টেলিভিশন: কল্পনার ঘোড়দৌড়

নতুন সিনেমার তালিকায় আছে টেলিভিশন
টেলিভিশন ছবির পোস্টার

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সবচে আলোচিত চলচ্চিত্রের নাম ‘টেলিভিশন‘। মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর পরিচালনায় নির্মিত এই চলচ্চিত্র বাংলাদেশে মুক্তির আগেই বারবার আলোচনায় এসেছে – বিশেষ করে চিত্রনাট্য তৈরী এবং সম্পাদনার জন্য ‘এশিয়ান সিনেমা ফান্ড‘ প্রাপ্তি এবং এশিয়ার সেরা ‘পুসান চলচ্চিত্র উৎসব’-এর সমাপনী দিনে ‘টেলিভিশন’ সিনেমার প্রদর্শনী বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে আবারও তুলে ধরেছে। এছাড়াও মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর নাটক ও বিজ্ঞাপনে অভ্যস্ত দর্শকবৃন্দ এই মুভিটির জন্য প্রতীক্ষা করেছে দীর্ঘদিন। সকল প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে মুক্তি পেল চলচ্চিত্রটি – এখন থেকে সিনেমাহলে চলবে ‘টেলিভিশন’।

আনিসুল হক ও মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী’র যৌথ রচনায় ‘টেলিভিশন’ ছবির ঘটনাস্থল বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার কোন চর অঞ্চল, নাম চর মিঠানূপুর। মিঠানূপুর গ্রামে কোন টেলিভিশন নেই, কারণ গ্রামের চেয়ারম্যান আমিন যিনি একজন ধর্মপ্রাণ বয়স্ক মানুষ, গ্রামের তরুন সমাজের ভালোর জন্য, তারা যেন বিপথে না যায় সে উদ্দেশ্যে গ্রামে টেলিভিশন নিষিদ্ধ করেছেন, কোন বাড়িতেই টিভি চলে না। হিন্দু ধর্মাবলাম্বী শিক্ষক কুমার টেলিভিশন কিনে আনলে গোপনে সকলে তার বাড়িতে ভিড় জমায়, টিভি দেখে। গ্রামের মানুষের এই আকাঙ্খাকে শেষ পর্যন্ত কতটা দমিয়ে রাখতে পারবেন আমিন চেয়ারম্যান, আদৌ পারবেন কিনা – সে গল্পই বলা হয়েছে ‘টেলিভিশন’ চলচ্চিত্রে।

এই গল্পের সবচে বড় চমক হল – এই গল্পের সময়কাল বর্তমান। মিঠানূপুর গ্রামে কম্পিউটার আছে, ভালো স্পিডের ইন্টারনেট আছে, স্কাইপে ব্যবহার করে ভিডিও চ্যাট করা যায় কিন্তু গ্রামে কোন টেলিভিশন নেই। আমিন চেয়ারম্যান এতটাই প্রভাবশালী যে গ্রামে কোন টেলিভিশন প্রবেশ করে না, যুবক ছেলেদের হাতে মোবাইল ফোন থাকে না। টেলিভিশন প্রদর্শনের এই বাঁধা ত্রিশ বছর আগে বর্তমান ছিল যখন একদিকে টিভি সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ছিল না এবং যখন টিভি দেখা জায়েজ কি নাজায়েজ তা নিয়ে বিতর্ক ছিল।

অ্যামিশ নামে এক জাতি আমেরিকায় বাস করে, তারা নিজস্ব এলাকার মধ্যে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে না, চলাচলের জন্য এখনো ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করে, বিদ্যুৎ ব্যবহার করে না। বাংলাদেশে ‘অ্যামিশ’ জাতির মত কোন এলাকা নেই, বর্তমান সময়ে কোন চেয়ারম্যানের প্রভাবও এতটা হওয়া সম্ভব না যে টেলিভিশনের মত ব্যক্তিগত দৈনন্দিন বিনোদনের বস্তুর ব্যবহার নিয়ন্ত্রন করতে পারেন।

তবে কি ছবিতে টেলিভিশন নামের সাথে যে পঙ্খীরাজ ঘোড়া উড়ছে, কাহিনী সেভাবে জোর করে বর্তমানে আসতে চাইছে? টেলিভিশনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রনের জন্য চেয়ারম্যান যে সকল উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন সেটা তার বাস্তবতা নিরূপন প্রশ্নসাপেক্ষ, বিশেষ করে, সিনেমার একদম শুরুতেই বাংলাভিশন চ্যানেলের রিপোর্টার যে রিপোর্ট করেন, তা প্রচারিত হলে চেয়ারম্যানের এ ক্ষমতা খর্ব হতে বাধ্য – যা সিনেমায় ফুটে উঠে নি।

চলচ্চিত্রে আমিন চেয়ারম্যানের (কাজী শাহীর হুদা রুমী) বিপরীতে আছে তার যুবক ছেলে সোলায়মান (চঞ্চল চৌধুরী), তার সহযোগী মজনু (মোশাররফ করিম) এবং মালয়েশিয়া প্রবাসী বাবার সুন্দরী মেয়ে কহিনূর (তিশা)। সোলায়মান এবং কহিনূরের প্রেম ও বিকাশে সহযোগিতা করে কহিনূরের প্রতি অনুরক্ত যুবক মজনু। এই চরিত্রগুলো মূলত ছবিয়াল গ্রুপের প্রচলিত বিভিন্ন রকম হাস্যরস তৈরীতে সাহায্য করলেও শেষ পর্যন্ত কাহিনীর গতিপথ তৈরীতে ভূমিকা রেখেছে।

‘টেলিভিশন’ সিনেমার অন্যতম ভালো দিক এর ভাষা। ছবিয়াল গ্রুপের ভাষা থেকে বের হয়ে এসে এফডিসি নির্মিত আঞ্চলিক ভাষা নয় বরং নোয়াখালী অঞ্চলের ভাষাই মূল ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এর আগে মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান পরিচালিত ‘পোকা মাকড়ের ঘরবসতি’ ছবিতে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা উল্লেখযোগ্যভাবে তুলে ধরা হয়েছিল বলে মনে পড়ে। সেদিক থেকে মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তারপর বলতে হয়, সিনেমার গান। যদিও পূর্ণাঙ্গভাবে কোন গানই সিনেমায় পাওয়া যায় নি, ‘কানামাছি মিথ্যা, কানামাছি সত্য’ গানটির অংশবিশেষ খুবই দারুনভাবে কাহিনীর সাথে মিলে ফুটে উঠেছে। ছবির সিনেমাটোগ্রাফারও ধন্যবাদ পাবেন, অর্থবহ দারুন কিছু ফ্রেম তৈরীর জন্য। কহিনূরের ছোট ভাইয়ের প্লাস্টিক গাড়ির ব্যবহার নিয়ে ছোট যে কটা দৃশ্য পাওয়া যায় তা পরিচালক ফারুকীর ডিটেইলস সম্পর্কে মনযোগিতাকে প্রকাশ করে।

অভিনয়ের জন্য বলতে হবে কাজী শাহীর হুদা রুমী’র অভিনয়। গ্রামের প্রভাবশালী মুরুব্বী চরিত্রে তার অভিনয়ের পাশাপাশি মুখভঙ্গি প্রশংসনীয়। তার চরিত্রটি ভালো-মন্দ মিলিয়ে তৈরী একজন মানুষের। তিনি হয়তো সবার চাওয়ার বিপক্ষে গিয়ে তার সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছেন, কিন্তু তিনি যে অন্যায়ভাবে কোন সুযোগ নেয়ার জন্য এ কাজ করছেন না বরং সবার ভালোর দিকে নজর রাখতে গিয়েই তার এ কাজ – তা দারুনভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন তিনি।

চেয়ারম্যান চরিত্রটি ভালো না মন্দ তা বিচার করবে দর্শক – পরিচালক বা অভিনেতা এই সিদ্ধান্ত গ্রহনে কোনই প্রভাব বিস্তার করে না – এটা ‘টেলিভিশন’ এর অন্যতম উল্লেখযোগ্য বিষয়। অন্যান্য অভিনেতাদের মধ্যে মোশাররফ করিম এবং চঞ্চল চৌধুরী তাদের যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন। তবে, সোলায়মান চরিত্রটির বয়স ও পেশা সম্পর্কে সন্দিহান হতে হয় একই সাথে ব্যবসা পরিচালনা এবং রাতে পড়ার টেবিলে দৃশ্যে। তার চরিত্র চিত্রায়নে পরিচালক আরেকটু যত্নবান হতে পারতেন। চপলা তরুনীর চরিত্রে তিশা বরাবরের মতই ভালো অভিনয় করেছেন।

সিনেমার সাথে অপ্রাসঙ্গিক হলেও বলতে হবে সিনেমাহলের পরিবেশ ও অবস্থার কথা। গত এক বছরে সকাল দশটার শো-তে এত পরিমান দর্শক দেখা যায় নি। একই ভাবে, সিনেমা চলার সময় দর্শকদের চিৎকার, উল্লাস-ধ্বনিও অপেক্ষাকৃত নতুন। বলাকা সিনেমাহলের প্রজেক্টরকে পরিবর্তন করতে হবে যেন সিনেমা চলার সময় পর্দার ছবি একবার অন্ধকার এবং একবার আলোকিত না হয়। বলা বাহুল্য, এই সমস্যার কারনে কোনটা সিনেমাটোগ্রাফারের কেরামতি, কোনটা প্রজেক্টর অপারেটরের – সেটা বোঝা দুঃসাধ্য। পাশাপাশি, সাউন্ড সিস্টেমকে উন্নত করে সব ডায়লগ যেন কান পর্যন্ত পৌছায় সে ব্যবস্থাও করা উচিত।

টেলিভিশন যন্ত্রের ভালো মন্দ দুই প্রভাবই আছে। একজন ধর্মীয় মূল্যবোধ সম্পন্ন ব্যক্তি ভালোকে গ্রহন করার উদ্দেশ্যে টেলিভিশনকে বৈধতা দেবেন নাকি মন্দকে প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে অবৈধ করবেন সেটা তার ধর্মীয় বিবেচনাবোধের উপর নির্ভরশীল। চেয়ারম্যান যে সকল কারণে টেলিভিশন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছেন, সেগুলো বিভিন্ন দৃশ্যাবলীর মাধ্যমে চলচ্চিত্রেই প্রকাশিত। ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকে যদি কেউ এ কারনে টেলিভিশনের বিরোধিতা করে তবে তা যেমন তার ব্যক্তিগত সংকীর্ণতাকে পরিচয় করে না, তেমনি ধর্মকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে না। টেলিভিশন চলচ্চিত্রটির দর্শকরা এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে পারেন।

আমি জানি না, বাংলাদেশ ছাড়া অন্যান্য দেশের দর্শকরা, যারা বাংলাদেশ সম্পর্কে সামান্যই জানেন, তারা ‘টেলিভিশন’ দেখার পর বাংলাদেশকে ধর্মীয় গোড়াঁমির দেশ হিসেবে ভাববেন কিনা, তবে আশংকা দূর করতেও পারছি না। চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্যে চেয়ারম্যানের পুত্র সোলায়মান তার বাবার কাছে ঢাকা গিয়ে ব্যবসা করে বাবার মুখ উজ্জল করার উদ্দেশ্যে ঢাকা যাওয়ার অনুমতি চায়। জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমার মুখ কি কালিমাখা নাকি যে ঢাকা গিয়ে ঘষে ঘষে কালি দূর করে উজ্জ্বল করতে হবে?’ খুবই অর্থপূর্ণ বক্তব্য। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করতে তার মুখ যেন কল্পিত কালিতে লেপে না যায় সেদিকে সতর্ক খেয়াল রাখা চাই।

রেটিং: ৩.৫/৫

ছবিসূত্র: ইন্টারনেট

About দারাশিকো

আমি নাজমুল হাসান দারাশিকো। লেখালিখির প্রতি ভালোবাসা থেকে লিখি। পেশাগত এবং সাংসারিক ব্যস্ততার কারণে অবশ্য এই ভালোবাসা এখন অস্তিত্বের সংকটে, তাই এই ওয়েবসাইটকে বানিয়েছি আমার সিন্দুক। যোগাযোগ - darashiko(at)gmail.com

View all posts by দারাশিকো →

46 Comments on “টেলিভিশন: কল্পনার ঘোড়দৌড়”

  1. রিভিউ ভালো লাগলো, তবে দারাশিকো ব্লগের কাছে আমার একটা প্রশ্ন।
    দারাশিকো ব্লগকে এফডিসির ফিল্মগুলোর সম্পর্কে বেশ ইতিবাচক মনোভাব পোষন করতে দেখা যায়, লেখার মধ্যেও সেই ছাপ প্রকাশ পায়। কিন্তু নির্মানশৌলীর দিক দিয়ে এগিয়ে থাকলেও কেন ভিন্নধারার/অফট্রাকের ছবিগুলো সম্পর্কে অধিক সমালোচনা আর তুলনামূলক নেতিবাচক মন্তব্য করতে দেখা যায় ?

    1. ভিন্নধারার মুভিগুলো তো প্রচলিত এফডিডস মুভি অর্থে বিনোদন করে না। তারা নানা তত্ত্ব করে। তত্ত্বের তো আলোচনা-সমালোচনা হবেই। এটা একটা পয়েন্ট হতে পারে।

      ভালো প্রশ্ন তুলেছেন। এটা নিয়া আলোচনা হওয়ার দরকার আছে।

    2. জবাবটা আমি দেই :
      ১. এফ ডি সির গুলা ফিল্ম ই হয় , কিন্তু এই তথাকথিত “ভিন্নধারার/অফট্রাকের ছবিগুলো” কি হয় তা নিয়ে আলোচনা সমালোচনার অনেক জায়গা আছে । আপনি টিভিতে এফ ডি সির যে কোন ফিল্ম দেখা মাত্্র বুঝবেন এটি একটি বাংলা সিনেমা (যা দেখেই হোক না কেন ) কিন্তু ভিন্নধারার/অফট্রাকের ছবিগুলো দেখে নাটক টেলিফ্লিম না মিউজিক ভিডিও সেটি সবসময় বুঝতে পারবেন না (আগে থেকে জানা না থাকলে )

      ২. এফ ডি সির পরিচালকরা একটা মুভি বানিয়েই মুই কি হনু আচরন করে না ভিন্নধারার/অফট্রাকের ছবিগুলো” পরিচালক নিজে তার ছবি নিয়ে যে উচ্চাশা পোষন করেন এবং দর্শক আগ্রহের ব্যারোমিটার চড়ান সেটা শেষ মেষ দুরাশা এবং হতাশা ছাড়া কিছু ই জন্ম দেয় না

      ৩. এফ ডি সির ছবি বিষয়ে েয সব সমালোচনা : বাস্তবতার সাথে মিল হীনতা তার সবই এ ভিন্নধারার/অফট্রাকের ছবিগুলো তে আরো বেশী আছে
      মনপুরার নায়িকা গ্রামের মেয়ে পাট ভাংগা শাড়ি , মেক আপ কিংবা লাল টিপ এর কাহীনি বিন্যাস কিছুই এই অভিযোগ থেকে মুক্ত নয়

      সুতরাং ভিন্নধারার/অফট্রাকের ছবিগুলোকে সমালোচনার তোপের মুখে বেশীই পড়তে হবে বাংলা সিনেমার ভালর জন্যই

      1. দারাশিকো’র ব্লগে স্বাগতম জানাই মাহবুব।
        আপনি আমার হয়ে জবাব দেয়ার চেষ্টা করেছেন সেজন্য ধন্যবাদ। এক নাম্বার পয়েন্টের সাথে আমি মোটামুটি একমত। ফারুকীর এই ছবিটি সেরকম মনে হবে না বলে মনে করছি।
        বাকী উত্তরগুলো আপনার নিজস্ব মতামত হিসেবে গ্রহণ করছি।
        ভালো থাকবেন। আবারও আসবেন 🙂

    3. প্রথম মন্তব্যে স্বাগতম নাবিল 🙂
      ভালো প্রশ্ন করেছেন। এর আগেও প্রায় এ ধরনের মন্তব্য শুনতে হয়েছে – হলিউডের মুভিতে যদি রেটিং দেই ৫ এ সাড়ে ৩ এবং বাংলাদেশী মুভিতে দেই ৫ এ ৪ – তবে আমার রেটিং কতটা বিশ্বাসযোগ্য/নির্ভরযোগ্য সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সবক্ষেত্রেই আমি এক ধরনের জবাব দেয়ার চেষ্টা করি। এফডিসি নির্ভর সিনেমার তুলনা হয় এফডিসি-র অন্যান্য সিনেমার সাথে, অফট্র্যাকের সিনেমার তুলনা এফডিসি-র সিনেমার সাথে হবে কেন? এইসব মুভি তো এফডিসি-র সিনেমার চেয়ে উন্নত বলেই এফডিসি-র বাইরে তৈরী হচ্ছে, বিদেশে আরও নানাবিধ সিনেমার সাথে লড়াই করে পুরস্কার জিতে আসছে। সেক্ষেত্রে শুরু থেকেই এরা এফডিসি-র মুভির সাথে অতুলনীয় – নাকি?

      দ্বিতীয়ত, এফডিসির মুভিগুলোর নির্মাতার পিঠে হাত বুলানোর প্রয়োজন আছে বলে বিশ্বাস করি। তাকে বোঝাতে হবে – যা বানাইছো ভালো হইছে, তবে আরও ভালো বানাইতে হবে, আপাতত এই এই দিকগুলা ঠিক করে ফেলো – দেখবা পরের ছবি আরও ভালো হইছে। এই মিঠা কথার প্রয়োজন কারণ সে বছরে তিনটা ছবি বানায়, ছবি প্রতি সময় দেয় কম। ফলে এই রিভিউর মত তাড়াহুড়া করার কারনে সে ভালো জিনিস বানাবে না এইটাও মানতে হবে। অফট্র্যাকের নির্মাতারা তিন বছরে একটা ছবি বানায়, তার জ্ঞান-শিক্ষা-দক্ষতা নিয়া প্রশ্ন তোলার সুযোগ কম – ফলে তার প্রতি হয়তো দরদ কম বোধ হয়।

      এই তো! ব্যক্তিগতভাবে এদের কারও প্রতিই আমার বিদ্বেষ নাই, আলাদা মমত্ববোধও নাই। ভালোবাসা আছে সিনেমার জন্য। সেই ভালোবাসা পথ দেখায় কারে কি বলতে হবে। 🙂

  2. ছবিটা দেখার আ্গ্রহ আমার রয়েই গেলো। আশা করছি আগামীকাল সন্ধ্যায় এ আগ্রহ মিটবে। তার আগে এই রিভিউ ছবি সম্পর্কে অতিরিক্ত আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারছে না। রিভিউ এর মূল দায়িত্বই কিন্তু তা। যদিও লেখার শুরুটা প্রত্যাশিত ছিলো। তারপরও ছবিটা দেখবো। যৌক্তিক নানা কারণেই ছবিটা দেখা উচিত। রিভিউ এর জন্য ধন্যবাদ।

    1. ছবিটা দেখেন কমল ভাই। তারপর আবারও একটা মন্তব্য করে যাবেন, ভুলগুলো ধরিয়ে দিবেন। শিখতে শিখতে এগিয়ে যাবো – কি বলেন?

  3. কাহিনী নিঃসন্দেহে চমৎকার এবং আগ্রহ তৈরি করার মতো।
    খুব সুন্দর রিভিউ। ভালো লাগলো। 🙂

  4. এই ছবির উদ্দেশ্যই ছিল বিদেশী পুরস্কার জেতা। এই জন্যে সচেতন ভাবে সবচেয়ে বিতর্কিত একটি উগ্র ধর্মীয় প্লট তৈরি করা হয়েছে যা বাস্তব সম্মত না, অবিশ্বাস্য। বাংলাদেশের মত দেশে এখনকার সময়ে কোন গ্রামে টেলিভিশন নিষিদ্ধ এটা কখনও কেউ শুনেনি। এমনকি দেশে গুটি কয়েক যে ধর্মীয় মোলবাদী গোষ্ঠি আছে তাদেরও টেলিভিশনের প্রতি কোন বিরাগ এর বড় আস্ফালন দেখেছি বলে মনে পড়ে না। তবুও জেনেশুনে এই অবাস্তব বিষয়টি নিয়ে ছবি বানানোটা ফারুকীর সফল এসাইনমেন্ট। কেননা পুসানে তারা বেশ বাহবা পেয়েছেন বাংলাদেশের সমাজ সম্পর্কে মিথ্যা একটা খারাপ ধারনা দিয়ে অর্থাত বাংলাদেশের ইজ্জত বেচে দিয়ে বাহবা কিনেছেন ফারুকী। এই উদ্দ্যোগের নিন্দা জানাই। ভাল চলচিত্র বানালে লোকে এমনিতেই প্রশংশা করে।

    1. রন্টি ভাই,আপনে আমার মনের কথাটাই বলেছেন…যেটা আমি কমেন্টে বলতে সাহস কর্তারিনাই…যদিও দারাশিকো ভাই খুব ই হালকাভাবে সেটা বলতে চেয়েছেন…খুব বেশী কিছু বলতে তিনিও হয়ত চাচ্ছেন না ফারুকির ভক্তকুলের জন্য…অথবা অন্য কোন কারনে!

      আর এই মুভি নিয়া সোইকত সালাউদ্দিন কইছিল ধর্মিয় গোড়ামি খুব ভালোভাবেই বাইরে বেচা যায়…এবং তিনি ভাল তোপের মুখেও পড়েছেন!

      আমাদের ও মনে হইছিল টেলিভিশন খারাপ…অথবা নায়কের বাবা কাউকে টেলিভিশন দেখতে দিতে চায়না…তার ধর্মিয় গোড়ামির জন্য…

      এবং এইটা ই হয়েছে দেখা যাচ্ছে!

      দেখি তার ভক্তকুল কি বলে এই মুভি নিয়ে!

    2. আপনি বড় কড়া বলেন রন্টিদা 🙂
      এইভাবে সরাসরি অভিযুক্ত করতে পারতেছি না – শুনেছিলাম, এই ঘটনা নির্মাতার নিজের জীবনের ঘটনা। চেয়ারম্যান চরিত্রটি তার বাবা। হয়তো ঘটনাপ্রবাহও সত্যি। কিন্তু এই সত্যি তো বিশ থেকে ত্রিশ বছর আগেরকার। বর্তমান সময়ে একে তুলে ধরার কারণটা আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারি নাই।

  5. তবে আরেককার মনে হল ফারুকী সিনেমা দিয়ে বেশীদুর এগিয়ে যেতে পারবেন না। তিনি না পারছেন মাটির ময়না বানাতে, না পারছেন তারই শিষ্য রেদওয়ান রনির মত চোরাবালি বানাতে। তিনি না্টকই বানিয়ে যাচ্ছেন। বড় ফ্রেমে নিতে বা আলোচনায় উঠতে ধর্মীয় গোড়ামী ব্যবহার করলেই চলচিত্র বানানো হয়ে উঠে না।

  6. পুরষ্কার পাওয়ার কি কারন মনে হইল মুভি দেখনের পরে?

    “”বাংলাদেশ ছাড়া অন্যান্য দেশের দর্শকরা, যারা বাংলাদেশ সম্পর্কে সামান্যই জানেন, তারা ‘টেলিভিশন’ দেখার পর বাংলাদেশকে ধর্মীয় গোড়াঁমির দেশ হিসেবে ভাববেন কিনা, তবে আশংকা দূর করতেও পারছি না।””

    বাইরের দেশে এই জিনিষটা কিন্তু ভালো বেচাকেনা চলে…পুরস্কার এইটা কোন কারন তো না?

    আর অন্যান্য রিভিউর মত এই রিভিউটা লাগেনাই…খালি খালি লাগল কেন যেন…অনেক কিছুর ই বিস্তারিত বর্ননাতে যান নাই।

    রেটিং বাংলা মুভির হিসেবেই দিছেন আশা করি…তারমানে বাংলা মুভির বিবেচনায় খুব আহামরি হয়নাই মনে হইতাছে…
    ৪ এর উপরে থাকলে আগ্রহ বোধ করতাম।

    নাবিল প্রশ্ন করছে একটা…আলোচনা করতে পারেন সে বিষয়েও!
    যদিও সুজন ভাই আলোচনা শুরু কৈরা দিলেই পারতেন!

    1. পুরস্কার দেয়ার পেছনে এটাই একমাত্র কারণ সেটা বোধহয় না। তারা সিনেমা সম্পর্কে আরও ভালো জানেন, বোঝেন – নির্মাতার বিভিন্ন ইঙ্গিত, ফ্রেম, সংলাপ ইত্যাদি থেকে তারা চলচ্চিত্রের আরও গভীরে প্রবেশ করতে পারেন যা আমি পারি না, পারি নাই – তাই আমিই সঠিক সেটাও বলা যায় না। কে বলবে না দশ বছর পর এই ছবি দেখলে আমিই নতুন করে কিছু বলবো।

      রেটিং বাংলা মুভি হিসেবে দেয়া না, রেটিং দেয়া অফট্র্যাকের সিনেমার রেটিং হিসেবে। ফারুকীর এই সিনেমাকে অন্তত ‘নাটক’ বলার আগে একটু চিন্তা করা লাগবে। তার অভিজ্ঞতা, পরিপক্কতা নানাভাবে বোঝা যায় সিনেমায়।

      এই তো! দেশে তো নাই, সিনেমাটা দেখলে হয়তো আরও বিস্তারিত আলোচনা করতে পারতেন 🙂

  7. টেলিভিশন সিনেমা হয়েছে তো?
    ফারুকীর মুভি দেখতে গেলেই ভয় হয়, টেলিফিল্ম না তো?
    চোরাবালি যে ভালোলাগার জন্ম দিয়েছে টেলিভিশন নষ্ট করবেনা আশা করছি।

    1. টেলিভিশন সিনেমা হয়েছে বলে মনে করছি। তবে তার নাটকের অনেক কিছুই সিনেমায় পাওয়া যাবে বলে হয়তো নাটক এবং সিনেমার পার্থক্য করা একটু কষ্টকর হবে – তবে সে সিনেমায় অনেক কিছু দেখিয়েছে যা নাটকে থাকে না সাধারণত।

      চোরাবালি আর টেলিভিশন ভিন্ন জিনিস। মজা নষ্ট হবে না বলে আশা করছি। 🙂

  8. ছবিটা না দেখে ঠিক কমেন্ট করতে চাচ্ছি না। তবে চঞ্চল, মোশারফ আর তিশা যেখানে আছে নিশ্চয় ছবিটা ভাল হবে। তবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করলে সেটা ঠিক হবে না।

    1. দেখে ফেলুন। আপনার মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকলাম 🙂
      ভালো থাকুন। আবারও আসবেন দারাশিকো’র ব্লগে 🙂

  9. আমি একটু বলি।
    ফারুকী নিজে এবং তার ভাই-বেরাদর দ্বারা বাংলাদেশের টিভি নাটক, সিনেমায় একটা নতুন ধারা এনেছেন বা আনতে চান। যেমন ক্যামেরা এক জায়গায় রেখে ক্রমাগত ডায়লগ। যেটাকে অনেকে ইতরিকরণ বলতে ছাড়েন না। এখন ফারুকী গ্রুপের এই পরিবর্তন প্রচেষ্টাকে আমিও (নিম্নমানের দর্শক) ইতিবাচকভাবে নিতে পারিনি বলেই ফারুকীর আগের ছবিগুলো বিশেষ করে থার্ড পার্সন….. ভালো লাগে নাই।
    আমার মনে হয় আমাদের দারাশিকো ভাইও ফারুকীর এই স্টাইলটা খুব একটা পছন্দ করেন।
    তাই হয়ত তার স্বভাবসুলভ বিনয়বোধ বজায় রেখে একটু কড়া সমালোচনা করে ‘টেলিভিশনে’র এর রিভিউ লেখলেন।

    1. প্রিয় সাফায়াত, একটু কড়া সমালোচনা করেছি বটে তবে সেটা তার স্টাইল পছন্দ করার সাথে সম্পৃক্ত না। টেলিভিশনে নির্মাতা অনেক ভালো কাজ দেখিয়েছেন যা সচরাচর নাটকে পাওয়া যায় না। আমি বিরক্ত হয়েছি কাহিনীর প্লটে – হয়তো সে কারণেই একটু কড়া হয়ে গেছে। কষ্ট দিয়ে থাকলে দুঃখিত ভাই।
      ভালো থাকবেন। টেলিভিশন দেখলে মতামত জানাতে ভুলবেন না কিন্তু 🙂

  10. darashiko vai, অনেকের কথায় যা বুঝলাম, তাদের কাছে চেয়ারম্যানের একার ক্ষমতায় একটা গ্রামের লোকদের ঘরে টেলিভিশন ঢুকতে পারছে না, এটা তারা মানতে পারছেন না । এটা আমাদের বর্তমান সময়ের সাথে যায়ও না । …
    আমার কিন্তু কোথাও চেয়ারম্যানকে এতো কঠোর/ কট্টর মনে হয় নাই । তিনি গ্রামের প্রধান হিসেবে কিছু ব্যাপারে নিষেধ করেছেন আর ‘অন্যরা তেমন কোন আপত্তি না করায় এবং মোবাইল, টেলিভিশন ব্যবহারের উপযুক্ত কারন দেখাতে না পারার কারনে’- গ্রামে টেলিভিশন, মোবাইল ঢুকছে না । [কারন দেখানোর সাথে সাথেই কিন্তু তিনি মোবাইল ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে দেন] আর চেয়ারম্যানের সাথে আছেন কিছু নিঃস্বার্থ সমর্থনকারী, যাদের ভিন্ন মতামতও তিনি খুব গুরুত্ব সহকারেই নেন । চেয়ারম্যানের একার আদেশে যে সব হচ্ছে তাও না । এভাবে দেখলে কি খুব অস্বাভাবিক লাগে ?? তাছাড়া টেলিভিশন, মোবাইল এগুলো একধরণের প্রতীক হিসেবেই ব্যবহৃত হয়েছে বলে মনে হয় … আমার ভুল হতে পারে, হলে ক্ষমা করবেন 🙂

    1. ধন্যবাদ মাসুদ পারভেজ ভাই, আপনার মতামতের জন্য। চেয়ারম্যান কট্টর বা কঠোর সেটা আমরাও কেউ মনে করছি বলে মনে হয় না। চেয়ারম্যান ভদ্রলোক ভালো, কিন্তু তিনি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে গিয়ে ভালো থাকছেন না – এমন একটা চিত্র পাওয়া যাচ্ছে চলচ্চিত্র থেকে – এ কারণেই ভালো মানুষ চেয়ারম্যান খারাপভাবে উপস্থাপিত হয়ে গেছে। আর টেলিভিশন, মোবাইল প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করাটাই স্বাভাবিক, তাতে আপত্তি নেই – প্রতীক হোক আর না হোক – সমস্যার কারণ হিসেবে যা উপস্থাপন করা হচ্ছে তা বোধহয় অপরিবর্তিত থাকবে।
      ভালো থাকুন।

  11. না ভাই, মোটেও কষ্ট পাই নাই আপনার সমালোচনায়। বরং আমি কষ্ট পাই তখনই দেখি সিনেমার মত একটা শিল্পে যখন বিনা পরিশ্রমে মাথা না খাটিয়ে নির্মাতা দর্শকদের কিছু দিতে যান।
    দেখার ইচ্ছা আছে। তবে একটু সময় লাগবে। সময় করে উঠতে পারছি না। ক্যান্টনমেন্টের শাহীন হলে কবে আসবে বলতে পারেন?

    1. আপনে ঢাকায় বৈসা অপেক্ষা করতেছেন কবে বাসার সামনে আসবে তারপর দেখবেন?
      গরম গরম সিনেমা দেখার জন্য একটু দূরেই নাহয় যাবেন 🙂
      (জানি না কবে দেখাবে 😉 )

  12. আমার ফারুকীর কাজের ভিন্নতা দেখে ভালো লাগে।
    তার চারটা ছবির চারটাই আলাদা আলাদা ট্র্যাকের।
    কিন্তু বলে রাখা প্রয়োজন আমি এখন পর্যন্ত মেড ইন বাংলাদেশ শুধু অর্ধেকটা দেখেছি। ব্যাচেলর আর থার্দ পার্সন সিঙ্গুলার নম্বর ১০মিনিট করে দেখেছি মনে হয়। আসলে ধৈর্য্য ধরে না।

    আমার মূল আপত্তি নাটক/সিনেমা পার্থক্যকরনে।

    এক্ষেত্রে আমি একটা উদাহরন দিতে চাই। অনেকটাই রিসেন্ট।
    হোমল্যান্ড টিভি সিরিজ আর অনেক ভালো ড্রামা-থ্রিলার এর মিশ্রণ সিনেমা প্রায় একই রকম (যেহেতু আমি সব আমার পিসির মনিটর এই দেখছি, আমার কাছে একই লাগে)। তারা কিন্তু ওই সিনেমাগুলোকে টিভি নাটক বলছে না।

    আসলে আমাদের টিভিতেও সিনেমা দেখতে দেখতে এত অভ্যাস হয়ে গেছে যে হলে গিয়ে আমরা কি দেখব তা বুঝে উঠতে পারছি না। বরং দেখার পর আমরা মনে করছি এই জিনিসতো টিভিতেই দেখা যায়।

    এটা আমার ব্যাক্তিগত ধারনা, ভুল হলে মাফ করবেন। “এ সেপারেশন” যদি বাংলাদেশ এ তৈরি হত তাহলে আমরা সেটাকে মনে হয় নাটকই বলতাম। সিনেমা বলতাম না।
    তাই বলে কেউ ভাববেন না আমি ফারুকীকে এ সেপারেশন এর কাতারে ফেলে দিয়েছি।
    ধন্যবাদ।

    1. স্বাধীনতার বার্তা (ভাই), ভালো লাগল আপনার মন্তব্য। ব্যক্তিগতভাবে নাটক-সিনেমার পার্থক্যকরনে আমিও সুখী নই। আসলে, নাটক ব্যাপারটা হওয়া উচিত ছিল সিনেমার ছোটরূপ। কিন্তু নাটকের একটা আলাদা ল্যাঙ্গুয়েজ দাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশে। বিশেষ করে ডিটেইলসের কাজ বাংলাদেশের নাটকে নেই বললেই চলে।
      আপনি উদাহরন হিসেবে হোমল্যান্ডের কথা বলেছেন, আমি দেখি নি, দেখেছি শার্লক। আমি ভেবে পাই না, দেড় ঘন্টার একেকটি এপিসোড কেন টিভি ড্রামা হয়, কেন সিনেমা নয়। টিভির জন্য বানানো মুভি বলেই টিভি ড্রামা? শার্লককে নাটক বলা যাবে না, কারণ ল্যাঙ্গুয়েজের দিক থেকে শার্লক সিনেমার ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করছে, ডিটেইলস এর ব্যবহার প্রাই একই, বাজেটও কিন্তু খুব কম নয়।
      ফলে, বাংলাদেশের নাটক আর ওদের টিভি সিরিজ অনেক আলাদা। ওদের টিভি সিরিজকে আমরা সিনেমা হিসেবে দেখতে বেশী পছন্দ করি, নাটক হিসেবে নয়।
      এটা আমার মতামত। দ্বিমত করার সুযোগ আছে। ধন্যবাদ 🙂

      1. এখানে একটু মন্তব্য করি.. মার্কিন টেলিভিশনে কিন্তু সিরিজ আর সিরিয়াল এক জিনিস না। সিরিজগুলো ওরা সিনেমা মতো করেই নির্মাণ করে থাকে। ৪০-৫০ মিনিটের এক এক পর্বে “সিনেমার ভাষা” পুরোটাই থাকে। ফলে তার মধ্যে সিনেমার আবহ পাওয়া যায়। অপর দিকে সিরিয়াল গুলো (যেগুলো কে ডেইলি সোপ ও বলে) হয় স্টুডিওর ভেতরে। যেমন যদি, ডেজ অব আওয়ার লাইভস, বোল্ড অ্যান্ড বিউটিফুল.. এগুলো দেখেন, আমাদের দেশের নাটকের আবহ পাবেন।

        1. বাহ শান্ত, আপনার থেকে দারুন একটা বিষয় শেখা হয়ে গেল। ওদেশের সিরিয়াল দেখা হয় নি বললেই চলে, সিরিজ দেখেছি দুয়েকটা। 🙂

        2. হুমম।
          আমিতো জানতাম একটা ব্রিটিশ আর আরেকটা আমেরিকান। :\

          আর আপনি যেটার কথা বলছেন অগুলো মনে হয় সিটকম আর ডেইলি সোপ। 🙂

          সেই হিসাবে একান্ন বর্তী, ৪২০ অনেকটাই সোপ এর মত।

          তাহলে আপনি কি “উড়ে যায় বকপক্ষী”, “কালা কইতর” এগুলোকে নিশ্চয় সোপ বলবেন না। কিন্তু খেয়াল করলে দেখবেন আমাদের অনেকে “ঘেটুপুত্র কমলা” কেও নাটক বলেছে (সঙ্খ্যাটা অনেক কম)।

          তাহলে মনে হয় জিনিসটাকে এভাবে বলা যেতে পারে, যারা নাটক বানায় তারা সিনেমা বানালে আমাদের কাছে তাদের সিনেমাকেও নাটক বলে মনে হয়। ব্যাতিক্রমঃ চোরাবালি।
          🙂

          1. যারা নাটক বানায় তারা সিনেমা বানালে তাদের সিনেমাকেও নাটক বলে মনে হয় – এই কথাটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে, তারচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, যদি নাটক হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয় তবে সেখানে পর্যাপ্ত যুক্তি উপস্থাপন সম্ভব কিনা। মনে হইলেই তো হবে না, ব্যাখ্যাও দিতে পারা চাই। তাছাড়া, দুম করে এরকম ট্যাগ দেয়ার প্রবণতাও দূর করা চাই।
            ভালো থাকুন স্বাধীনতার বার্তা 🙂

  13. এখনও দেখি নাই। বুধবার দেখার ইচ্ছা আছে। তবে আজকে আরেকটি রেখায় পড়লাম.. চেয়ারম্যান হজ্জ করতে যেতে পারছে না কারণ ছবি তুলতে হবে। কিন্তু চেয়ারম্যান পদে দাড়ানোর জন্য কিন্তু ছবি তুলতে হয়.. নমিনেশন পেপারের জন্য, তা না হলে নমিনেশন বাতিল হবে.. .. এই ফাকটি (বাংলা ফাক ইংরেজি নয়) পরিচালক খেয়াল করেনি। যাই হোক দারাশিকো ভাই.. আপনার লেখা পড়ে ভাল লাগলো..

    1. দারাশিকো’র ব্লগে কি এটাই প্রথম মন্তব্য? স্বাগতম 🙂

      চেয়ারম্যানের ছবি তোলার যে বিষয়টি বললেন, সেটা চিত্রনাট্যের ত্রুটি, লেখকদের ভুলে রয়ে গেছে। এই একই কাহিনী যদি ত্রিশ বছর আগের প্রেক্ষাপটে দেখানো হত, তাহলে অনেক বেশী বাস্তব হত। তবে নির্মাতা অবশ্যই ভেবে চিন্তে বর্তমান সময়কেই প্রেক্ষাপট হিসেবে বেছে নিয়েছেন – হয়তো তার সেই চিন্তা ধরার যোগ্যতা এখনো আমার হয় নি।

      ভালো থাকবেন শান্ত। আবার আসবেন 🙂

  14. অনেকেই বলছে আপনি টেলিভিশন নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন। আমার কাছে তো মনে হলো আপনি কৌশলে যথেষ্ট নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করেছেন। যা আপনার লেখার উল্লেখযোগ্য ভালো দিক বলে মনে করি। সিনেমাটার কাহিনী খুব একটা আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারলোনা যদিও অনেক আগ্রহ নিয়ে সিনেমাটা দেখার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
    চারদিনের সফর শেষে আজ ঢাকা ফিরলাম। সম্ভবত সামনের শুক্রবারে দেখবো মুভিটা।

    সিনেমার ভাষা নিয়ে মনে হয় মোটামুটি সবার মাঝেই বিস্তর কনফিউশন আছে। অনেকেই নিজস্ব ভাষায় এই ভাষাকে ব্যাখ্যা করতে গিয়েও তালোগোল পাকান। তখন জন্ম নেয় নতুন নতুন তত্ত্বের এবং তর্কের। সিনেমার ভাষার ব্যকরণ সম্পর্কে জানা থাকাটা তাই জরুরী হয়ে পড়েছে। এই ব্যাপারে সুষ্ঠ আলোচনা হওয়া দরকার। প্রফেশনালদের জিজ্ঞেস করে মতামত নেয়া যেতে পারে। একটা অনলাইন আলোচনার ব্যবস্থা করেন।

    নতুন সিনেমা, সময়ের প্রয়োজনে- এই শিরোনামে নূরুল আলম আতিকের বইখানা পড়ার অনুরোধ করলাম। সময় পেলে পড়ে দেখবেন।

    1. কড়া সমালোচনা?? মনে হয় না.. দারাশিকো ভাইকে এর চাইতে অনেক কড়া ভাষায় লিখতে দেখেছি…
      আমার মনে হয় আমাদের দেশে একটা কথা প্রচলিত আছে যে নোয়াখালির লোকজনের মধ্যে ধর্ম বিষয়টা একটু বেশি কাজ করে… আর ভাষা নিয়ে যে কথা টা উঠছে.. সেটা সে কারণেই

    2. আপনারে মিস করতেছিলাম রুশো ভাই। আইসা পর্ছেন, ভালো সম্বাদ 🙂

      কড়া রিভিউ লিখছি – এই কথা কেন বলছে জানি না। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করছি এর থেকে নেগেটিভলি বলেছি ভালোবাসার রং সম্পর্কে। কৌশলে না, এমনিতেই চেষ্টা থাকে নিরপেক্ষভাবে দেখার জন্য, অন্তত: অযৌক্তিকভাবে যেন দোষারোপ না হয়। এই চলচ্চিত্রের প্লটে প্রবলেম দেখা যাচ্ছে, সেটা বলেছি। আর এই সিনেমাকে নাটক বলতে চাচ্ছি না – দেখলে বুঝবেন। এই ছবির ট্রিটমেন্ট আলাদা, চিন্তাভাবনা করা হয়েছে বিভিন্ন দৃশ্যায়নে।

      বই পড়তে বলেছেন – একটু টেনশনই লাগতেছে। খুজেছিলাম বইটা, পাই নি। সিনেমাতন্ত্র ও ডুবসাতার পড়েছি। পেয়ে গেলেই পড়ে ফেলবো।
      ধন্যবাদ রুশো ভাই।

  15. মুভিটা দেখার আগেই পস্টার দেখে এমনটা ভয় ছিল যে সে আবার বাশ দেওয়ার জন্ন্য দারিয়েছেন, ফারুকি সাহেব অতিসুক্ষভাবে ইসলাম কে নেতিবাছক ভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছেন।

  16. সিনেমাটা দেখা হয়নাই। দেখা যখন হবে ততোদিনে পানি অনেকদুর গড়িয়ে যাবে 😛

    রিভিউ ভালো লাগলো। সিনেমার ব্যাকরন নিয়ে আমিও জানতে চাই।

  17. আসলে আমাদের মিডিয়া গুলির মত আমরাও আমাদের সংস্কৃতি কে ভাল বলতে চাই না , তা যত ভাল ই হোক না কেন। আমরা আমাদের সংস্কৃতির বদনাম করি কিন্তু ইন্ডিয়ান যা কিছু হোক তা যত খারাপ ই হোক না কেন তার সুনামে ফেটে পরি ।

    যদি আমারা আমাদের ভাল গুলি সবার সামনে প্রকাশ না করি তাহলে বাংলা কে বিশ্বএর দরবারে এর রূপ প্রকাশ করা যাবে না…………………………………।

    …………………………………।। so ..।। বাংলাই আমার প্রান।

Leave a Reply to মুহাম্মাদ আলতামিশ নাবিল Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *