“প্রচুর খারাপ সিনেমা যেখানে হয় সেখানে ভালো ছবি তৈরি হওয়া মুশকিল। আলাদাভাবে একজনের যত মেধা থাকুক, সে ভালো ছবি করতে পারবে না। সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক যখন ছবি বানাতেন, তখন বাণিজ্যিক ছবির পরিচালকদের নাম দেখুন- তপন সিংহ, তরুণ মজুমদার, অজয় কর, অসিত সেন। তাদের যে মাপ আর ছবির ধাপ, তার পাশে দাঁড়িয়ে সত্যজিৎ রায় বানালেন ‘পথের পাঁচালী’। যেখানে তেলেগু সিনেমার রিমেক আর আইটেম নাচ হয় সারাক্ষণ, সেখানে কী করে ভালো ছবি হবে? হবে না। বাণিজ্যিক শিল্প যদি না ভালো ছবি তৈরি করতে পারে, তাহলে বিকল্পধারার ছবিরও উন্নতি হবে না। অসম্ভব, এটা হতে পারে না। ‘পাগলু টু’ আর ‘পথের পাঁচালী’ পাশাপাশি হতেই পারবে না, সম্ভব নয়। “
বলেছেন কোলকাতার সঙ্গীতশিল্পী-চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অভিনেতা Anjan Dutta। বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি অতি সম্প্রতি। বাংলা নিউজের সাথে একটি সাক্ষাতকারে বলেছেন এ কথা। সম্পূর্ণ সাক্ষাতকারের ভালোলাগা অংশটুকু এই স্ট্যাটাসে তুলে দিলাম।
চলচ্চিত্রকার হিসেবে আপনার অনুপ্রেরণা কারা?
অঞ্জন দত্ত : ছোটবেলায় অজস্র ছবি দেখেছি। বিলি ওয়াইল্ডার আমার ভীষণ পছন্দের পরিচালক। উডি অ্যালেনের কাজও ভালো লাগে। এখন পৃথিবী এগোচ্ছে ডিজিটাল ছবির দিক দিয়ে। ইদানীং দক্ষিণ এশিয়ার চীন, তাইওয়ানে অনেক ভালো ভালো নির্মাতা এসেছেন। লাতিন আমেরিকান, মেক্সিকোন নির্মাতাদের কাজও আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। বিশেষ করে ইনারিতুর কাজ। মধ্যপ্রাচ্যের কথা যদি বলেন তাহলে এই মুহূর্তে আমার ভীষণ পছন্দের পরিচালক আসগর ফারহাদি। তাকে ধ্রুপদী নির্মাতা বলা যায়। আমার তো মনে হয়, তার মতো ছবি পৃথিবীর আর কেউ বানাচ্ছে না।
আপনার অভিজ্ঞতা কী বলে, চলচ্চিত্র কি সমাজ বদলাতে পারে?
অঞ্জন দত্ত : নাহ! চলচ্চিত্র মানুষকে ও তাদের ভাবনা-চিন্তাকে প্রভাবিত করতে পারে। কিছুক্ষণের জন্য মানুষকে সিরিয়াস করে দিতে পারে। মানুষকে ভাবাতে, আনন্দ ও দুঃখ দিতে পারে। কিছুক্ষণের জন্য ওই মানুষটার সত্যি সত্ত্বাটার মুখোশ খুলে যায় একটা ভালো সিনেমা দেখলে বা ভালো বই পড়লে। যদি সেটা সত্যি সত্যি ভালো ছবি হয়। অভিনয় করে বা ছবি বানিয়ে সমাজ বদলানো যায় না। সমাজ বদলাতে গেলে মূল জায়গা অর্থাৎ শেকড় থেকে বদলাতে হয়। ছবি দেখে একটা লোক পরদিন ঘুম থেকে উঠে ঘরদোর, রাস্তাঘাট পরিষ্কার করে ফেলবে, এটা হয় না।