঘোষনাটা তিনি বাংলাদেশে থাকতে বাংলাদেশের পত্রিকায় দিতে পারতেন এবং দেন নাই, এই কারণে কারও কারও ক্ষোভ দেখলাম। ব্যাপারটা অযৌক্তিক। একজন আর্ন্তজাতিক নির্মাতা হিসেবে ফারুকী আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক্সপোজার চাইতেই পারেন, চাওয়া উচিত কারণ এটা তাকে তার চলচ্চিত্র নির্মান ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতে বেশি সহযোগিতা করবে, এই কারণে ঘোষনাটা ‘ভ্যারাইটি‘র কাছে দেয়া খুবই যুক্তিযুক্ত এবং প্রশংসনীয়।
ভ্যারাইটি’র কাছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী আরও বলেছেন, হলি বেকারী হবে ওয়ান-শট ফিল্ম। অর্থ্যাৎ একটি লম্বা টেকে ছবির গল্প বলা হবে। আলেহান্দ্রো গঞ্জালেস ইনারিতু’র বার্ডম্যান ওয়ান-শট ফিল্ম। অবশ্য প্রযূক্তির এই উন্নতির যুগে প্রকৃতপক্ষে এক শটে সিনেমা নির্মিত হয় না বরং নির্মান এবং সম্পাদনা এতটাই নিখুঁত হয় যে সাধারণ দর্শকের পক্ষে শটগুলোর মধ্যে পার্থক্য করা সম্ভবপর হয় না।
কেমন হবে ‘হলি বেকারী’। ফারুকী তার আগের ছবিগুলো যেভাবে বানিয়েছেন তাতে নিশ্চিত করে বলা যায়, হলি আর্টিজানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মিত হলেও হলিউডি স্টাইলের মারদাঙ্গা কোন ছবি হবে না, তবে মানবিক ব্যাপার-স্যাপার উপস্থিত থাকবে। ভ্যারাইটিতে অবশ্য কিছুটা প্রকাশ পেয়েছে – ছবিতে জঙ্গীবাদ, অসহিষ্ণুতা ইত্যাদির উত্থান, দক্ষিন এশিয়ার রাজনীতি ইত্যাদি বিষয় উঠে আসবে এবং দেশীয় শিল্পী কলা-কুশলীদের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশীয় আন্তর্জাতিক অভিনেতারাও থাকবেন। পিঁপড়াবিদ্যা, ডুব ইত্যাদির পর ফারুকীর এ ধরনের বক্তব্যের প্রতি আস্থা রাখা যায়।
গুলশান হামলা এই দেশের এবং আন্তর্জাতিক – দুক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এমন একটি ঘটনা চলচ্চিত্রে উঠে আসার মত ঘটনা, সেটা যদি এই দেশের কোন নির্মাতার হাত ধরে উপস্থাপিত হয় তাহলে সেটাও ভালো লাগার মত ঘটনা। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী’র জন্য শুভকামনা জানালাম।