‘চোরাবালি’ থেকে মুক্তি

চোরাবালি পোস্টার
চোরাবালি সিনেমার পোস্টার

বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে একটা চোরাবালি আছে। ১৯৭৩ সালে রাজ্জাক অভিনীত ‘রংবাজ’ সিনেমার মাধ্যমে বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে সামাজিক অ্যাকশন সিনেমার যাত্রা শুরু হয় এবং ক্রমান্বয়ে দেশীয় চলচ্চিত্রে প্রধান ধারা হিসেবে জায়গা করে নেয়। গত এক থেকে দেড় দশকের সামাজিক অ্যাকশন সিনেমাগুলোর মধ্যে একটি নির্দিষ্ট ছক লক্ষ্য করা যায়। গতানুগতিক কাহিনি, গৎবাধা সংলাপ আর সামঞ্জস্যহীন দৃশ্যের সমন্বয়ে যে সামাজিক অ্যাকশন সিনেমা নির্মিত হয় তা একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর দর্শক ছাড়া অন্যদের চাহিদা মেটাতে অক্ষম এবং তা বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের মধ্যেকার চোরাবালিকেই ইঙ্গিত করে। ‘চোরাবালি’র মুক্তি সেই অপেক্ষা থেকে মুক্তি দিল।

বর্তমান সময়ের শীর্ষ সন্ত্রাসী গডফাদার ওসমান (শহীদুজ্জামান সেলিম) মডেল কন্যা সুজানার (পিয়া) হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত এমন সংবাদ দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় রাজ্যের সাংবাদিক একত্রিত হয়েছে ওসমানের প্রাসাদসম দালানের চত্বরে। ওসমানসহ সাগরেদরা মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে ওসমানের ডানহাত, পালকপুত্র সুমনের (ইন্দ্রনীল সেন) সাথে যাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে দৈনিক পত্রিকার ক্রাইম রিপোর্টার নবনী আফরোজকে (জয়া আহসান) হত্যা করার, কিন্তু সুমন ফোন ধরছে না। নবনীকে হত্যা করা না হলে ওসমানের অন্যান্য অপকর্ম প্রকাশিত হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে যা তার আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণকে অনিশ্চিত করে তুলবে। কিন্তু সুমন ফোন ধরছে না কেন?

রেদোয়ান রনির কাহিনী, সংলাপ ও চিত্রনাট্যে এই গল্প উপস্থাপিত হয়েছে নন-ন্যারেটিভ পদ্ধতিতে। আড়াই ঘন্টার সিনেমায় বিশ বছরের কাহিনী উঠে আসলেও বর্তমান সময়ের প্রতি গুরুত্ব সর্বাধিক। ঘটনাপরম্পরা বজায় রেখে নিচ্ছিদ্র কাহিনী তৈরীর আন্তরিক প্রচেষ্টা স্পষ্ট ফুটে উঠেছে সিনেমায়। সিনেমার ট্রেলার, পোস্টার এবং শুরুর দৃশ্যাবলী দেখে দর্শকের পক্ষে আঁচ করে নেয়া সম্ভব কাহিনীর গতিপথ কোনদিকে যাবে।

ফলে, ওসমানের সাথে সুমনের বিরোধের একটি মজবুত কারণ প্রয়োজন ছিল। বিশ বছরের পিতৃস্নেহে লালন-পালন, ক্ষমতার অংশিদারী এবং আনুগত্য যে ঘটনায় মুখ থুবড়ে পড়ে তা অপেক্ষাকৃত দুর্বল, দর্শক হিসেবে মেনে নিতে মন রাজী হয় না। এই মন-ই প্রশ্ন তোলে সাংবাদিক নবনীর সাথে সন্ত্রাসী কিলার সুমনের সম্পর্কের বাস্তবতা নিয়ে, সামঞ্জস্যহীনতা নিয়ে। চোরাবালি রোমান্টিক সিনেমা নয়, এই সিনেমায় সুমন ও নবনীর প্রেমময় সম্পর্ক অহেতুক, অযৌক্তিক, দর্শকের মনোরঞ্জনের উপকরণ।

সুমন-নবনীর রোমান্টিকতার প্রভাব পড়েছে এর গতিময়তায়। ইন্টারমিশন পর্যন্ত সিনেমায় প্রচন্ড গতি। সেই গতিকে খুজে পাওয়া যায় না দ্বিতীয়ার্ধে। চরিত্র বিচারে ওসমানের একক দাপট লক্ষ্যনীয় সিনেমায়। চোরাবালি ওসমানের গল্প নয়, সুমনের গল্প – তার অন্ধকার জীবনের চোরাবালি থেকে মুক্তির গল্প। কিন্তু ওসমান চরিত্রের কারণে সুমন চরিত্রটি যথাযথভাবে ফুটে উঠতে পারে নি। অপেক্ষাকৃত বিলম্বে তৈরীকৃত বিশ বছর আগের সুমন চরিত্রটি অনেক বেশী মজবুত ও স্বাধীন, কিন্তু বর্তমান সময়ের সুমন নিছক খুনিতে পরিণত হয়েছে – একে আরও পরিণত করার সুযোগ ছিল। নবনী চরিত্রটির স্বতন্ত্রতা আগ্রহোদ্দীপক। ব্যঞ্জনাময় সংলাপের জন্য পরিচালক ধন্যবাদ পাবেন।

শহীদুজ্জামান সেলিমের দুর্দান্ত অভিনয় একাই সিনেমাকে টেনে নিয়ে গেছে শেষ পর্যন্ত
শহীদুজ্জামান সেলিমের দুর্দান্ত অভিনয় একাই সিনেমাকে টেনে নিয়ে গেছে শেষ পর্যন্ত

কাহিনীর এই সামান্য ত্রুটি দর্শকের চোখ এড়িয়ে যেতে বাধ্য ওসমান চরিত্রে শহীদুজ্জামান সেলিমের অসাধারণ অভিনয়ের কারণে। তার গাম্ভীর্য, চাটুকারিতা, চলাফেরা ও মুখভঙ্গী – এক বহুরূপী গডফাদার চরিত্রকে জীবন্ত করে তুলেছে। ইন্দ্রনীল সেন তার চরিত্রে পরিপক্কতার পরিচয় দিয়েছেন, তার সুঠাম দেহ, আকর্ষনীয় চেহারা হৃদয়গ্রাহী। কিন্তু শহীদুজ্জামান সেলিমের এই অভিনয়ের কাছে ম্লান হয়ে যায় ইন্দ্রনীল সেনের অভিনয়। জয়া আহসান ভালো অভিনয় করেছেন। মডেল কন্যা সুজানা চরিত্রে পিয়ার অভিনয় খুব আশাব্যঞ্জক নয়, ওসমানের সহযোগী রাসেল চরিত্রে কিছু কিছু অতিঅভিনয় লক্ষ্যনীয়। এটিএম শামসুজ্জামান ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ন চরিত্রে দারুন অভিনয় করেছেন।

এই সিনেমার আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক এর সিনেমাটোগ্রাফি। টিভি কমার্শিয়ালের সিনেমাটোগ্রাফিতে পরিপক্ক খায়ের খন্দকার সিনেমার প্রায় প্রতিটি দৃশ্যে তার মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। সকালের দৃশ্যে ওসমানের দালানে এক চিলতে রোদ কিংবা অন্ধকার ঘরে সুমন ও নবনীর দৃশ্যে আলো আঁধারির খেলা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

ছবিতে বেশ কটি গান থাকলেও আইয়ূব বাচ্চুর ‘কেয়ারফুলি কেয়ারলেস’ ছাড়া আর কোন গান মনযোগ টানতে সক্ষম হয় নি। বিশেষ করে ভারত থেকে আমদানীকৃত ‘আইটেম সং’ তার চরিত্রানুযায়ী কাহিনীর সাথে সামঞ্জস্যহীন, শ্রুতিকটু। গানের তুলনায় সিনেমাটির আবহ সংগীত অনেক বেশী উদ্দীপক, দর্শককে সিনেমার সাথে একাত্ম হতে বেশ ভালো ভূমিকা রেখেছে।

এদেশে বানিজ্যিক সিনেমার তালিকায় ‘চোরাবালি’ তার গুণে-মানে একটি ‘ওয়েলমেড’ সিনেমা হিসেবে স্থান করে নেয়ার মত সিনেমা। পরিচালকের মতে, চোরাবালি থেকে কেউ একাকী বেড়িয়ে আসে না, কিন্তু পাশে কেউ থাকলে চোরাবালি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। বাংলাদেশী সামাজিক অ্যাকশন সিনেমা চোরাবালির যে আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে, রেদোয়ান রনির মত নির্মাতারা হয়তো সেই চোরাবালি থেকে বের করে নিয়ে আসতে পারবেন।

কিন্তু চোরাবালিতে উদ্ধারের জন্য নেমে নিজেই নিমজ্জিত হবার আশংকাও কম নয়। সিনেমায় প্রোডাক্ট প্লেসমেন্টের নামে কুল বডি স্প্রে, রেডিও টুডে এবং মাছরাঙা টেলিভিশনের উৎকট উপস্থিতি, সিনেমার শুরুতেই ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ বাণীর পর সিনেমাজুড়ে অ্যালকোহলের অবাধ ব্যবহার ও প্রদর্শন, বানিজ্যিক উদ্দেশ্য আইটেম সং এর ব্যবহার ইত্যাদি শঙ্কিত করে তোলে। চোরাবালিতে হারিয়ে যাওয়ার নয়, ‘চোরাবালি’ হোক চোরাবালি থেকে মুক্তির সিনেমা।

রেটিং: ৪/৫

ছবি কৃতজ্ঞতা: চোরাবালি ফেসবুক পেজ

[তথ্যগত যে কোন সংশোধনী কাম্য। ধন্যবাদ – দারাশিকো]

About দারাশিকো

আমি নাজমুল হাসান দারাশিকো। লেখালিখির প্রতি ভালোবাসা থেকে লিখি। পেশাগত এবং সাংসারিক ব্যস্ততার কারণে অবশ্য এই ভালোবাসা এখন অস্তিত্বের সংকটে, তাই এই ওয়েবসাইটকে বানিয়েছি আমার সিন্দুক। যোগাযোগ - darashiko(at)gmail.com

View all posts by দারাশিকো →

83 Comments on “‘চোরাবালি’ থেকে মুক্তি”

  1. একটানে পড়ে ফেললাম।

    এটা বোধহয় চোরাবালি নিয়া প্রথম রিভিউ।

    চমৎকার একটা মুভি নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ।

    আশা করি মুভিটি বাণিজ্যিকভাবে সফল হবে।

    1. শুকরিয়া বস। হতে পারে। মুভি রিভিউর মত আকাইম্যা কাজ খুব বেশী লোক করে না – এইজন্য হালে পানি পাই 🙂

      হওয়া উচিত – শুভকামনা থাকবে।

  2. চোরাবালিতে হারিয়ে যাওয়ার নয়, ‘চোরাবালি’ হোক চোরাবালি থেকে মুক্তির সিনেমা। ___ সেলিম সাহেবের অভিনয়ের জাদুতে ইন্দ্রের অভিনয় ম্লান হয়ে গেছে জেনে কিছুটা অহংবোধ হচ্ছে এখনই। দেখব জলদি

  3. চমৎকার রিভিউ……..মুভিটা দেখার আগে একটু একটু ভয় ভয়ই লাগছিলো………যে প্রত্যাশা নিয়ে গিয়েছিলাম সেটি পূরণ হবে কি হবে না সেই ভয়…………আমার কাছে সবমিলিয়ে মুভিটি খুব ভালো লেগেছে………একদম সত্য কথাটাই বলেছেন…………এই মুভির আসল মজাটা হলো সেলিমের অভিনয় দেখার অভিজ্ঞতা……….ক্লাস অভিনয় করে গেছেন………..

    1. এটা অবশ্যই গর্ব করার মত বিষয়। শহীদুজ্জামান সেলিমের অভিনয় দেখার পর মনে হচ্ছে ফরীদি এই জায়গায় ভালো করতে পারতো না। স্যালুট টু হিম 🙂

  4. দেখি আর কে কি বলে……

    সুন্দর সমালোচবার জন্য আপনাকে ৪.৫/৫ দেয়া হইল।

    “চোরাবালিতে হারিয়ে যাওয়ার নয়, ‘চোরাবালি’ হোক চোরাবালি থেকে মুক্তির সিনেমা।”

      1. শুকরিয়া বস। খারাপ বলবে এমন লোক বোধহয় খুব বেশী নাই। কম্পারেটিভলি অনেক ভালো সিনেমা।

  5. “নন-ন্যারেটিভ পদ্ধতি” ব্যাপারটা কী জিনিস ভাই, ঠিক বুঝলাম না। রিভিউ ভাল হয়েছে।

    1. দারাশিকো-র ব্লগে স্বাগতম ঢাকিফাই।
      নন লিনিয়ার বলতে সরলরৈখিক নয় এমন কিছুকে বোঝায়। এক রাজা, এক রানী। তাদের একটা ফুটফুটে ছেলে হল। সেই ছেলে নানারকম প্রশিক্ষন নিতে নিতে দক্ষ যোদ্ধা হয়ে উঠল। তারপর রাজার পক্ষ থেকে গেল পাশের বিপন্ন দেশকে সাহায্য করতে। সেই দেশের শত্রুদেরকে হারিয়ে দিল বিশাল লড়াই করে। তারপর সেই দেশের রাজকন্যাকে বিয়ে করে নিয়ে এল। তারপর তারা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগল। – এটা লিনিয়ার গল্প।
      নন লিনিয়ার কেমন হবে? রাজা আর রানী রাজপুত্রকে বিদায় দিচ্ছে। রাজপুত্র যাচ্ছে পাশের দেশে লড়াই করতে। কেন যাচ্ছে? কারণ সেই দেশে শত্রুরা আক্রমন করেছে। রাজপুত্র কি যোগ্য লড়াই করার জন্য? হুম, কারণ সে ছোটবেলা থেকেই নানা রকম প্রশিক্ষন নিয়েছে। রাজপুত্র গেল। লড়াই করল, শত্রুমুক্ত হল। রাজকন্যাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল রাজপুত্র। রাজকন্যা বলল – আগে তোমার কাহিনী বল। রাজপুত্র তার বাবা-মা’র বিয়ে থেকে শুরু করে কাহিনী বলল …. একই কাহিনী, কিন্তু উল্টা পাল্টা করে বলা হয়েছে। ন নন -লিনিয়ার।

      আশা করি বুঝতে পেরেছেন। ভালো থাকবেন, আবারও আসার আমন্ত্রন রইল।

      1. ধন্যবাদ বিষয়টা বুঝিয়ে দেয়ার জন্য। পোস্টে অবশ্য “লিনিয়ার” শব্দটা বাদ পড়ে গেছে, এডিট করে দিন।

      2. নতুন জিনিস জানলাম… এই ব্যাপারটাকে কি বলে তা জানার একটা সুপ্ত আগ্রহ ছিল… আজ জানলাম… ধন্যবাদ…

  6. প্রথম মুভি পরিচালনাতে খুব খারাপ করেনাই দেখা যাচ্ছে রনি।

    আমাদের চিরপরিচিত কাহিনী নিয়েই মুভি…নতুনত্ব নাই সেখানে…

    আশা করেছিলাম নির্মানের দিক দিয়ে ভাল হয় যেন…ভাল কথা আপনিও বলতেছেন ওয়েলমেড…

    ক্লাস পিপলের সাথে ম্যাস পিপলের দিকেও তাদের নজর ছিল আপনার রিভিউ পরে তাই মনে হইল…

    এখন দেখা যাক আমজনতার ঠিক কতটুকু কাছে যাইতে পারে রনি’র এই সিনেমা।

    সিনেমা হয় যেন সিনেমার মত…
    নাটকের মত যেন সিনেমা না হয়…
    গুডলাক বাংলাদেশ
    গুডলাক বাংলাসিনেমা!

    1. চিরপরিচিত কাহিনী নিয়া ছবি সেইটা খুবই সত্যি কথা। বাংলাদেশী ট্রেডিশনাল সিনেমাই পাওয়া যাবে একই ধাচের কাহিনী নিয়া। কিন্তু খুব বেশী লোক এইটা ধরতে পারবে না, কারণ খুব বেশী লোক ট্রেডিশনাল বাংলা সিনেমা দেখে নাই।

      আমিও আশাবাদী। সিনেমাটা পপুলার হোক, বিনিয়োগ তুলে আনুক। তাহলে আরও ভালো সিনেমা পাওয়া যাবে।

    1. যে বন্ধুদের প্রতিক্রিয়া দেখে ভেবেছিলেন দেখবেন না সে বন্ধুরা কেন এরকম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে জানি না। সিনেমাটা বাংলাদেশী সিনেমার তুলনায় অনেক ভালো একটা সিনেমা। চাইলেই এই সিনেমাকে ফেলে দেয়া সম্ভব না।
      দেখে ফেলুন হলে গিয়ে, আমার মন্তব্যের সত্যতা পাবেন আশা করছি। শুভকামনা এবং ধন্যবাদ 🙂

  7. চমৎকার রিভিউ। আর চলচ্চিত্রটি ও চমৎকার হয়েছে বলে বোঝা যাচ্ছে। কপাল খারাপ ঢাকায় না থাকার জন্য দেখতে পারছি না। সর্বপ্রথম রিভিউ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ 🙂

    1. ধন্যবাদ খালেদ।
      সিনেমাটি ভালো হয়েছে, দেখতে ভালো লাগবে। তবে দাগ কেটে যাবার মত সিনেমা নয়, সম্ভবত পরিচালক নিজেও তা চান নি।
      যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেখে ফেলুন 🙂

  8. চোরাবালির ট্রেলার দেখে খুব আগ্রহ নিয়ে বসে আছি এটা দেখার জন্যে। অবশ্য উপায় নেই যদি নেটে না আসে।

    1. এটা অবশ্য একটু সমস্যা আপনার জন্য। যতটুকু সম্ভব বড় পর্দায় দেখার চেষ্টা কৈরেন, তাহলে বেশী ভালো লাগবে 🙂

  9. দেখলাম। ভাল লাগছে। তবে নবনী-সুমনের প্রেম ক্যামনে কি কিছুই বুঝলাম না! এমন কৈরা সুন্দরী মেয়েরা যদি টেরোরিস্ট গো প্রেমে পড়তে থাকে তাইলে তো আমার মতন ভালা(?!!?) পুলারা আর ভাত পাইবো না…..:p

    রিভিউ ভাল লাগছে।
    +++

  10. darashiko bhai,
    ekdom seshe a t m uncle er r kono uposthiti r chilo na….
    eta somporke ami apnar thinking jante chai.
    chorabali ta to ultimately thekei gelo…. ei character tar onuposthiti te.

  11. এক থেকে দেড় দশকের সামাজিক অ্যাকশন সিনেমাগুলোর মধ্যে একটি নির্দিষ্ট ছক লক্ষ্য করা যায়। গতানুগতিক কাহিনি, গৎবাধা সংলাপ আর সামঞ্জস্যহীন দৃশ্যের সমন্বয়ে যে সামাজিক অ্যাকশন সিনেমা নির্মিত হয় তা একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর দর্শক ছাড়া অন্যদের চাহিদা মেটাতে অক্ষম এবং তা বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের মধ্যেকার চোরাবালিকেই ইঙ্গিত করে।
    আমি আপনার এই চিন্তার সাথে একমত নই।
    এই সিনেমা গুলো কি দেখা হয়েছে যদিও এগুলোর সিনেমাটোগ্রাফি আহামরি কিছু নয় কিন্তু গল্পের গাঁথুনি অশাধারন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দর্শক ধরে রাখার ক্ষমতা রাখে।
    ১ ত্রাস
    ২ দাঙ্গা
    ৩ লুটতরাজ
    ৪ রাষ্ট্রদ্রোহী
    ৫ ধর
    ৬ আম্মাজান
    ৭ আমি জেল থেকে বলছি
    ৮ ইতিহাস
    ৯ বোমা হামলা
    ১০ আব্বাজান

    1. দারাশিকো’র ব্লগে স্বাগতম রোকন।
      আপনার ভিন্নমতকে স্বাগত জানাই। কিন্তু আপনার মন্তব্য দিয়ে আপনি আসলে আমার বক্তব্যকেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আমি এক থেকে দেড় দশক বা বারো থেকে আঠারো বছরের সিনেমার কথা বলেছি, আপনি উদাহরণ হিসেবে এনেছেন দশটি সিনেমা। আঠারো বছরের তুলনায় কি দশটি সিনেমা খুব কম না? যদি এমনটি হত আঠারো বছরে যে সকল সিনেমা মুক্তি পেয়েছে সেগুলোর মধ্যে এই গতানুগতিক কাঠামো খুজে পাওয়া যায় না তবে আমি অবশ্যই আপনার কথা মেনে নিতাম, কিন্তু আঠারো বছরের সিনেমার মধ্যে অল্প কিছু শক্তগাথুনির সিনেমা দিয়ে তো বাকী সিনেমাগুলোর ত্রুটি দূর করা যায় না।

      এক্সেপশন ক্যানট বি অ্যান এক্সাম্পল। আমি বাংলা সিনেমার বিরোধী নই, তবে সত্যকেও অস্বীকার করতে চাচ্ছি না। বোধহয় বুঝবেন। ভালো থাকুন, আবারও আসবার আমন্ত্রন রইল 🙂

  12. এই সিনেমায় সুমন ও নবনীর প্রেমময় সম্পর্ক অহেতুক, অযৌক্তিক, দর্শকের মনোরঞ্জনের উপকরণ।
    সহমত
    আইটেম গানের ট্রেইন না আবার চালু হয়ে যায় সেটা নিয়ে আমিও ভয়ে আছি। এ ছবিটার আইটেম গানটা যদিও ততটা ভালো হয় নাই।

    অ্যাজ ইউজুয়াল কমপ্লিট রিভিউ। আপনাদের দেখাদেখি মুভি দেখে আসার এক ঘন্টার মাঝেই নিজেই হাবিজাবি লেখার চেষ্টা করলাম।

    1. একঘন্টায় পারছেন সেই জন্য আপনারে কনগ্রাচুলেশন্স। অন্তত এই দিক থেকে আপনি আমারে ছাড়ায়া গেছেন। সিনেমা দেখার পর লেখা শেষ করতে আমার চারঘন্টা লাগছে, এর কমে সম্ভব ছিল না 🙂

      পোস্টে কমেন্টো দিয়েছি, দেখবেন 🙂

  13. ছবির আলোচনায় আপনার সাথে আমি অনেক জায়গায় একমত। যেমন সুমনের চরিত্রের দুর্বলতা। ওসমানের প্রাধান্য। ব্যকগ্রাউন্ডের চমৎকার ব্যবহার। আর অতীতের সুমনের শক্তিশালী অবস্থান। যে জায়গাগুলোতে আমি দ্বিমত পোষণ করি তা হলো, শহীদুজ্জামান সেলিমের অভিনয়। আমার মনে হয়েছে এই ওসমান চরিত্রে সেলিম অতিরঞ্জিত অভিনয় করেছে। পরিমিতিবোধ ছিলো না। আর সেই সাথে খায়ের খন্দকারের সিনেমাটোগ্রাফি কিছু জায়গায় যেমন চমৎকার কাজ দিয়েছে তেমন প্রচুর ভুল তিনি করেছেনও। অনেক ফ্রেমে দেখলাম তার ফোকাস পয়েন্ট ভুল। মুভমেন্টফোকাস বারবার ধরাপরে যাচ্ছিলো। যা খুব বিরক্তির কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এছাড়া নবনীকে নিয়ে যখন পুকুরঘাটে সুমন বসে থাকে, সেখানকার দৃশ্যায়নের অযাচিত লাইট ব্যবহার তো লোকেশন কোনওভাবেই দাবি করে না। তবে এই ছবিকে আমি এপ্রিশিয়েট করবো। এই ধরনের ছবি না হলে শিল্পটাই দাঁড়াবে না।

    1. দারুন কথা বলেছেন কমল ভাই। এই ছবিটা সফল হলে আরও ভালো ছবি আমরা পাবো পরিচালকের কাছ থেকে। বিশেষ করে, তারা যেভাবে দর্শক মতামতকে গুরুত্ব দিচ্ছেন – সেটা সম্ভবত এই প্রথম।
      তাদের জন্য শুভকামনা (নিজেদের স্বার্থেই 😉 )

    1. সিনেপ্লেক্সে দেখার অভিজ্ঞতা দারুন হবে, কিন্তু টিকেট পাওয়াও কষ্টকর হবে। সেই তুলনায় বলাকা মধুমিতায় ঘন্টাখানেক দাড়ালেই টিকেট পাওয়া যাবে। এ সপ্তাহেই দেখুন – তাজা মুভি দেখার মজা আলাদা 🙂
      ভালো থাকবেন জনতা 🙂

  14. চমৎকার রিভিউ। মুভিটা এই সপ্তাহেই দেখার ইচ্ছে আছে 🙂

    1. ধন্যবাদ বর্ষণ বায়েজিদ। দেখার পরে আপনাকে আরেকবার চাই এই পোস্টে 🙂
      ভালো থাকুন, ভালোভাবে উপভোগ করুন চোরাবালি 🙂

  15. এজন্যই আপনারটা কমপ্লিট আর আমারটা হাবিজাবি

  16. দারাশিকো ভাই, অনেক দিন পর বাংলা ছবি নিয়ে আপনার রিভিউ। ভাল লাগল। আপনি কি আপনার নীতি থেকে হালকা সরে এসে রিভিউ লিখলেন? মানে সিনেমার গল্পতো অনেকটাই জানা হয়ে গেল। আমিসহ অনেকে দেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। যাহোক। আপনার রিভিউ পড়ে মনে হচ্ছে সেলিম-এর অভিনয়-এর মজা নেওয়ার জন্য হলেও ছবিটা দেখব। হুমায়ুন ফরিদির জায়গায় নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। ভেবেই ভাল লাগছে। এই সপ্তাহের মধ্যেই দেখে ফেলব আশা করি। ধন্যবাদ আপনাকে।

    1. প্রিয় সাফায়াত, আপনার মন্তব্য পড়ে আবারও যা লিখলাম পড়ে দেখলাম – কাহিনী অংশে যা বলেছি সেটা সিনেমার প্রথম দশ মিনিটের অংশ – বিশ্বাস করুন। আর আলোচনার সময় দুই একটা ত্রুটি উল্লেখ করেছি যদিও, তাতে কাহিনীর মজা নষ্ট হবে বলে মনে করিনি।

      হয়তো দেখার পরে আপনি আরও ভালো আইডেন্টিফাই করতে পারবেন কি না বললে ভালো হত – সেক্ষেত্রে নেক্সট রিভিউতে আমি আরও সতর্ক হবো ইনশা আল্লাহ। অকে? 🙂

      ভালো থাকুন সাফায়াত এবং খুব দ্রুতই দেখে ফেলুন সিনেমাটি 🙂

  17. hmm cobiti dekhlam kalk,,,
    Jotharthoi bolecen,,,
    Je prekkhapot(rajniti & oporadhjogot) niye cobiti korecen,,,er cheye valo,,bd onno kono director er pokkhe o somvob na,,,,prothom cobi hisebe onk valo korecen,,,,r jeta bolecen… birotir porer onshe goti kom cilo,,,kahinir karonei emnti hoyece(prem bisoyti niye ascen),,,goti ante kahinir poriborton ana lagto,,hoyto director chan ni

    1. আসলে হয়েছে কি ভাই, ফ্রেন্ড দের সাথে ছবি দেখার সময় মজার ছলে একটা অভ্যাস হয়ে গেছে ছবি দেখার আগেই আমি মজা করে কাহিনী সর্ম্পকে আগেই বলে দিতাম। কিছু ঠিক হত, কিছু হত না। আর এটা নিয়েও মজা হত। আর আপনার রিভিউ পড়ে কেন জানি মনে হচ্ছে যে কাহিনাটি গতানুগতিক এই ছবির। তবে এটা মনে হওয়ার জন্য দোষারোপ করে থাকলে দু:খিত। সরি ভাই।
      আর এই সপ্তাহেই দেখব আশা করি। ওকে, ভাই, আনন্দে থাকুন।

  18. দারুণ রিভিউ। আপনার রিভিউগুলোর সাথে আমি সব সময় একমত হতে পারি না – মাঝে মাঝে আপনি এমন সব মুভির প্রশংসা করেন যেগুলো আমার কাছে একেবারেই ভালো লাগে না (শাকিব খানীয়) … যদিও আপনার বাংলাদেশী মুভির পৃষ্ঠপোষকতা অবশ্যই প্রশংসনীয়।

    এই মুভিতে আপনি ভালো-খারাপ দুটো দিকই দারুণভাবে তুলে এনেছেন যেটা খুবই ভালো লেগেছে। আমি অবশ্য নেটে না না আসা পর্যন্ত মুভিটা দেখতে পারব না, কিন্তু আশা করব একটা দারুণ ব্যাবসা করবে এবং আরো ভালো মুভি তৈরির রাস্তা দেখিয়ে দিবে।

    ইদানীংকালের আইটেম সং এর গণহারে ব্যবহারে আমি খুবই শংকিত। আমার ধারণা এটা অচিরেই মহামারী আকার ধারণ করবে এবং অশ্লীল ছবির যুগ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর যে স্বপ্ন আমরা দেখছিলাম, সেটাকে ধূলিস্যাত্‍ করে দিবে। এ ব্যাপারে এখন থেকেই কিছু একটা করা দরকার, জানিনা সেটা কিভাবে করা উচিত্‍।

    একটা প্রশ্ন, ভালো কিছু বাংলাদেশী নন লিনিয়ার ন্যারেটিভ স্ট্রাকচারের মুভির নাম দিতে পারেন?

    1. হা হা হা.. দ্বিমত হওয়াটা খুবই ভালো ত্বোহা ভাই, শেখার সুযোগ বাড়ে। 🙂
      আইটেম সং নিয়ে আমিও শংকিত, এখন শংকিত হচ্ছি অ্যালকোহলের ব্যবহার নিয়ে। গতি প্রকৃতি যা দেখছি তাতে কোলকাতার দিকেই আগাচ্ছি মনে হয় – যেখানে সিনেমা মানেই অ্যালকোহল, পরকীয়া আর বেড সিন। সেন্সর বোর্ড তুলে সার্টিফিকেশন বোর্ড বসানোর পরে কি হবে সেটাও ভাবনার বিষয়।

      এত কঠিন প্রশ্ন করেছেন যে উত্তর দিতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নন লিনিয়ার ন্যারেটিভ সিনেমা বাংলাদেশে আরও আছে, ফ্ল্যাশব্যাকে সিনেমার কাহিনী তো কম না। তবে চোরাবালির মত এরকম নন লিনিয়ার স্টোরী মনে পড়তেসে না।

      আরেকটু জিজ্ঞেস করে দেখি, জানলে জানাবো 🙂

  19. দারাশিকো ভাই পিতা ছবির কি হল? কোন দিক দিয়া আসল গেল কিছুই বুঝলাম না…. আমার এই ছবিটা দেখার ইচ্ছা ছিল।

    1. পিতা সিনেমা এখনো মুক্তি পায় নাই, পর পর দুই সপ্তাহে লাস্ট মুহূর্তে ডিক্লেয়ার করা হয়েছে। আগামী ২৮ তারিখ মুক্তি পেতে পারে বলে জানিয়েছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম 🙂

  20. থ্রিলার ঘরানায় আমার মতে বাংলা ভাষায় এযাবত নির্মিত সেরা ছবি। গতানুগতিক বাংলা মুভির চেয়ে অনেক স্মার্টভাবেই ছবির গল্প এগিয়েছে। খামাকা তিন ঘন্টা কাভার করার জন্য কাহিনিকে টেনে লম্বা করা হয়নি।
    ফ্রেন্ড সার্কেল এবং পরিবারের সবাইকে নিয়ে উপভোগ করার মতো একটা মুভি এটা। আমিও আজ ফ্রেন্ড সার্কেল নিয়া গেছিলাম।

    1. দারাশিকো’র ব্লগে স্বাগতম রাজীব। 🙂
      আপনি খুব মুগ্ধ সিনেমা দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। এই ছবির গল্প খুব বেশী ডিফ্রেন্ট নয়, এর আগেও এই কাঠামোর গল্প এদেশে হয়েছে, তবে এর স্টোরি টেলিং টা অবশ্যই ডিফ্রেন্ট। এরকম ননলিনিয়ার ন্যারেটিভে স্টোরি খুব কম বলা হয়েছে আগে।
      আর এই সিনেমা ফ্রেন্ড সার্কেল নিয়ে দেখার মত সিনেমা, পরিবারের সবার উপযোগী বোধহয় না। আমার পাশে এক ছেলে আর তার মা বসেছিলেন। আইটেম সং এর সময় ভদ্রমহিলার দিকে তাকালাম – তিনি মাথা নিচু করে ছিলেন। বেত দিয়ে পেটানোর দৃশ্যে মাথা নিচু করে ছিলেন। এবং, ইরেশ জাকেরের শেষ দৃশ্যের সময়েও তাকালাম – মাথা নিচু করে আছেন। ভায়োলেন্স এবং ভালগারিটি তার পছন্দ হচ্ছিল না। ভদ্রমহিলার বয়স ফর্টির কাছাকাছি হবে।
      সিনেমাটা ভালোভাবে নির্মিত সিনেমা – এটা সুখকর 🙂

  21. একটি তথ্য জানিয়ে শুরু করি, চোরাবালি নিয়ে আপনার রিভিইটাই প্রথম নয়! আমি সিনেমা রিলিজের দিন সকাল ১১টায় নেটে একটা ‘রিভিউ’ পড়েছি। যদিও ‘রিভিউকারী’ অসাবধনাবশত ‘রিভিউ’তে লিখেছেনÑ টিকিট নিয়ে কাড়িকাড়ি করে অতঃপর হলে ঢুকতে পেরে তার ভাল লেগেছে। (অথচ ততক্ষণ পর্যন্ত হলগুলোতে ছবিরি মর্নিং শো চলার কথা। তার মানে, রিভিউকারী স্রেফ [ভাই-বেরাদার গ্রুপের কেউ হবে হয়তো] ছবির প্রচারে চাপা মেরেছে!)। রিভিউ(?)-তে চোরাবালির এন্তার প্রশংসা। প্রশংসায় আপত্তি নেই। সিনেমাটা দেখেছি। খারাপ নয়। তবে একটি বিষয় ভাবতে বলি, গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলো ও ইত্তেফাক ছবিটির ব্যাপক প্রচার দিয়েছে (এফডিসি’র ছবিগুলো নিয়ে তারা কখনো এই প্রচারটা করে না। হিন্দি ছবি নিয়ে প্রায় প্রতিটি পত্রিকা প্রতি সপ্তাহেই ওই ধরনের প্রচার চালায়।) আর রিলিজের পর আপনারা নানা রিভিউতে ছবিটার ভালটাই বেশি দেখছেন। দেখুন। আপত্তি নেই। তবে কথা হলোÑ এফডিসি’র ছবিগুলো ওই ধরনের প্রচার পেলে সিনেমার দর্শক-খরা এতদিনে অনেকটাই কেটে যেত।
    লম্বা হয়ে যাচ্ছে। তারপরও আর একটা কথা: শহীদুজ্জামান সেলিম একটা ইন্টারফিউতে এরই মধ্যে বলেছেন, ‘এই ছবিটা হিট হবেই’। কেমন হিট? খোঁজ নিয়ে জেনেছি, রিলিজের দিন নারায়ণগঞ্জের নিউ মেট্রো হলের সেল ছিল ৬০ হাজার টাকা। পরের দিন সেল নেমে এসেছে মাত্র ২৩ হাজার টাকায়। ছবিটার নির্মাণ ব্যয় নাকি ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা! ব্যবসার ফলটা এমন হলে আরেকটা ‘চোরাবালি’র প্রযোজক খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে তো?

    1. দারুন একটা মন্তব্য করেছেন ভাই (এইবার আর নাম বলবো না, ভুল হয়া যাইতে পারে 😉 )
      আমার রিভিউ প্রথম না, আমার আগে প্রিমিয়ার শো-তে দেখে লিখে রাখছে কিন্তু পাবলিশ করে নাই এমন লোক আছে। হ্যা, প্রচারণার বিষয়টা ভালো বলছেন। এফডিসি-র ছবিগুলোকে প্রচার করা হয় না, অনেক ছবির মুক্তির খবরটা পর্যন্ত পত্রিকায় আসে না। এই ধরনের সিনেমার খবর পত্রিকায় আসবে, আসা স্বাভাবিক। কারণ, এই ছবির পরিচালক প্রযোজকদের মাইন্ডসেট আর প্রকাশক-পাঠকদের মাইন্ডসেট মোটামুটি একই। চোরাবালির টার্গেট দর্শক যারা, প্রতিকার টার্গেট পাঠকও তারা। এফডিসি ভিত্তিক সিনেমা সেরকম নয়। তাদের টার্গেট দর্শক পত্রিকার টার্গেট পাঠক হয় না বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই।

      চোরাবালি হিট হবে সেটা আমিও স্বীকার করি। পৌনে তিনকোটি টাকা উঠে আসবে বলেই বিশ্বাস করি। আগামী সপ্তাহে বিশটা হলে মুক্তি পাচ্ছে চোরাবালি, বর্তমানে সম্ভবত এগারোটা হলে চলছে। কেউ একা দেখতে যাচ্ছে না, যারা কখনো যায় না, তারাও যাচ্ছে/যাবে। সুতরাং টাকা উঠে আসবে আশা করি। আর হ্যা, সিনেমার টাকা পুরোটাই টিকিট বেচা থেকে উঠার দরকার নাই, কুল, মাছরাঙা, রেডিওএফএম হয়তো অনেক টাকা এনে দিয়েছে।

      আপনি দেখেছেন সিনেমাটা? দেখে ফেলতে পারেন, তাহলে এফডিসি-র ট্রেডিশনাল সিনেমার সাথে পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন। জানাবেন কেমন লাগল। ভালো থাকবেন 🙂

      1. বস, ভুল কিন্তু এবারও করেছেন!!! নামের বানানের ভুল এড়াতে নাম লেখেননি। তবে ‘ছবিটা যে আমি দেখেছি’ তা উল্লেখ করা সত্ত্বেও ছবি দেখার পরামর্শ/অনুরোধ করেছেন! কেন এমন ভুল হলোÑ ব্যাখ্যা করেন…!!!

  22. চমৎকার রিভিউ!

    গত কয়েক বছরে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলোর মধ্যে “ভালো” হিসাবে আখ্যা পাওয়া অন্যান্য মুভিগুলার সাথে এই মুভিটির সবচেয়ে বড় পার্থক্য হচ্ছে, এইটা দেখে মনে হয় নাই যে, ১২০ মিনিটের নাটক দেখছি, একে একেবারে বানিজ্যিক মুভির মতো করেই বানানো হইছে। ছবিটি দেখতে যাওয়ার আগে আমার শঙ্কা ছিলো ঐরকমই কিছু হবে…..কারন রনির ব্যাকগ্রাউন্ড নাটকের, আর ওর গুরু ফারুকী এবং কলিগ রাজ এদের ছবিগুলা আমাকে যারপরনাই হতাশ করেছে। আমার কাছে ব্যাচেলর, মেড ইন বাংলাদেশ, থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার, প্রজাপতি এই ছবিগুলাকে পূর্নদৈর্ঘ্য নাটক ছাড়া আর কিছুই মনে হয় নাই। যদিও অনেকেই আমার এই বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষন করবেন, এবং কয়েক জায়গাতে অল্পের জন্য মাইরের হাত থেকে বাইচা গেসি 🙁

    হ্যাঁ, কাহিনিতে কিছু অসামঞ্জস্যতা আছে, কিন্তু এইটা রনির প্রথম কাজ বলে ছাড় দেয়া যায়। আর বাঙলা বানিজ্যিক ছবিতে যদি শেষে নায়ক-নায়িকার মধ্যে একটু ইটিশ-পিটিশ না দেখানো হয়, তাহলে সাধারন দর্শক, যারা ছবিকে বারবার দেখবে, হিট করাবে তাদের কাছেই মার খেয়ে যাবে। আশা করি স্বীকার বাংলা ছবিকে এখনো হিট করাবে ঐ লোকজনই। আমি, আপনি যারা আছি তারা ছবি দেখবো, কিছু ভালো/খারাপ কথা বলবো…..এইটুকুই।

    খুব ভালো ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, ভালো সিনেমাটোগ্রাফি, এডিটিং, চলনসই মানের মিউজিক এর সাথে মিলিয়ে এ.টি.এম,, শহীদুজ্জামান সেলিম, জয়া, আর ইন্দ্রনীলের ভালো অভিনয় ……সবমিলিয়ে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।

    মুভির বেশি কিছু বুঝিনা….তাও অনেক প্যাঁচাল পারলাম না, মনে কিছু নিয়েন না 😛

    1. আমিও কিছু বুঝি না, কিন্তু প্যাচাল পারতে পারতে এট্টুক চৈলা আসছি 🙂
      আপনারে অভিনন্দন, অল্পের জন্য মাইরের হাত থেকে বাচার জন্য 😉

      আবারও আইসেন, প্যাচাল পারলে ভালো লাগে 🙂

  23. আমার কাছে বেশ চোখে লাগছে saturation problem.
    highlighted জায়গা গুলোতে নীল নীল স্পট ফালায় দিছে contrast আর saturation বাড়াইতে গিয়ে, বিশাল পোস্ট প্রোডাকশন এরর…
    প্রথমে ভাবছিলাম সাইডে বসার কারনে বা প্রোজেক্টরের প্রবলেম, কিন্তু বিজ্ঞাপনে এই প্রবলেম নাই, সো এইটা বাজে করছে.. 😐

    1. দারুন পয়েন্ট নোটেড। কিন্তু এইরকম ভুল হওয়ার কারণটা কি? পোস্ট প্রোডাকশনে এই ভুল দেখার পরও মুভি রিলিজ দিবে এমনটা তো হওয়ার কথা না। কি বলো?

      1. বুঝলাম না কাহিনী কি, এরকম হওয়ার কথা না। হলে তো দেখার কথা রনি সাহেবের, উনি কি দেখেন নাই। পরে কি কারেক্টেড কপি দেয়া যাইতো না??

  24. মোটামুটি মানের এই সিনেমাগুলোকে যদি আমরা উৎসাহিত করতে পারি, তবে আরও ভাল সিনেমা আসবে… অনেক কম হলে মুক্তি দিয়েছে… আসলে উপায়ও নাই… তবে ভাল সিনেমার ভাল বাণিজ্যর জন্য সবার আগে দরকার অনেক অনেক সিনেমা হল… ভাল পরিবেশের হল… সেসব কবে হবে এটাই বড় প্রশ্ন…

    সিনেমাটা দেখার সুযোগ নেই এখন, রাজশাহীতে আসেনি… আসলেও যেতে পারব কিনা সন্দেহ…
    কারণ ১# পরীক্ষা চলছে।।
    কারণ ২# সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এখন সিনেমা হল মাত্র ১ টি (জঘন্য পরিবেশ), এবং জানা (চোখে দেখা) ইতিহাস অনুযায়ী তারা মূলধারার বাইরের কোন সিনেমা কখনও চালায়নি… বাকি যে হলে, মাঝে মধ্যে “মূলধারা”র বাইরের সিনেমা আসে, সেটা রাজশাহী শহরের বাইরে… (সর্বশেষ এখানে যে মোটামুটি ভাল সিনেমাটি এসেছিল সেটি “জি হুজুর”, পরীক্ষার কারণে সেটাও দেখতে যেতে পারিনি, মাত্র ১ সপ্তাহ চলেছিল)

    তবে পরীক্ষার পরে যদি ঢাকা যাই, আর তখন পর্যন্ত হলে সিনেমাটি থাকে, তবে অবশ্যই দেখব…

    1. রিপ্লাই দিতে বাদ পড়ে গিয়েছিল, এখন টের পাওয়া গেল।

      আরও অনেকগুলো হলে মুক্তি পেয়েছে। চলবে আরও বেশ কিছুদিন। বোধহয় খবর পেয়েছেন, সিনেমার শেষাংশে পরিবর্তন করা হচ্ছে। সুতরাং, আগ্রহ আরও তৈরী হওয়ার কথা। দেখে ফেলুন – তাজা তাজা সিনেমা দেখার মজাই আলাদা।

      ভালো থাকুন সাঈদ রকীব। 🙂

  25. মোটামুটি মানের এই সিনেমাগুলোকে যদি আমরা উৎসাহিত করতে পারি, তবে আরও ভাল সিনেমা আসবে… অনেক কম হলে মুক্তি দিয়েছে… আসলে উপায়ও নাই… তবে ভাল সিনেমার ভাল বাণিজ্যর জন্য সবার আগে দরকার অনেক অনেক সিনেমা হল… ভাল পরিবেশের হল… সেসব কবে হবে এটাই বড় প্রশ্ন…

    সিনেমাটা দেখার সুযোগ নেই এখন, রাজশাহীতে আসেনি… আসলেও যেতে পারব কিনা সন্দেহ…
    কারণ ১# পরীক্ষা চলছে।। ….
    কারণ ২# সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এখন সিনেমা হল মাত্র ১ টি (জঘন্য পরিবেশ), এবং জানা (চোখে দেখা) ইতিহাস অনুযায়ী তারা মূলধারার বাইরের কোন সিনেমা কখনও চালায়নি… বাকি যে হলে, মাঝে মধ্যে “মূলধারা”র বাইরের সিনেমা আসে, সেটা রাজশাহী শহরের বাইরে… (সর্বশেষ এখানে যে মোটামুটি ভাল সিনেমাটি এসেছিল সেটি “জি হুজুর”, পরীক্ষার কারণে সেটাও দেখতে যেতে পারিনি, মাত্র ১ সপ্তাহ চলেছিল)

    তবে পরীক্ষার পরে যদি ঢাকা যাই, আর তখন পর্যন্ত হলে সিনেমাটি থাকে, তবে অবশ্যই দেখব…

    1. ওহ। হোপলেস হন কেন। ছবির গল্পটা পুরানো, কিন্তু গল্প বলার ভঙ্গিটা কি বাংলাদেশী সিনেমার জন্য নতুন নয়?

      আমি তো চোরাবালি থেকে অনেক কিছু শিখতে পারছি। সিনেমা নির্মাতাদেরও অনেক কিছু শেখার আছে মনে করছি 🙂

  26. আজকে দেখে আসলাম। সর্বোপরি ভালো লেগেছে। কিছু দোষ ত্রুটি চোখে পড়েছে, কিন্তু সেটা মার্জনীয় বটে। চলুক… খারাপ না। 🙂

  27. Goto kal chittagong er almase dakhlam…..apnar sathe purapuri akmot…sumoner sathe osmaner amon ki hoilo je se tar pitritullo vai er biruddhe daralo….joyar sathe ak dinei prem ata just prem dhukate hoi tai….sumoner choritro khub e nirjib kono deepness nai robotic….sumoner flash back er golpo sumoner konthe bolbar kono jukti nai…scenegulai jothesto chilo….dorra marar scene ta purai artificial…..osmaner mrittuta khube sosta hoise r o aktu vaber dorkar chilo….sumoner sathe osmaner action sequence ta akdom e sosta mone hoise…joyar angul kete felbe othocho aikhane joyar expression er kono close up nai….tobe sob kichur upore selimer ovinoy ak kothai onoboddo….cinematography niye to kono kotha nai khaer khondokar amnitei boss public…..chobite oshadharon kisu framing ache….background sound otuloniyo obosso ronyr sob kajer e sound valo hoi….ultimately ai chobita amader valo chobir shopno dakhai

    1. হে হে – আপনি যে এই মন্তব্য করছেন এইটা দেখলাম এখনই, পড়লামও এখন।

      আপনি বেশ ভালো কিছু পয়েন্ট তুলে ধরেছেন। দারুন!

  28. সিনেমায় প্রোডাক্ট প্লেসমেন্টের নামে কুল বডি স্প্রে, রেডিও টুডে এবং মাছরাঙা টেলিভিশনের উৎকট উপস্থিতি, সিনেমার শুরুতেই ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ বাণীর পর সিনেমাজুড়ে অ্যালকোহলের অবাধ ব্যবহার ও প্রদর্শন, বানিজ্যিক উদ্দেশ্য আইটেম সং এর ব্যবহার ইত্যাদি শঙ্কিত করে তোলে।kenu?

    1. কেন শঙ্কিত করে তোলে সেটা আসলে এই লাইনগুলার মধ্যেই আছে, খেয়াল করলে জবাব আপনিও পেতেন।
      সিনেমায় প্রোডাক্ট প্লেসমেন্টের নামে কুল বডি স্প্রে, রেডিও টুডে এবং মাছরাঙা টেলিভিশনের * উৎকট* উপস্থিতি, সিনেমার শুরুতেই ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ বাণীর পর সিনেমাজুড়ে *অ্যালকোহলের অবাধ ব্যবহার ও প্রদর্শন*, *বানিজ্যিক উদ্দেশ্য আইটেম সং* এর ব্যবহার ইত্যাদি শঙ্কিত করে তোলে – এই সবই আসল উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত। বলে শংকিত হতেই হয়।

  29. মুভি পোস্টারে নায়ককে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, মুভিতে সে রকম হ্য় নি। “সুমন” আর বেশী উচু ব্যক্তিত্বের অধিকারী হিসেবে উপস্থাপন করা যেত উদাহরন স্বরুপ “টম ত্রুজ” এর “collateral” বলা যেতে পারে। আমার মতে চলচ্চিত্রটি এর অর্থে তেমন একটা সার্থক হয় নি। কোথায় যেন সুমন চরিত্রটি খুব হালকা মনে হয়েছে। তার থেকে “্ওসমান” চরিত্রটি যথেষ্ট শক্তিশালী মনে হয়েছে আমার কাছে।
    আমার রেটিং ? না বলি ।

Leave a Reply to ওয়াহিদ সুজন Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *