দুইজন মহিলা পায়ের চাপে পিষ্ট হয়ে মারা গেছেন আজ সকালে। তাদের একজন জমিলা খাতুন, বয়স ৬০, অন্যজনের নাম জানা যায় নি, বয়স আনুমানিক ৫৫ বছর। এই দুইজন তাদের মালিকানার সম্পদ বুঝে নেয়ার জন্য জড়ো হয়েছিলেন মানিকগঞ্জ শহরের গার্লস স্কুল রোডের ব্যবসায়ী মাহবুব মোরশেদ রনুর বাসার সামনে। সম্পদের মালিকানা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা। সম্পদশালী মুসলমানের সম্পদের শতকরা আড়াই ভাগ সেই ব্যক্তির নয়, যাকাতের বিধানের মাধ্যমে সেই সম্পদে কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তির মালিকানার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে কমপক্ষে দেড় হাজার বছর আগে।
জমিলার সম্পদের মালিকানা জমিলাকে বুঝিয়ে দেয়ার ইচ্ছেই ছিল রনুর। কিন্তু জমিলার ইচ্ছেকে তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছেয় জমিলার অর্থে কেনা শাড়ি জমিলাকে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। শুধু জমিলা নয়, তার মত সাত হাজার ব্যক্তির সম্পদে শাড়ি-লুঙ্গি কিনে তাদেরকে মালিকানা বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন রনু। নিজের অর্থে কেনা শাড়ি বুঝে নিতে হাজির হয়েছিলেন জমিলা, শাড়ি পান নি, মৃত্যুকে পেয়েছেন।
বেচে যাওয়া ছয় হাজার নয়শ আটানব্বুই জন তাদেরকে দেয়া একটি করে শাড়ি বা লুঙ্গি দিয়ে কি করবে মাহবুব মোরশেদ? ক্ষিদে পেলে তারা কি শাড়ি চিবিয়ে খাবে?
জমিলা কিন্তু ছাড়বে না। সর্বোচ্চ আদালতে মামলা ঠুকে দিয়েছে সে তোমার নামে। তোমার গুরুতর অপরাধ দুইটি –
১. জমিলাদের সম্পদ তাদেরকে সরাসরি না দিয়ে তাদের বিনা অনুমতিতে সেই অর্থে শাড়ি-লুঙ্গি কিনেছো তুমি। জমিলাদের চাই নগদ অর্থ, যেই অর্থে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করতে পারে তারা। শাড়ি লুঙ্গি কেনার সিদ্ধান্ত নেয়ার তুমি কে মাহবুব মোরশেদ?
২. জমিলাকে হত্যা করেছো তুমি। বাংলাদেশের আদালতে তোমার এই হত্যাকাণ্ডের কোন বিচার হয়তো হবে না, কিন্তু জমিলা যে আদালতে মামলা করেছে সেই আদালতের বিচার এড়াবে কিভাবে তুমি?
রেডি হও মাহবুব মোরশেদ। মামলা হয়ে গেছে, শুনানির ডাক এসে যাবে যে কোন দিন। যদি পারো, ডাক আসার আগে আবু বকর-ওমর (রা) এর যাকাত বিতরণ পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিও। হয়তো তোমার উপলব্ধিতে জমিলা তার মামলা তুলে নিবে একদিন।