চায়নাটাউন (Chinatown): কেন একটি সিনেমা সর্বকালের সেরা হয়?

চায়নাটাউন ছবির পোস্টার

১৯৭৪ সালে রোমান পোলানস্কির মুিভ ‘চায়নাটাউন’ মুক্তি পাওয়ার পরে সবদিকে সাড়া পড়ে গেল। দেখতে দেখতে এই সিনেমা সেরা সিনেমার তালিকায় মোটামুটি পাকা অবস্থান করে নিল। গবেষনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হল। এই সাড়া পড়ার কারণ অনেকে অনেক ভাবে বিশ্লেষন করার চেষ্টা করেছেন পরিচালক রোমান পোলানস্কির জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে এই সিনেমার সাথে মেলানো যায়, আবার সিনেমা হিসেবে ইতিহাসে একটি মাইল ফলক হিসেবে এই সিনেমাটি স্থান দখল করে আছে। বিশেষ করে, যারা চিত্রনাট্য নির্মাতা হিসেবে নিজেেদরকে তৈরী করতে চায় তাদেরকে এই সিনেমা পড়াশোনা করে তারপর এগোেনার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।

চিত্রনাট্য লেখা নিয়ে আমার একটা ধারণা ছিল, গল্প লেখার ব্যাপারটা অনেকটা গড গিফটেড। শূন্য থেকে আসে – যখন আসে তখন ঝর্ণাধারার মতো এগোয়, আর যদি না আসে তখন তাকে ‘রাইটার্স ব্লক’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এই ধারণা থেকে আমি কিছুটা সরে এসেছি, পুরোটা নয়, কারণ ইতিমধ্যেই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে শিখে নিয়েছি- একটি গল্প বা চিত্রনাট্য হাতে ধরে ইটের পর ইট সাজিয়েও তৈরী করা যায়। প্রত্যেকটা চরিত্র, প্রত্যেকটা দৃশ্য, প্রত্যেকটা সংলাপের পেছনে একটি করে গল্প থাকতে পারে যা চিত্রনাট্যের গাথুনিকে আরও মজবুত করে। চায়নাটাউন সেরকমই একটা সিনেমা যার প্রতিটি পরতে পরতে কিছু না কিছু লুকিয়ে আছে, পরিচালক রোমান পোলানস্কি তার জ্ঞান এবং দক্ষতা বেশ ভালোভাবেই প্রয়োগ করেছেন এই সিনেমায়।

সিনেমার আলোচনায় যাওয়ার আগে এই সিনেমাটা সম্পর্ক কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক। চায়নাটাউন ১৯৭৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা, পরিচালক রোমান পোলানস্কি। সিনেমার প্রধান চরিত্র জ্যাক নিকলসন, নািয়কা চরিত্রে ফে ডুনাওয়ে। এছাড়াও রয়েছে জন হিউস্টন। সিনেমাটা কতটা বিখ্যাত এবং গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝা যায় এর অ্যাওয়ার্ড লিস্ট এবং অনার লিস্ট দেখলে। চায়নাটাউন হল সর্বকালের সেরা মুভিগুলোর অন্যতম। আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউটের সর্বকালের সেরা মিস্ট্রি সিনেমার তালিকায় এর অবস্থান দ্বিতীয়তে। মোট এগারোটা ক্যাটাগরীতে অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের নমিনেশন পেলেও শুধুমাত্র সেরা স্ক্রিনপ্লে-তে অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয়। চারটে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার ছাড়াও রয়েছে আরও অনেকগুলো পুরস্কার, রয়েছে বিভিন্ন তালিকায় প্রথম দিকের অবস্থান। বলাবাহুল্য, এ সকল তথ্যই আমাকে সিনেমাটা নিয়ে বিস্তারিত পড়ার আগ্রহ তৈরী করেছে।

সিনেমার গল্পটা আর দশটা ডিটেকটিভ গল্পের মতই – সাধারণ ঘটনা থেকে নানা ঘটনার মোড়কে জটিল থেকে জটিলতর পরিস্থিতি এবং সব শেষে খোলস খুলে সত্যিটা বের করে আনা। একজন প্রাইভেট ডিটেকটিভ, তার নাম জেক গিেটস, হলিস মুলরে নামের লস অ্যাঞ্জেলস ওয়াটার – পাওয়ার কোম্পানির চিফ ইঞ্জিনিয়ারের উপর গোয়েন্দাগিরির দায়িত্ব পায়, দায়িত্ব দেন মিসেস মুলরে। দেখা গেল, ইঞ্জিনিয়ার হলিস কোন একজন অল্পবয়সী মেয়ের সাথে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছেন।

এমনই একটি পরদিন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে গেলে এবং উকিলসহ একজন ভদ্রমহিলা যার নাম ইভলিন হাজির হলে বোঝা গেল আগের মহিলাটি আসল ছিলেন না। হলিসের নামে স্ক্যান্ডাল ছড়ানোর জন্যই এই ব্যবস্থা। হলিস তখন শহরে বেশ আলোচনার বস্তু কারণ তিনি চিফ ইঞ্জিনিয়ার হিেসবে শহরে প্রস্তাবিত বাধের বিরোধিতা করছেন। শহরটি তখন খরায় ভুগছে এবং পানির প্রয়োজন, কিন্তু পুরানো একটি বাধ ভেঙ্গে দুর্ঘটনায় বেশ কিছু মানুষের প্রাণহানি ঘটায় হলিস নতুন কোন ঝুকি নিতে চাইছিলেন না। চাষীদের অভিযোগ ছিল হলিস পানি চুরি করছেন। গল্পের শুরু এভাবেই।

সিনেমার পটভূমি ১৯৩৭ সালের লস অ্যাঞ্জেলস শহর। সেপ্টেম্বর ১৭৮১ সালে স্থাপিত এই শহরের সামান্য ইতিহাস জানতে হবে সিনেমাটি বোঝার জন্য। রেলরোড এবং তেলখনি আবিস্কারের কারণে ওই অঞ্চল তখন সবে উন্নতির দিকে পা বাড়িয়েছে। ১৯০০ সালের দিকে লোকসংখ্যা এক লক্ষ পার হলে পানির সংকট বৃদ্ধি পায়। লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের এই পানির সংকট ছিল ক্যালিফোর্নিয়ার ওয়েন্স ভ্যালির সাথে। ওয়েন্স ভ্যালিতে পানির মালিক ছিল রেঞ্চার এবং কৃষকরা। কিন্তু বিশেষ উপায়ে এই পানি লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় বেশ কিছু দ্বন্দ্ব সৃষ্টিকারী ঘটনা ঘটে যা ক্যালিফোর্নিয়া ওয়াটার ওয়ারস বলে পরিচিত।

সিনেমায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় যখন মিসেস মুলরের মামলা থেকে বাচার জন্য জ্যাক গিটেস মি: মুলরের সাথে দেখা করার সুযোগ খুজতে থাকে এবং একটি ওয়াটার রিজারভারে তার সাথে দেখা করতে গিয়ে মৃত অবস্থায় পায়। গল্পে বাক নেয়া এই জায়গায় জ্যাকের সাথে দেখা হয় পুরানো কলিগ লেফট্যানেন্ট এসকোবার এর সাথে। চায়নাটাউনে পুলিশ অফিসার হিসেবে জ্যাক যখন কর্মরত, তখন এসকোবার তার সঙ্গী ছিল। জানা গেল প্রতি রাতে রিজারভার থেকে বিপুল পরিমান পানি ছাড়া হয় এবং হয়তো সেখানেই ডুবে মরেছেন চিফ ইঞ্জিনিয়ার হলিস। রাতে গোপনে রিজারভারে প্রবেশ করলে জ্যাক ধরা পরে যায় চিফ ডেপুটি ইঞ্জিনিয়ারের সহকারী ক্লদ মুলভিলের হাতে এবং শাস্তিস্বরূপ জ্যাক গিটেসের বাম নাকের পাটা ধারালো ছুির দিয়ে কেটে দেয়া হয়। বিশাল এক ব্যান্ডেজ বাধতে হয় নাকের উপরে এবং সিনেমার প্রায় পুরোটা জুড়েই এই ব্যান্ডেজ জ্যাকের নাকে ছিল।

চায়নাটাউন নামের সাথে বিশাল নাক ব্যান্ডেঞ্জ তাই অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। বলা বাহুল্য, এই পট্টিতে জ্যাককে আকর্ষনীয় লাগছিল না বটে, তবে তাই বলে সিনেমায় তার গুরুত্ব বা উপস্থিতি কোনটাই কমে নি। রোমান পোলানস্কি এই বিষয়ে একটি ঝুকি নিয়েছিলেন – সিনেমার হিরোকে অসুন্দর করে উপস্থাপন করার ঝুকি। তিনি ব্যর্থ হন নি।

নাক কাটা যাওয়ার পরে জেক গিেটস বুঝতে পারে, রহস্যের সমাধান রয়েছে সুন্দরী এভলিন মুলরের কাছে। প্রয়োজনীয় কোন তথ্য গোপন করে যাচ্ছে এভিলিন। এভিলিনের কাছ থেকে জানা গেল, হলিস মুলরে জানতে পেরেছিল পানির একটা অংশ নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে খরা তৈরী করার জন্য, একই সাথে আরেকটা ওয়াটার রিজারভার তৈরী করার সমর্থন আদায়ের জন্য।

ওয়াটার অফিসে যোগাযোগ করতে গিয়ে জানা গেল নোয়া ক্রস নামের একজন ধনী কৃষক ভদ্রলোক এই ওয়াটার সাপ্লাইয়ের মালিক। আরও জানা গেল, হলিস মুলরে ছিলেন তার ব্যবসায়িক পার্টনার এবং তিনি নোয়া ক্রসকে বাধ্য করেছিলেন পানির প্রবাহকে শহরের দিকে নিয়ে যেতে। ফলে দুই ব্যবসায়িক পার্টনারের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরী হয়। আরও জানা গেল নোয়া ক্রসের মেয়েই মিসেস এভিলিন ক্রস মুলরে – যা এভিলিন গোপন করে রেখেছিল গিটেস এর কাছ থেকে।

চায়নাটাউন একটি মডার্ন নিও নয়ার সিনেমা। মডার্ণ নিও নয়ার হল ফিল্ম নয়ার এর পরের ধাপ। অর্থাৎ চায়নাটাউন বোঝার জন্য ফিল্ম নয়ার সম্পর্কে কিছু জানা থাকলে ভালো। গত শতকের ৪০ ও ৫০ এর দশকে, বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সময়ে ফিল্ম নয়ার সিনেমা বেশ ইতিহাস তৈরী করেছিল। ফিল্ম নয়ার সিনেমা মূলত সাদাকালো সিনেমার সাথে সংশ্লিষ্ট, কারণ এর মূল বৈশিষ্ট্যগুলো সাদাকালোর যুগেই করা সম্ভব হত। মোটা দাগে বলতে গেলে ফিল্ম নয়ার সাদা আর কালো বা আলো আর অন্ধকার নিয়ে খেলতে পছন্দ করে। অন্ধকার রুমে জানালার কপাট দিয়ে সামান্য আলো, আধারে ঢাকা সংকীর্ন গলি, বৃিষ্টতে ভেজা পথঘাট এবং এর সাথে অল্প আলোর ব্যবহার যাকে সিনেমার ভাষায় লো কি লাইটিঙ বলে ইত্যাদি ফিল্ম নয়ার সিনেমার ছবিসংক্রান্ত বৈশিষ্ট্য।

এছাড়াও আছে প্লট বিষয়ক বৈশিষ্ট্য – যেখানে মিস্ট্রি এবং ক্রাইম ড্রামা বেশী গুরুত্ব পায়। মানুষের জীবনের অন্ধকার বিষয়গুলো নিয়ে ফিল্ম নয়ােরর কাজ। এই ধরনের সিনেমায় চরিত্রগুলোও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত কোন ডিটেকটিভ থাকেন যিনি প্রায় একাকীই কাজ করেন। খুবই গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল এর নারী চরিত্রটি। খুবই সুন্দরী কোন নারী খুবই ভয়াবহ কোন চরিত্রে অভিনয় করেন। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এই সুন্দরী রমনীটিই সিনেমার মূল খলনায়ক হয়ে থাকেন। মডার্ণ নিও নয়ার ক্লাসিক ফিল্ম নয়ারের এই বৈশিষ্ট্যগুলো বজায় রেখেই আরও কিছু উপাদান যোগ করে। যেমন চায়নাটাউন সিনেমার চিত্রায়ন হয়েছে কালার ফিল্মে যা ফিল্ম নয়ারের অন্যতম বৈশিষ্ট্যের লঙ্ঘন। ক্লাসিক ফিল্ম নয়ারের মতই চায়নাটাউনেও শেষটা গতানুগতিক হতে পারতো, কিন্তু এখানো রয়েছে একটি দ্বান্দ্বিক সমাপ্তি।

চায়নাটাউন সিনেমার শ্রেষ্ঠত্বের সবচে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল এর স্ক্রিপ্ট। লিখেছেন রবার্ট টাউন। তিনি ২৫ হাজার ডলারের বিনিময়ে স্ক্রিপ্টটা লিখে দিয়েছিলেন প্রযোজককে। লেখকের পরিকল্পনা ছিল ভিন্ন। তিনি পাবলিক রিসোর্স নিয়ে কিছু করার চেষ্টা করেছিলেন – জেক গিেটস মূলত তার ট্রিলজির একজন নায়ক। তার ইচ্ছে ছিল তিনি তিন ধরনের সম্পদ নিয়ে তিনটি কাহিনী তৈরী করবেন। এর মধ্যে চায়নাটাউন হল ওয়াটার রিসোর্স নিয়ে, তারপরের সিনেমা ছিল তেল সম্পদ নিয়ে, নাম ‘দ্য টু জেকস’। এই নামে একটি সিনেমা নির্মিতও আছে, পরিচালক জ্যাক নিকলসনই, কিন্তু চায়নাটাউনের মত ব্যবসাসফল না হওয়ায় তৃতীয় সিনেমা যা ভূমি নিয়ে নির্মিতব্য ছিল তা বাদ দেয়া হয়।

চায়নাটাউন নির্মিত হয় বাস্তব কাহিনীর উপর ভিত্তি করে যদিও সেটা কোথাও বলা হয়নি। ১৯০০ সালের গোড়ায় লস অ্যাঞ্জেলেস ওয়াটার ডিপার্টমেন্টের প্রধান উইলিয়াম মুলহল্যান্ড, তার সাথে মেয়র ফ্রেড ইটন শহরকে আরও বর্ধিত করার উদ্দেশ্যে দূরের ওয়েন্স রিভারের দিকে নজর দেন। এ উদ্দেশ্যে তারা কিছু দূর্নীতি আশ্রয়ও নেন। তারা শহরবাসীকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন, শহরের জন্য পানির প্রয়োজন যদিও তাদের উদ্দেশ্য ছিল পার্শ্ববর্তী জমিগুলোকে উর্বর করা যা পরবর্তীতে বেশী দামে বিক্রি করা সম্ভব হবে।

পুরো ঘটনাটাই এমন একটা অবস্থাকে নির্দেশ করে যেখানে পুরা প্রশাসনটাই দূর্নীতিগ্রস্থ – যেন চায়নাটাউন। পুরো সিনেমাজুড়েই চায়নাটাউন বলে যে শহরটিকে ইংগিত করা হয়েছে এবং শেষ দৃশ্য যেখানে মঞ্চায়িত হয়েছে সেই চায়নাটাউন আসলে প্রতীকি। চায়নাটাউন হল এমন একটা শহর বা এমন একটা অবস্থা যেখানে অন্যায় এতটাই দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে যে কোনভাবেই এর মূলোৎপাটন করা সম্ভব হয় না। একটা অন্যায়কে ঢেকে দেয় আরেকটি অন্যায়। অন্যায়কারী লোকগুলোই প্রভাবশালী এবং ক্ষেত্রবিশেষে প্রশাসনও এদের সহযোগী – কারণ এটা চায়নাটাউন।

যে কাহিনীকে কেন্দ্র করে এই সিনেমা, সেই কাহিনী খুব পুরাতন কিছু নয়। উন্নত দেশগুলোর ক্ষেত্রে এইসব ঘটনা খুব আলোচনার সৃষ্টি করে আর আমাদের মতো দেশে সেই আলোচনা খুব বিস্ময়ের জন্ম দেয়, কারণ এইধরনের ঘটনা বাংলাদেশ সহ বিশ্বের প্রায় সব অনুন্নত দেশের খুব স্বাভাবিক ঘটনা। চায়নাটাউন সিনেমায় কাহিনী একটিমাত্র বিষয়কে কেন্দ্র করে নয়, কাহিনী আগানোর সাথে সাথে বিভিন্ন দিকে বাঁক নিয়েছে, নতুন নতুন চরিত্র যোগ হয়েছে, নতুন নতুন সাসপেন্সের জন্ম হয়েছে। এটি গল্পে একটি দুরন্ত গতি এনে দিয়েছে।

দর্শক হিসেবে আমরা নায়ক জেক গিটেসের সাথে সাথে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি, জেক যা দেখেছে বা শুনেছে ঠিক তাই দেখেছি এবং শুনেছি, ফলে জেক আর নিজের মধ্যে কোন পার্থক্য করতে পারি না। জেক এর সাথেই বা আগেই সমস্যার সমাধান করে ফেলা দর্শকের পক্ষে সম্ভব। এইখানে জেক গিটেসের সাথে অন্যান্য সিনেমার ডিটেকটিভদের পার্থক্য লক্ষ্যনীয়। পুরো সিনেমায় জেক ব্যর্থতায় পরিপূর্ণ একজন মানুষ। তার সিদ্ধান্তগুলো ভুল অনেকগুলো ক্ষেত্রে, সে খুব বলশালীও নয়, নিজের নাক বাচাতে পারে নি, মার খেয়ে অজ্ঞান হতে হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু জেক এর গুনের মধ্যে রয়েছে হাল না ছাড়া, শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য অপেক্ষা করা।

চরিত্রের বিচারে এভিলিন মুলরেকেও বিশ্লেষন করা যেতে পারে। ফিল্ম নয়ার সিনেমার মতো এভিলিন সুন্দরী, কাহিনী আগানোর সাথে সাথে তার হিংস্র চরিত্রও প্রকাশ পায় অবশ্য শেষ পর্যায়ে গিয়ে সম্পূর্ণই পাল্টে যায়। এখানেই ফিল্ম নয়ার পাল্টে গিয়ে নিও নয়ার হয়ে যায়। এভিলিনের গোপন করার মতো অনেক কিছু ছিল, কিন্তু তার আচরন গোপন করার মতো ছিল না। ফলে জেক তাকে সন্দেহ করতে শুরু করে এবং এক সময় হাতে নাতে ধরে ফেলে। নারী চরিত্রের দুর্বলতা এখােন ফুটে উঠে।

সবচে শক্তিশালী চরিত্র হল নোয়া ক্রস। সে সমাজের প্রভাবশালী অংশকে খুব দারুনভাবে রিপ্রেজেন্ট করে। এই অংশের ক্ষমতা প্রচন্ড। প্রশাসন সহ সব কিছু তাদের হাতের মুঠোয়, অর্থের জন্য এরা করতে পারে না এমন কিছু নেই, নৈতিকতার দিক দিয়েও এই অংশ খুব সুবিধাজনক অবস্থানে নেই, তাদের সহায়তা করে পুলিশের মতো অংশ। নোয়া ক্রস তার চরিত্রটি এতটাই শক্তিশালীভাবে তুলে ধরেছে যে তা অতুলনীয়। তার নির্বিকার ভাব, মানসিক স্থিরতা এই ধারনাই দেয় যে সে সঠিক, বাকী সবাই ভুল। এসকোবারের মত পুলিশ অফিসাররাও পরিস্থিতির শিকার।

যে চরিত্রগুলো নিয়ে সিনেমা তৈরী সেগুলো কি নিছকই চরিত্র? উইকিপিডিয়া বলছে তা নয়। হলিস মুলরে এবং নোয়া ক্রস নামগুলো বেশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই ব্যবহার করা হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেস ওয়াটার ডিপার্টমেন্টের চিফ ইঞ্জিনিয়ার উইলিয়াম মুলহল্যান্ডের নাম থেকে হলিস মুলের তৈরী – এটি একটি অ্যানাগ্রাম (অ্যানাগ্রাম হল একই অক্ষর দিয়ে তৈরী ভিন্ন ভিন্ন শব্দ। যেমন: ARMY হতে পারে MARY) অন্যদিকে নোয়া নামটা হযরত নূহ (আ) নামের সাথে বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ, এর সাথে বন্যার সম্পর্ক। এর সাথে মুলহল্যান্ডের ভালো এবং মন্দের দিকে ইঙ্গিত করে। এ ছাড়া ডায়লগ, সিনেমার নাম কিংবা অন্যান্য চরিত্রের উপস্থিতি কম বেশী পরিকল্পনামাফিক।

চায়নাটাউন সিনেমায় স্ক্রিপ্ট অনেক জোরদার একথা যেমন সত্যি, তেমনি পরিচালক রোমান পোলানস্কিকেও এড়িয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। বরং একটি স্টোরীকে বিভিন্ন রূপক আর অর্থবহ দৃশ্য দিয়ে সাজিয়ে যথাযথভাবে উপস্থাপন করার মুন্সিয়ানা অবশ্যই রোমান পোলানস্কির। জ্যাক নিকলসনের মাধ্যেম পোলানস্কি এই স্ক্রিপ্টের খোজ পান। প্রযোজক চেয়েছিলেন এই সিনেমাটার পরিচালনা পোলানস্কিই করুক – ফলে পোলানস্কি বেশ স্বাধীনতা পেয়েছিল। স্ক্রিপ্টে ব্যাপক পরিবর্তন এনেেছন পোলানস্কি।

গল্পের শেষে একটা সাধারণ বহুল চর্চিত সমাপ্তি ছিল, কিন্তু পোলানস্কি সেটাকে সম্পূর্ণ পাল্টে দেন। তিনি গল্প বলার ঢং এও পরিবর্তন নিয়ে আসেন। মূল চিত্রনাট্যে ভয়েসওভারের মাধ্যমে গল্প এগিয়ে গিয়েছিল। পোলানস্কি সেটাকে পাল্টে বর্তমান রূপ দেন যেন প্রধান চরিত্র জেক গিটেসের পাশাপাশি দর্শকরাও সিনেমাতে অংশগ্রহন করতে পারে, সম্ভব হলে নিজ মেধা খাটিয়ে অগ্রসর হতে পারে। এ কারণেই সিনেমার ক্যামেরা শুধু জেক গিটেসের সাথেই ঘুরেছে, সে যা দেখেেছ তাই দেখিয়েছে।

চায়নাটাউন সিনেমায় সংলাপ এবং দৃশ্যায়নের মাধ্যমে বিভিন্ন মেসেজ দর্শকের কাছে দেয়ার চেষ্টা করেছেন পরিচালক। এ কারণে এই সিনেমার বিভিন্ন সংলাপ এবং দৃশ্য স্মরনীয় হয়ে আছে। সবচে বেশী আলোচিত এর সমাপ্তি দৃশ্যটি। পরবর্তীকালে এই ধরনের সমাপ্তির সাথে পরিচালক রোমান পোলানস্কির জীবনকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করেছেন। ফলে এই সিনেমাটি আরও কিছু বিখ্যাত সিনেমা যেমন এইট এন্ড হাফ, অ্যানী হল বা দ্য ফোর হান্ড্রেড ব্লোজ সিনেমার মত আত্মজীবনীমূলক সিনেমার সাথে আলোচনায় চলে আসে।

১৯৩৩ সালে জন্মগ্রহন করা এই চলচ্চিত্র নির্মাতার জীবন নানা অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ। ১৯৬২ সালে নাইফ ইন দ্যা ওয়াটার নামে একটি পূর্ণ দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মানের আগে তিনি বেশ কিছু শর্ট ফিল্ম নির্মান করেন। নাইফ ইন দ্যা ওয়াটার সিনেমা তাকে বিশ্ব পরিচিতি এনে দেয়। সিনেমটি বিদেশী ভাষার সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে মনোনীত হয়েছিল। এর পর তিনি বেশ কিছু সফল সিনেমা নির্মান করেন যার প্রায় সবকটিই আধিভৌতিক বিষয় নিয়ে। এর মধ্যে রিপালসন (১৯৬৫) সিনেমািট বেশ প্রশংসনীয়। ১৯৬৮ সালে পোলানস্কি ‘রোজমেরিস বেবী’ নামে একটি সিনেমা নির্মান করেন। এই সিনেমায় তিনি শয়তানের পূজারী একদল লোকের কাহিনী তুলে ধরেন। সিনেমার নির্মানে তিনি এতটাই সফলতা অর্জন করেছিলেন যে তার পেশাগত খ্যাতি দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে।

কিন্তু এই সুখ বেশীদিন থাকে নি। তার স্ত্রী শ্যারন টেট যিনি তারই একটি সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়েন এবং পরবর্তীতে পরিণয়ে রূপ দেন, তাকে আরও চারজন অতিথি সহ হত্যা করা হয়। ধারণা করা হয়, এই হত্যাকান্ডের পেছনে শয়তানের পূজারী কোন দলের হাত রয়েছে। হত্যাকান্ডটি ঘটে লস অ্যাঞ্জেলেসেই, পোলানস্কির বাড়িতে। এই ঘটনার পরে পোলানস্কি ইউরোপে চলে যান এবং এর পরবর্তী দুটি সিনেমায় তিনি ব্যাপক ভায়োলেন্স দেখান যা হত্যাকান্ডেরই প্রভাব বলে বিশ্বাস করা হয়। পাচ বছর পরে রোজমেরিস বেবি সিনেমার প্রযোজক রবার্ট ইভান্সের অনুরোধে আবার ফিরে আসেন ‘চায়নাটাউন’ পরিচালনা করার জন্য।

সুতরাং গল্পের ভিন্ন রকমের সমাপ্তির সাথে তার জীবনের ঘটনাকে মিলিয়ে নেয়া খুব কষ্টকর হয় না। কিন্তু চায়নাটাউন সিনেমা মুক্তির পরেও আরও ঘটনা ঘটে যায় যা পরবর্তীতে তাকে আরও ভালো ভাবে এই সিনেমার সাথে জড়িয়ে স্টাডি করার পরিবেশ তৈরী করে দেয়। চায়নাটাউন সিনেমার বিশাল সাফল্যের মাত্র দুই বছর বাদে পোলানস্কির বিরুদ্ধে শিশু যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তোলা হয়। যে মেয়েটিকে তিনি ধর্ষন করেছিলেন তার বয়স ছিল মাত্র তের বছর, ফলে এই ঘটনার মাধ্যমে তারই সিনেমার নোয়া ক্রস চরিত্রের সাথে মিশে যান। সেই থেকে পোলানস্কি একজন ফেরারী, তিনি ফ্রান্সে থেকে চলচ্চিত্র নির্মান করেন, আমেরিকায় এলেই তিনি গ্রেফতার হবেন। এ কারণেই দ্য পিয়ািনস্ট সিনেমার পুরস্কার তিনি নিজে গ্রহন করতে পারেন নি, করেছিলেন তার পক্ষ থেকে আরেকজন।

সম্ভবত পোলানস্কির বিরুদ্ধে যে অভিযোগটা তোলা হয় তা মিথ্যে নয়, ফলে বিস্ময় তৈরী হয় কারণ একজন অপরাধী শুধু দেশ ভিন্ন বলে সবার সামনে অবস্থান করেও তার কৃত অপরাধের জন্য শাস্তি থেকে বেচে যান। অনিচ্ছাকৃত হলেও এই ঘটনা, তারই সিনেমা চায়নাটাউনের সাথে বেশ মিলে যায়। সিনেমার শেষ দৃশ্যের সঙলাপ – ফরগেট ইট, জেক। ইটস চায়নাটাউন’- যেন তারই উদ্দেশ্য বলা। পৃথিবীটাই একটা চায়নাটাউনে পরিণত হচ্ছে যেখানে পোলানস্কির হত্যাকারীরা বেচে যাচ্ছে আবার বেচে যাচ্ছে পোলানস্কির মত অপরাধীরাও, আর চায়নাটাউনের মানুষেরা তাদের সামনে সংগঠিত অপরাধ দেখেও মুখ বুজে যাচ্ছে কারণ আর কিছুই নয় – কারণ এটি একটি চায়নাটাউন।

তথ্য কৃতজ্ঞতা:
এটি কোন মৌলিক লেখা নয়। চায়নাটাউন সিনেমার সাফল্য নিয়ে পড়তে পড়তে অনেক কিছু পড়া হয়ে গিয়েছিল। সব মিলিয়েই এই লেখা। যে সকল উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে:

  • www.filmsite.org/chin.html
  • www.sparknotes.com/film/chinatown/canalysis.html
  • www.scribd.com
  • http://tlap.hubpages.com/hub/Chinatown-Film-Review
  • en.wikipedia.org/wiki/Chinatown_(1974_film)
  • en.wikipedia.org/wiki/Neonoir

About দারাশিকো

আমি নাজমুল হাসান দারাশিকো। লেখালিখির প্রতি ভালোবাসা থেকে লিখি। পেশাগত এবং সাংসারিক ব্যস্ততার কারণে অবশ্য এই ভালোবাসা এখন অস্তিত্বের সংকটে, তাই এই ওয়েবসাইটকে বানিয়েছি আমার সিন্দুক। যোগাযোগ - darashiko(at)gmail.com

View all posts by দারাশিকো →

21 Comments on “চায়নাটাউন (Chinatown): কেন একটি সিনেমা সর্বকালের সেরা হয়?”

  1. তাড়াতাড়ি বাকিটুকু দেন………আমার কিছু প্যাচ লেগেছে মুভিটা দেখে….ক্লিয়ার হতে হবে

    1. আমি লিখছি এখন। কালকেই যেন দ্বিতীয় পর্ব দেয়া যায় সে চেষ্টা থাকবে। আপনার প্রশ্নগুলো করে ফেলতে পারেন, সেক্ষেত্রে আমার যদি জানা থাকে তবে কাভার করে দেয়ার চেষ্টা করবো।

  2. ওকে…..পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম……ঠিক প্রশ্ন বলা যাবে না…….বলতে পারেন মনের কিছু খটকা…….আপনার লেখাটা পুরো পড়লেই ক্লিয়ার হয়ে যাবো আশা করছি……আগে পড়ে নেই….

  3. মুভিটা অনেক দিন আগে দেখেছি । অসাধারন এক সৃষ্টি ……

    1. লেখা শেষ পর্যায়ে কিন্তু সমস্যা হল আরও কয়েকটা মুভি পোস্ট লিখে ফেলেছি, তাই সিরিয়ালে পিছিয়ে পড়েছে 🙂

      আপনি কিন্তু সব আলোচনা জমা করে ফেলতেসেন বস 😉

  4. দারাশিকো ভাই, পরের পর্ব চাই তাড়াতাড়ি।

  5. এই পোস্ট কে বড় না করে আলাদা পোস্ট দিলে সবার সুবিধা হত……

  6. শেষ হইয়াও হইল না শেষ অবস্থা…এর পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

  7. সত্যি কথা বলতে কী একনাগাড়ে সিনেমার কাহিনী পড়তে গিয়ে বিরক্তি চলে আসছিলো।
    কিন্তু যেই আপনি কাহিনী ছেড়ে আলোচনায় ঢুকলেন সেই নড়ে চড়ে বসলাম।
    দারুন লাগলো!
    ধারণা করা হয় পোলানস্কির বেশিরভাগ চলচ্চিত্রই তার জীবনে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার ফলাফল।
    আমি অ্যাপার্টমন্টে ট্রিলজি আর চায়নাটাউন এ চারটা মুভি পরপর দেখেছিলাম। সবগুলো মুভিই কেমন যেন একই সুতোয় গাথা বলে মনে হচ্ছিলো। একটু নেট ঘাটাঘাটি করে কিছু তথ্য জানলাম। তখনই জনা গেলো ছবিগুলো তার জীবনের প্রভাব কতটুকু।
    যথার্থই বলেছেন পৃথিবীটাই একটা চায়নাটাউনে পরিণত হচ্ছে যেখানে পোলানস্কির হত্যাকারীরা বেচে যাচ্ছে আবার বেচে যাচ্ছে পোলানস্কির মত অপরাধীরাও, আর চায়নাটাউনের মানুষেরা তাদের সামনে সংগঠিত অপরাধ দেখেও মুখ বুজে যাচ্ছে।
    কিন্তু নামটা কেন চায়নাটাউন এ ব্যাপারটা ক্লিয়ার বুঝা গেলোনা। এখানেও কী কোন রহস্য রেখে দিয়েছেন মি. পোনালস্কি??

    1. ভালো সিনেমা রিভিউতে কাহিনী নিয়ে কচলা কচলি করতে হয় না সেটা জানা আছে, কিন্তু যতটুকু না বললেই নয় – বিশেষত বিশ্লেষনমূলক লেখায় – ততটুকু এড়াতে পারিনি। তবে হ্যা, আরও কম শব্দে কাহিনীটুকু বলার ক্ষমতাটুকু আমাকে আয়ত্ত করতে হবে।

      আমি পোলানস্কি এতগুলো দেখি নাই – বিশেষ করে অ্যাপার্টমেন্ট ট্রিলজির একটা মাত্র দেখা হয়েছে। চায়নাটাউন নিয়ে বেশ ইমপ্রেসড ছিলাম – তাই এত কিছু। চায়নাটাউনের নাম কেন চায়নাটাউন তার উত্তর উইকিতে পাওয়া যাবে – কপি পেস্ট করলাম 🙂
      Robert Towne says he took the title, and the famous exchange, “What did you do in Chinatown?” / “As little as possible”, from a Hungarian vice cop who had worked in Chinatown. The cop explained to Towne that the complicated array of dialects and gangs in Los Angeles’s Chinatown made it impossible for the police to know whether their interventions in Chinatown were helping victims or furthering their exploitation. As a consequence, the police decided the best course of action was to do as little as possible.

      আর কিছু বস? 🙂
      ভালো থাকেন 🙂

  8. সংযোজন করার কিছুই নাই…আর আমি এত বড় তালেবর ও আসলে এখনও হইনি (!)…খালি একটা কথা…পৃথিবী চায়নাটাউন এ পরিণত হয়ে গেছে…প্রেসেন্ট কন্টিনিউয়াস এর আর অবকাশ নাই। অবশ্য আশাবাদী রা ভিন্ন কথা বলবেন।

    1. সংযোজন করার কিছুই নাই…আর আমি এত বড় তালেবর ও আসলে এখনও হইনি (!) – চেষ্টা করুন না – অনেক ভালো কিছু করার ক্ষমতা আপনার মধ্যেই আছে। নিজেকে চিনতে হবে, জাগিয়ে তুলতে হবে – চেষ্টা করাটাই সফলতা 🙂

      আমি কিন্তু মাইন্ড করি নি – আমার ভাবনাটা বললাম মাত্র 🙂

      1. o bhai….mind koren na koren..ami kintu asholei apnake khocha mari nai!!! apnarshathe etodin dhore batchit hoitese ar apni eita bhablen kamne!! ami nijer kothai boltesilam…asholei eto boro talebor hoi nai..dui din ag porjonto bondhu bandhob der shathe tumul juddho lagto eita nie j ami kano cinema jinishta shudhu nijer binodoner jonno dekhi ebong eita nie bichar bisleshon kori na.

        amar kotha gulo j khub bhul bhabe presented hoise eita ami bujhte partesi. ashole eibhabe bola thik hoi nai.

  9. পৃথিবীটাই একটা চায়নাটাউনে পরিণত হচ্ছে যেখানে পোলানস্কির হত্যাকারীরা বেচে যাচ্ছে আবার বেচে যাচ্ছে পোলানস্কির মত অপরাধীরাও, আর চায়নাটাউনের মানুষেরা তাদের সামনে সংগঠিত অপরাধ দেখেও মুখ বুজে যাচ্ছে কারণ আর কিছুই নয় – কারণ এটি একটি চায়নাটাউন। 🙁

Leave a Reply to তন্ময় Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *