সিটি লাইটস: চার্লি চ্যাপলিনের সাইলেন্ট মুভি

সিটি লাইটস সিনেমার একটি দৃশ্য
সিটি লাইটস সিনেমার একটি দৃশ্য

“সিটি লাইটস” চার্লস চ্যাপলিন এর পরিচালনায় অত্যন্ত বিখ্যাত একটি সাইলেন্ট মুভি। ১৯৩১ সালে নির্মিত এই মুভিটি নিয়ে চ্যাপলিন যথেষ্ট চিন্তায় ছিলেন, কারন ১৯২৯ সালেই মুভিতে শব্দ চলে এসেছে এবং যথেষ্ট দাপট নিয়ে হলিউড তার ‘সাউন্ড ফিল্ম’ তৈরী করে যাচ্ছে। এরকম সময় আবার সেই পুরানো সাইলেন্ট যুগে ফিরে যাওয়াকে দর্শকরা মেনে নেবে কিনা তা বোঝা যাচ্ছিল না। মজার ব্যাপার হলো, দর্শকরা মুভটিকে ব্যাপক ভাবে গ্রহন করেছিল, এখনও করে যাচ্ছে। প্রায় সকল ফিল্ম শিক্ষার্থীকেই এই মুভিটি দেখার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়।


সিটি লাইটস সিনেমার মূল চরিত্রে চ্যাপলিন নিজেই অভিনয় করেছেন, সেই ভবগুরে রূপে। যথেষ্ট মজার উপাদান রয়েছে মুভিতে যদিও এটা একটা রোমান্টিক মুভি। তৎকালীন সমাজ ব্যাবস্থার প্রতি কিছুটা বিদ্রুপাত্মকও বটে! ভবগুরে চ্যাপলিন একজন অন্ধ ফুল বিক্রেতার প্রেমে পড়ে।

(মেয়েটা আসলেই জোস্, আমারও প্রেমে পড়তে ইচ্ছা হৈছিল) ঘটনাক্রমে আগেই একজন মাতাল মিলিওনেয়ার এর সাথে পরিচয় হয়ে যায় যে কিনা আত্মহত্যার চেষ্টা করছিল এবং চ্যাপলিন তাকে বাচায়। ফলে তার সাথে ” জীবনের ” বন্ধুত্ব তৈরী হয়। অবশ্য এই বন্ধুত্ব শুধু মাত্র মাতাল অবস্থার জন্য, মাতলামি কেটে যাবার পর পরই চ্যাপলিনকে তাড়িয়ে দিতে বিন্দুমাত্র দেরী হয় না।

এদিকে সুন্দরী ফুল বিক্রেতা অন্ধ বলে চ্যাপলিনকে মিলিওনেয়ার হিসেবে ধরে নেয় এবং চ্যাপলিন ও এই সুযোগটা গ্রহন করে। পরে যখন জানতে পারে অর্থের অভাবে বাড়ি ভাড়া দেয়া হচ্ছে না এবং শীঘ্রই তাদেরকে বাড়ি ছাড়া করা হবে, তখন ভবগুরে চ্যাপলিন কাজের খোঁজে বের হয়। কাজ এবং বক্সার হিসেবে সম্পূর্ন ব্যর্থ বাধ্য হয়ে আবার সেই মিলিওনেয়ার বন্ধু থেকে সুযোগ গ্রহন করে। সেই টাকা দিয়ে সুন্দরী ফুল বিক্রেতার বাড়ী ভাড়া আর চোখের চিকিৎসার অর্থ যোগান দেয়। কিন্তু চোর হিসেবে আখ্যায়িত হওয়ায় জেলে যেতে হয় । বাকীটা দেখে নিতে হবে।

চ্যাপলিনের এই মুভিটির প্রিমিয়ারে আইনস্টাইন সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন এবং যথেষ্ট আমোদিত হয়েছিলেন। স্ট্যানলি কুব্রিক, আন্দ্রেই তারকাভোস্কি, ফেদরিকো ফেলিনি প্রমুখ বিখ্যাত পরিচালকের অত্যন্ত প্রিয় পাঁচটি মুভির অন্যতম এই মুভিটি। আপনারাও দেখুন, ভালো লাগবে।

About দারাশিকো

আমি নাজমুল হাসান দারাশিকো। লেখালিখির প্রতি ভালোবাসা থেকে লিখি। পেশাগত এবং সাংসারিক ব্যস্ততার কারণে অবশ্য এই ভালোবাসা এখন অস্তিত্বের সংকটে, তাই এই ওয়েবসাইটকে বানিয়েছি আমার সিন্দুক। যোগাযোগ - darashiko(at)gmail.com

View all posts by দারাশিকো →

2 Comments on “সিটি লাইটস: চার্লি চ্যাপলিনের সাইলেন্ট মুভি”

  1. এ চবি ানকি আমি এদ্দিন না দেখে ছিলাম!!! 🙁
    নিজেকে ধিক্কার
    মাত্রই দেখে উঠলাম………

    1. অসাধারণ একটা সিনেমা। তবে রুশো ভাই ধিক্কার দিয়েন না, কারণ অনেক অনেক ভালো এবং অসাধারণ সিনেমা এখনো না দেখার তালিকায় এবং অপেক্ষমান তালিকায় অবস্থান করছে। শুরু যখন হয়েছে, তালিকাও ছোট হবে 🙂

Leave a Reply to দারাশিকো Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *