সম্ভবত বাংলাদেশের সিনেমাহলগুলোতে রমজান মাসে প্রদর্শিত সিনেমার সবগুলোই অশ্লীল। অন্যভাবে বললে, এ সময়ে সবচে অশ্লীল ছবিগুলো প্রদর্শিত হয়!
এটা আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষন। সারা বাংলাদেশের কথা বলছি না তবে কমপক্ষে তিনটি বিভাগীয় জেলা শহরসহ আরও কিছু জেলাশহরের সিনেমাহলের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। কেন – এই প্রশ্নের উত্তরে কিছু কারণ পাওয়া যেতে পারে। রমজান মাসে কোন ছবি মুক্তি পায় না। নির্মাতারা ঈদে ছবি মুক্তি দেয়ার প্রস্তুতি নেন, ঈদের ছবি বেশী দামে বিক্রী হয়। প্রদর্শকরাও ঈদের ছবি চালানোর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। কিন্তু রমজান মাসে তো সিনেমাহল বন্ধ থাকে না। সুতরাং, এই সময়ে তারা পুরানো ছবি অপেক্ষাকৃত কম খরচে চালানোর উদ্যোগ নেন।
আমি যে সকল হল দেখেছি তার সবক’টাতেই রমজান মাসের প্রতিসপ্তাহে একইসাথে কমপক্ষে দুটো করে সিনেমা প্রদর্শন করা হয় এবং এদের কমপক্ষে একটি খুবই অশ্লীল সিনেমা। গত বছরের রমজান মাসে বরিশালের অভিরুচি সিনেমাহলের ভেতরে যে সিনেমার পোস্টার লাগানো হয়েছিল তাতে পরিচালক, প্রযোজকসহ অন্য কোন ধরনের তথ্যই নেই, এমনকি সিনেমার নামও নেই। ধারনা করি – ওটা আসলে কোন সিনেমা নয়, অন্ধকার যুগের অশ্লীল কাটপিসের সমাবেশমাত্র।
রমজান মাসে সিনেমাহলের এই অবস্থা সম্পর্কে কেন বলছি? কারণ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিঞা আলাউদ্দিন রমজানের পবিত্রতা রক্ষার্থে অশ্লীল পোস্টার প্রদর্শন না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ছবির পরিবেশকরা অশ্লীল আপত্তিকর পোস্টার সরবরাহ করলেও আপনারা সেসব পোস্টার প্রদর্শন থেকে বিরত থেকে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করবেন। তা না হলে এ কারণে যদি কোন অনাকাঙিক্ষত ঘটনা ঘটে এর জন্য পরিবেশকের পাশাপাশি প্রদর্শকদেরও দায়ভার গ্রহণ করতে হবে।’
মানবজমিনে প্রকাশিত রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে – ‘প্রতি বছরই রমজান মাস এলে একশ্রেণীর অসাধু চলচ্চিত্র ব্যবসায়ী অশ্লীল আপত্তিকর পোস্টার প্রদর্শন করে অভিযুক্ত ছবিগুলো প্রদর্শন করে থাকেন প্রশাসনের নাকের ডগার ওপর দিয়ে। বর্তমানে প্রশাসন নিষ্ক্রিয় থাকায় এ চক্রটি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ডেমরা, সিদ্ধিরগঞ্জ, টঙ্গী, জয়দেবপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান ইতিমধ্যেই অশ্লীল পোস্টারে ছেয়ে গেছে। গুলিস্তান বিল্ডিং ও কাকরাইল সিনেমাপাড়ায় চিহ্নিত, অসাধু কিছু অশ্লীল ছবির ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে আবারও অশ্লীল চলচ্চিত্র প্রদর্শনে তৎপর হয়ে উঠেছেন। পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগেই তারা ভয়ংকর হয়ে উঠেছেন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি অশ্লীল ছবির প্রদর্শন বন্ধে সরকার এবং টাস্কফোর্সের কাছে আবেদনও জানিয়েছে।’
এখন দেখতে হবে – সরকার এবং টাস্কফোর্স এই আবেদনকে গুরুত্ব দিয়ে রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষায় কতটুকু ভূমিকা পালন করেন!
ছবি: স্বপ্নেরভুবন
প্রেম প্রয়োজন, কারণ প্রেমের
কারণে পাঁচ-ছয়টা গান সম্ভব।
প্রেম প্রয়োজন, কারণ এর কারণে
প্রেমিক নায়কের তিন-পাঁচটা
অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয় করা সম্ভব।
প্রেম প্রয়োজন কারণ এর অভাবে
বিরহদৃশ্য এবং গান উপস্থাপন করা
প্রায় অসম্ভব। প্রেমের প্রয়োজনে
নায়িকার উপস্থিতি, কিন্তু
নায়িকার উপস্থিতিতে বাকী যত
কর্মকাণ্ড তাতে নায়িকার
উপস্থিতি সিনেমার দর্শকেরই মত
– হাত পা গুটিয়ে দেখতে থাকা।