ছিটমহল, তিনবিঘা করিডোর আর দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা শব্দতিনটির সাথে পরিচয় অনেকদিন হল। তাত্ত্বিক জ্ঞান ছাড়া আর কিছুই না সেগুলো। আজ স্বচক্ষে দেখা হল। ম্যাপটা খেয়াল করুন, তাহলেই বুঝতে পারবেন। ছবির ডান দিকে সরু বর্ডার রেখার ডানে বাংলাদেশ, এবং বামে ভারত। আবার ছবির বামদিকে সরু বর্ডার রেখার বামে বাংলাদেশ (দহগ্রাম ছিটমহল) এবং ডানে ভারত। মাঝের এই অংশটুকু ভারতের জমি। ছিটমহলের মানুষজন নানারকম সমস্যার মধ্যে বাস করতো, আপনাদের জানার কথা। বিশেষ করে, নির্দিষ্ট সময় ছাড়া বাংলাদেশের মূল ভূখন্ডে প্রবেশের অনুমতি ছিল না। এখন ২৪ ঘন্টাই যাতায়াত করা যায়।
দুই বর্ডার রেখার মাঝে আয়তাকার গ্রে অংশটুকু বাংলাদেশের লিজ নেয়া জমি। এই রাস্তা দিয়েই ভারতের জমির উপর দিয়ে বাংলাদেশে পৌছানো হয়। এই লিজকৃত জমির পরিমান সাড়ে সাত বিঘা। এই অংশটুকুকেই তিনবিঘা করিডোর বলা হয়। এই আয়তাকার অংশে বিজিবি এবং বিএসএফ দুই পক্ষেরই প্রহরা থাকে।
দহগ্রাম আঙ্গরপোতা অংশের আয়তন ৩৫ বর্গ কিলোমিটার। প্রচন্ডরকম দরিদ্র সব মানুষ বাস করে ওই অংশে। তাদের নিজেদের জমি নাই, আয় উপার্জনের জন্য অন্যের জমিতে কামলা খাটা ছাড়া অন্য উপায় নাই, শিক্ষা নাই, চিকিৎসা নাই। এরশাদ সরকারের সময় দারুন একটা হাসপাতাল বানানো হয়েছিল, চমৎকার দেখতে সেই হাসপাতালে কোন ডাক্তার নাই, থাকে না। সম্ভবত কোন এনজিও-র স্বাস্থ্যসেবাও নেই। সম্ভবত এ কারণেই এখানে মৃত্যুহার বেশী। এক বৃদ্ধমহিলাকে পাওয়া গেল, তার আটটি ছেলে মেয়ে ছিল, কিন্তু এখন একজনও বেচে নেই, আরেকজনের ছয়টি ছিল, এখন দুটি আছে। অদ্ভুত জীবন!
অদ্ভুত একটা বিষয়। দারুন রোমাঞ্চিত 🙂